Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪, ০৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

দুপচাঁচিয়া পেনশনের কাগজ তৈরির নামে অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ

| প্রকাশের সময় : ১০ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) উপজেলা সংবাদদাতা : দুপচাঁচিয়া উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে সরকারি কর্মচারীদের পেনশন ও পারিবারিক পেনশন এর কাগজপত্র নির্ভুল ভাবে প্রস্তুত করে দেওয়ার নামে পেনশনভুক্ত ব্যক্তিসহ তার পরিবারের নিকট থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে তা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, উপজেলার হিসাবরক্ষণ অফিসে কতিপয় কর্মচারীর যোগসাজশে মৎস্য অফিসের অফিস সহকারি আব্দুস সামাদ নামের এক ব্যক্তি দীর্ঘ্য দিন যাবত সরকারি কর্মচারীদের পেনশন ও পারিবারিক পেনশনের কাগজপত্র প্রস্তুত করে দেওয়ার নামে মোটা অংকের টাকা গ্রহণ করে। দীর্ঘদিনেও কাগজপত্র ঠিক না হওয়ায় এই সব পেনশনভুক্ত কর্মচারীদের পরিবার গতকাল মঙ্গলবার সকালে উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসে ভিড় করে। এ সময় ভুক্তভোগী উপজেলার কাথহালী মধ্যপাড়ার মৃত আশরাফ আলীর স্ত্রী মাহমুদা বেওয়া জানান, তার স্বামী চুয়াডাঙ্গায় ব্যাটালিয়ন পুলিশে হাবিলদার পদে কর্মলত অবস্থায় চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তার মৃত্যুর পর পারিবারিক পেনশনের টাকা দুপচাঁচিয়া হিসাব রক্ষণ অফিস থেকে উত্তোলনের জন্য আবেদন করেন এবং কাগজপত্র প্রস্তুতের জন্য উক্ত আব্দুস সামাদ কে ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন। দীর্ঘ ৮ মাসেও কাগজপত্র প্রস্তুত না করে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। ভালী কাথহালী গ্রামের মোস্তাফিজার রহমান এর স্ত্রী আম্বিয়া বেগম “দৈনিক ইনকিলাব” কে জানান, তার স্বামী উপজেলার কৃষি অফিসে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা পদে চাকরি থেকে অবসর নেন। তার স্বামীর পেনশনের টাকা উত্তোলনের কাগজপত্র প্রস্তুতের জন্য উক্ত আব্দুস সামাদ কে ২০ হাজার টাকা প্রদান করেন। দীর্ঘ ৮ মাসেও তার কাগজপত্র প্রস্তুত হয় নি। উপজেলা সদরের পুরাতনবাজার এলাকার মৃত রাজারাম এর ছেলে পবন রাম জানান, তার বাবা খাদ্য অধিদপ্তরে চাকুরীরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। বাবার পেনশনের টাকা উত্তোলনের জন্য হিসাব রক্ষণ অফিসের কর্মকর্তাদের নির্দেশ মোতাবেক উক্ত আব্দুস সামাদ এর নিকট সকল কাগজপত্রসহ কাগজপত্র প্রস্তুতের জন্য ১০ হাজার টাকা প্রদান করেছেন। দীর্ঘ্য দিনেও কাগজপত্র প্রস্তুত হয় নি। কাগজপত্র ফেরও দিচ্ছে না। এতে সে চরম বিপাকে পড়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মঞ্জুর রহমান খান এর মেয়ে শারমিন খানসহ অনেকেই একই অভিযোগ করেন। অভিযোগকারীরা জানান, উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তাদের যোগসাজশে উক্ত আব্দুস সামাদ এর মাধ্যমে প্রায় অর্ধকোটি টাকার অধিক হাতিয়ে নিয়েছে। ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রæত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসার মোঃ আব্দুল্লাহেল কাফি এর সাথে যোগাযোগ করার জন্য তার অফিসে গিয়ে তাকে পাওয়া যায় নি। উল্লেখ্য তৎকালীন হিসাব রক্ষণ অফিসার খলিলুর রহমান (২০০৭ থেকে ২০১০) ও কর্মচারীরা যোগসাজশ করে অত্র অফিস থেকে অনুরূপ ভাবে বিভিন্ন পেনশন, কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাগজপত্র তৈরির নামে তাদের কাগজপত্র নিয়ে ভুয়া কাগজ তৈরি করে প্রায় ২৩ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনাও ঘটে। এ সংক্রান্তে একাধিকবার তদন্তের পর দুপচাঁচিয়া থানায় ২ টি মামলা দায়ের হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ