Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মেরামতের কথা জানে না প্রশাসন

কুবিতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে চলছে টালবাহানা!

| প্রকাশের সময় : ৮ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

কুবি রিপোর্টার : দুর্নীতি ও অনিয়মের বিস্তর অভিযোগ আমলে না নিয়েই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বল্প জায়গায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপনের মাত্র চার মাসের মাথায় ভাস্কর্যটিতে ফাটল দেখা যায়। সদ্য স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে ফাটল দেখা দিলে পূর্ব অনুমতি ছাড়া অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে নামমাত্র মেরামতের কাজ করা হয়েছে। ফাটল মেরামত সংক্রান্ত কোন তথ্য জানে না প্রকৌশল কার্যালয়।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে স্থাপিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যে ফাটল দেখা দিয়েছে এমন সংবাদ গেল সপ্তাহে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর গত শনিবার রাতে ভাস্কর্যটি মেরামতের জন্য লোক পাঠায় ভাস্কর মৃণাল হক। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ জানে না কে বা কারা এটি মেরামত করছে। গত শনিবার রাতে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসানসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক ভাস্কর্য মেরামত চলাকালীন সময়ে রুবেল হোসাইন নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে। রুবেল হোসাইন মৃণাল হকের লোক বলে এসময় পরিচয় দেন। তবে মেরামতের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ঠ কোন কর্তৃপক্ষই জানে না বলে জানা যায়। অব্যবস্থাপনার মধ্যদিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভস্কর্যে পুটিং (কংক্রিটে লাগানো হয় এমন শক্ত আঠা) জাতীয় উপাদান দিয়ে ফাটলগুলো কোনমতে আটকে দেয়া হয়। তবে ভাস্কর্যে পুটিং লাগানো হলেও পর্যাপ্ত কাজ না করে রং ব্যবহার না করায় পুটিং গুলো বেরিয়ে আসছে। এদিকে রুবেল হোসাইন নামের আটক ব্যক্তির কাছ থেকে লিখিত নিয়ে গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মজিবুর রহমান মজুমদার তাকে ছড়ে দেন। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, ‘মৃণাল হক তৎকালীন ভিসির সহয়তায় দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেছেন। ভাস্কর্য নির্মাণে যারাই দুর্নীতিতে জড়িত তাদের শাস্তির আওতায় আনা হোক।’
এদিকে মৃণাল হক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে মেরামতের জন্য লোক পাঠিয়েছেন বললেও ভিন্ন কথা বলেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী ও রেজিস্ট্রার। প্রাশাসনের পক্ষ থেকে অনুরোধ করায় ভাস্কর্য মেরামতের জন্য লোক পাঠানো হয়েছিল বলে জানান ভাস্কর মৃণাল হক।
তবে রেজিস্ট্রার মো: মজিবুর রহমান মজুমদার বলেন. ‘মৃণাল হক বিশ্ববিদ্যালয়ের কারো সাথে যোগাযোগ না করে লোক পাঠিয়ে দ্বায়সারাভাবে কাজ করেছেন।’ উল্লেখ্য, জাতির জনকের ভাষ্কর্য নির্মাণে দুর্নীতি হচ্ছে শিক্ষকদের এমন অভিযোগ তৎকালীন ভিসি অধ্যাপক ড. মোঃ আলী আশরাফ আমলে না নিয়ে ভাস্কর্যটি তড়িঘড়ি করে স্থাপন করেন। গত মার্চে কাজ শুরু করে ২৫ মে ভাষ্কর্যটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংকুচিত স্থানে স্থাপন করা হয়। তবে নির্ধারিত নকশায় ভাস্কর্যটি না হওয়ায় গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে সমালোচনার মুখে ভাষ্কর্যটিকে সরিয়ে আগস্টে ফের নতুনভাবে ভাষ্কর্যটি স্থাপন করা হয়। ভাষ্কর্য নির্মাণের শুরু থেকেই দুর্নীতি হয়েছে এমন অভিযোগে শিক্ষক সমিতি ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতারা অভিযোগ করেন। দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের দাবিতে শিক্ষক সমিতির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদের সদস্য মো: আসাদুজ্জামান গত ১০ আগস্ট থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্যের পাদদেশে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ