Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেড় বছর ধরে বন্ধ সাফিনা পার্ক

| প্রকাশের সময় : ৭ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

মোঃ হায়দার আলী, গোদাগাড়ী রাজশাহী থেকে : রাজশাহীর গোদাগাড়ীর বরেন্দ্র অঞ্চলে অবস্থিত একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র ছিল সাফিনা পার্ক। কিন্তু মালিকানা নিয়ে দ্বদ্বের কারণে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে বন্ধ থাকায় উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিনোদন প্রেমীরা ক্ষোভ জানিয়েছে। পার্কটিতে বড়দের পাশাপাশি কোমলমতি শিশুরাও আনন্দে মেতে উঠত। বার্ষিক পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীরা ফলাফল পেয়েছে এবং নতুন বই পেয়েছে আবার নতুনভাবে নতুন বছরে পড়া লেখা শুরু করেছে। কিন্তু তারা ছুটি ঠিকভাবে কাটাতে পারেনি বিনোদন উপভোগ করতে পারেনি এ পার্কটি বন্ধ থাকার কারণে। বিনোদন প্রেমীদের পাশাপাশি পার্কটিকে ঘিরে দোকান পাট, হোটেল, পার্কিং ব্যবস্থা ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে গড়ে উঠায় কর্মসংস্থান ঘটেছিল এলাকার শত শত মানুষের। পার্কটি বন্ধ থাকায় বিনোদন প্রেমীরা বঞ্চিত হচ্ছে বিনোদন থেকে, সাথে সাথে কর্ম সংস্থান হারিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে অনেকে। তাই সাফিনা পার্কটি খুলে দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছে উত্তরাঞ্চলের বিনোদন প্রেমীরাসহ এলাকার সচেতন মহল। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বালিয়াঘাট্টা এলাকার দুই ভাই ফজলুর রহমান ও সাইফুল ইসলাম ২০১২ সালে নিজেদের ৩০ বিঘা জমিতে বাণিজ্যিকভাবে উপজেলার দিগরাম এলাকায় ‘সাফিনা পার্ক’ নামের এই পিকনিক স্পট গড়ে তোলেন। চুক্তি অনুযায়ী ফজলুর রহমানের বড় ছেলে মিজানুর রহমান ফরিদ শতকরা ৮০ ভাগ, ফজলুর রহমান শতকরা ১০ ভাগ ও সাইফুল ইসলাম শতকরা ১০ ভাগ মালিকানায় পার্কটি পরিচালিত হতে থাকে। ওই সময় ফজলুর রহমান পার্কের চেয়্যারম্যান ও তার ছোটভাই সাইফুল ইসলাম পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) পদে আসীন হন। শুরু থেকেই উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিনোদন প্রেমীরা মনের খোরাক যোগাতে পার্কটিতে এসে ভিড় করতো এমনকি দেশের রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া, নওগা, পাবনা, নাটোর, সিরাজগজ্ঞসহ দেশের স্কুল, কলেজ, মাদ্রসা, প্রায়মারী, কেজি স্কুলসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি শিক্ষা সফর হিসেবে এ পার্কটি বেছে নিয়ে ছিল সব সময় জমজমাট ছিল পার্কটি। এ দিকে ২০ মাস ধরে পার্কটি বন্ধ থাকায় বিনোদন প্রেমীরা বিনোদনের জন্য হারিয়ে ফেলেছে আশ্রয়স্থল। এমনকি পার্কে ঘিরে গড়ে উঠা দোকান পাট ও হোটেলসহ বিভিন্ন ব্যাবসায়ী প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের মালিক ও কর্মরত শ্রমিকরা পরিবার নিয়ে দুর্বিসহ জীবন যাপন করছে। তারা দিনে দিনে বেকার হতে বসেছে। একপর্যায়ে ফজলুর রহমান ও সাইফুল ইসলাম দুই ভাইয়ের মধ্যে মালিকানা ও মুনাফা বণ্টন নিয়ে বিরোধ বেঁধে যায়। এ বিরোধের জের ধরে পার্ক নিয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা দেখা দিলে গোদাগাড়ী উপজেলা প্রশাসন পার্কটি সিলগালা করে দেয়। পার্কটি বন্ধ হওয়ার কিছুদিন পর পার্কের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান মৃত্যু বরণ করেন। এ বিষয়ে পার্কের এমডি সাইফুল ইসলাম বলেন, পার্কের অর্ধেক জমি আমার, শতকরা ৩০ ভাগ পার্কের মালিকানা আমার। ১ বছরে পার্ক তৈরির সব ব্যয় উঠে গেলেও তারা আমাকে কোনো মুনাফা দিত না। মালিকানা ও মুনাফা বণ্টন নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়েছিল। একটি বিচারের মাধ্যমে বিরোধের সমাধান হয়েছে। আমি তা মেনে নিয়েছি। কিন্তু তারা মানছে না। যুবনা রানী একজন সুইপার সে পার্কে কাজ করে সংসার চালাত কিন্তু সে আজ বেকার এরকম শ্রমিক যারা দিন আনে দিন খাই তাদের দায় ভার কে নিবে।
সবাই প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে আছে পার্কটি কবে খুলে দিবে। ওই এলাকার হোটেল মালিক দুরুল বলেন,আমি এনজিও থেকে এক লক্ষ টাকা কিস্তি উঠিয়ে একটি ছোট দোকান দিয়েছিলাম পার্ক বন্ধ হওয়ার কারণে কিস্তির টাকা পরিশোধ করা দায় হয়ে গেছে। এবং পরের হোটেলে কাজ করে সংসার চালাতে পারছিনা। আমার মত আরো কয়েকজন পথে বসেছে যারা দিন মজুরের কাজ করে সংসার চালাছে। ’উপজেলা নিবাহী অফিসার (ইউএনও) মো: জাহিদ নেওয়াজ বলেন, ‘মালিক পক্ষের মামলা নিষ্পত্তি অথবা সমঝোতা হলে বন্ধ পার্কটি খুলে দেওয়া হবে। এ ব্যপারে মালিক পক্ষকে উদ্যোগ নিতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ