Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব বঞ্চিত

| প্রকাশের সময় : ৭ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক জুড়ে বিলবোর্ডে ছড়াছড়ি
মুন্সী কামাল আতাতুর্ক মিসেল, চান্দিনা থেকে : কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীন ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়কের ৯৭ কিলোমিটার অংশের বিভিন্ন স্থান জুড়ে বিলবোর্ডের ছড়াছড়ি। রাস্তার পাশে গড়ে উঠা আবাসিক বাণিজ্যিক ভবনসহ সরকারী বেসরকারী মালিকানাধীন জমিতে কোথাও না কোথাও প্রতিদিনে টানানো হচ্ছে। বিলবোর্ড আর্থিক চুক্তির মাধ্যমে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও অজ্ঞাত কারণে রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। সরেজমিন ঘুরে স্থানীয় একাধিক সুত্রে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, কুমিল্লায় রয়েছে দেশের প্রধান ব্যস্ততম ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক। দাউদকান্দি টোল প্লাজা থেকে চৌদ্দগ্রামে পদুয়া পর্যন্ত ৯৭ কিলোমিটার অংশে এছাড়াও মহাসড়কে রয়েছে চান্দিনা, বুড়িচং, কুমিল্লা সদর ও সদর দক্ষিণে উল্লেখ যোগ্য অংশ। এর মাঝে রয়েছেু গুরুত্বপূর্ণ ময়নামতি সেনানিবাস, আলেখারচর ও পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড। ময়নামতি হয়ে উত্তর দিকে চলে গেছে ব্রাক্ষণ বাড়িয়া সিলেট মহাসড়ক। পদুয়ার বাজার থেকে দক্ষিণে চাঁদপুর, নোয়াখালী ও লক্ষীপুর সড়ক। ব্যস্ততম এই দুটি স্থানসহ মহাসড়ক জুড়ে রয়েছে কমপক্ষে শতাধিক ইউনিপুল সাইন ও বিলবোর্ড কোনটি উচু ভবনে কোনটি বা রাস্তার পাশে সরকারী অথবা ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে। বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলো এসকল বিলবোর্ড থেকে প্রতিবছর কোটি টাকা হাতিয়ে নিলেও সরকারী রাস্তার পাশে থাকা বিজ্ঞাপনী এই ইউনিপুল সাইন ও বিলবোর্ড থেকে সড়ক বিভাগ অজ্ঞাত কারণে কোন অর্থই আদায় করতে পারছেনা। জানা যায়, ২০০৭ সালে ১/১১ র পর কুমিল্লা বন বিভাগ রাজেস্বপুর ইকোপার্কের নামে মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম এলাকায় ৪টি ইউনিপুল সাইন বোর্ড টানালে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সেগুলো উপরে ফেলে দেয়। অথচ বর্তমানে মহাসড়ক জুড়ে শতাধিক বিলবোর্ড টানিয়ে ষ্ট্রাকচারাল ও বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলো তাদের কার্যক্রম পর্চিালনা করলেও অজ্ঞাত কারণে সেগুলো সড়ক ও জনপথ বিভাগের চোখে পড়েনা। দায়িত্বশীল সুত্র জানায়, মহসড়কে স্থাপিত হয় সাধারণত দুধরনের বোর্ড একটি ইউনিপুল সাইন অপরটি বিলবোর্ড ষ্ট্রকাচারাল কোম্পানী গুলো এসকল বিজ্ঞাপন টানানোর জন্য বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘ মেয়াদে বোর্ড নির্মাণ করে। অন্য কোম্পানী তাদের থেকে ভাড়া নেয় বাৎসরিক চুক্তিতে। ষ্ট্রাক চারাল কোম্পানী গুলোর জায়গা বা ভবনের মালিকদের সাথে চুক্তি করে বোর্ড নির্মাণ করে। এ সকল বোর্ড নির্মাণে ৫/১০ বছরের চুক্তি হয়। তাদের থেকে বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলো কোন কোন ক্ষেত্রে বিভিন্ন কোম্পানীর মালিকরা এসকল বোর্ড ভাড়া নিয়ে তাদের পণ্যের প্রচারনা চালায়। এক্ষেত্রে বোর্ড নির্মাতা প্রতিষ্ঠা ভবন বা জমির মালিকদের কাছ থেকে আর কোম্পানী গুলো ওই বোর্ড নির্মাতা প্রতিষ্ঠানে সাথে চুক্তি করে। এ সকল বোর্ডে প্রতি বর্গ ফুট সর্বোচ্চ ৫শ টাকা থেকে সর্ব নিন্ম ভাড়া বাৎসরিক ২৫০ টাকা। সরেজমিন ঘুরে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের রাস্তার দু’পাশে রয়েছে শতাধিক ইউনিপুল সাইন ও বিলবোর্ড। এসকল বিজ্ঞাপন বোর্ডের প্রতিটির সাইজ সর্বনিন্ম ৪৫০ বর্গফুট থেকে সর্বোচ্চ ৮ হাজার বর্গফুট। যা বাজার মুল্যে প্রায় কোটি টাকার উপরে বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলো এ সকল বোর্ড বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিকট বাৎসরিক হিসেবে ভাড়া প্রদান করে। সে হিসেবে সড়ক ও জনপদ বিভাগ ও একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পাওয়ার কথা। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে কুমিল্লা সড়ক ও জনপদ বিভাগ দীর্ঘদিনেও এই খাত থেকে কোন অর্থ সংগ্রহ করতে পারেনি। কুমিল্লা ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়কের ৯৭ কিলোমিটার অংশের কতগুলো বিল বোর্ড নিবন্ধনকৃত এব্যাপারে তথ্য জানতে চাইলে কুমিল্লা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, জেলার ৯৭ কিলোমিটার মহাসড়কের বিলবোর্ডও সড়ক ওজনপদ বিভাগ থেকে অনুমোদিত নয়। মহাসড়ক জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিলবোর্ড থেকে বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলো বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নিলেও সড়ক জনপদ বিভাগ কেন অবৈধ প্রক্রিয়ায় বাধা দিচেছনা বিষয়টি তিনি ও কৌশলে এড়িয়ে যান। সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বশীল সুত্র নাম না প্রকাশে শর্তে জানান, বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলো মহাসড়ক বা সড়কের পাশে বিভিন্ন স্থান বা খাল জায়গায় বিলবোর্ড স্থাপনের পূর্বে সর্ব প্রথম যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। সেখান থেকে পর্যায়ক্রমে প্রধান প্রকৌশলী, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, তত্ত¡বধায়ক প্রকৌশলী, নির্বাহী প্রকৌশলী, উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী, এবং সর্বশেষ সরেজমিনর বিষয়টি দেখার জন্য উপসহকারী প্রকৌশলীকে দায়িত্ব ভার দেয়া হয়। সুত্র মতে, এক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলোর লোকদের সাথে অবৈধ প্রক্রিয়ায় জড়িত হয়ে পড়েন। এতে মহাসড়কে নির্মিত বিলবোর্ডের সঠিক পরিসংখ্যান উঠে আসেনা। আর সরকার বঞ্চিত হচ্ছে। বিপুল অংকের রাজস্ব থেকে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ