পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পর্যটকসহ অগণিত মানুষের দুর্ভোগ
ছয়টি টোল কাউন্টারের মধ্যে দুুটি বন্ধ। একটির কম্পিউটার বিগড়ে গেছে। টোল আদায় চলছে শম্ভুক গতিতে। ফলে দুই দিকে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়ে গেছে। টাকা (টোল) দিয়ে সেতু পার হতে গিয়ে এমন ভোগান্তিতে ত্যাক্ত-রিবক্ত সবাই। গতকাল (শনিবার) বিকেলে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুতে এমন বেহাল অবস্থা দেখা গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সেতুতে টোলপ্লাজাকে ঘিরে এমন তীব্র যানজট এখন নিত্যদিনের চিত্র। দেশের বাণিজিক রাজধানী চট্টগ্রামের সাথে দক্ষিণ চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের শহর কক্সবাজারের সড়ক যোগাযোগের সেতু বন্ধন এই কর্ণফুলী সেতু। দেশ-বিদেশের হাজারো পর্যটক কক্সবাজার, বান্দরবান যাতায়াত করেন এ পথ ধরে। এই সেতু হয়ে দিনে গড়ে ১৫ হাজার যানবাহন চলাচল করছে। তার মধ্যে টোল আদায়যোগ্য যানবাহনের সংখ্যা গড়ে ১৩ হাজারের বেশি। এখন চলছে পর্যটনের ভরা মওসুম। প্রতিদিন দেশি-বিদেশী পর্যটকবাহী অসংখ্য যানবাহন চলাচল করছে। ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে সেতুতে যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়। এসময় গভীর রাত অবধি সেতুতে যানবাহনের ভিড় থাকে।
যাত্রীবাহি বাস মিনিবাসের পাশাপাশি ব্যক্তিগত যানবাহনও চলাচল করছে এই সেতু হয়ে। চলছে ভারী যানবাহনও। দক্ষিণ চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও কক্সবাজারে উৎপাদিত লবণ, মাছ, বনজ সম্পদসহ হরেক পণ্য পরিবহন করা হয় এই সেতু হয়ে। ফলে সেতুটি যানবাহনের ভারে টালমটাল থাকে সবসময়। গাড়ি চালকেরা বলছেন এত বিপুল সংখ্যক যানবাহনের টোল আদায়ের মতো সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারেনি টোল আদায়ে ইজারা পাওয়া প্রতিষ্ঠান। বরং তাদের অদক্ষতা ও অব্যবস্থাপনায় দিনে দিনে সঙ্কট বাড়ছে। ফলে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে আর তাতে পর্যটন খাতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। যানজট এড়াতে তড়িঘড়ি করে কাউন্টারের সামনে যেতে রীতিমত প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ছে যানবাহনগুলো। ওভারটেক করতে গিয়ে নিত্য ঘটছে দুর্ঘটনা। সরেজমিন দেখা যায় সেতুর টোলপ্লাজায় ছয়টি কাউন্টার থাকলেও চালু আছে ৪টি। যে দুুটি কাউন্টার বন্ধ সে দুটি কাউন্টারের সামনে বøক দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া। ফলে ছয় লেইনের সেতু হলেও ওই পয়েন্টে যানবাহন চলছে চার লেইনে। চট্টগ্রাম মহানগরী থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রাম কক্সবাজার ও বান্দরবানমুখী যানবাহনের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে টোলপ্লাজায়। একই চিত্র শহরমুখী টোলপ্লাজাতেও। গাড়ি চালকেরা বলছেন প্রতিদিন সকালে এবং সন্ধ্যায় টোল কাউন্টারের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। শুক্রবার আর শনিবার ছুটির দিনে এবং বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে রাত পযন্ত প্রচন্ড যানজট লেগে থাকে।
চট্টগ্রাম-পটিয়া রুটের মিনিবাস চালকের সহকারি জানে আলম বলেন, সকালে এবং বিকেলে প্রায় প্রতিদিনই সেতুতে তীব্র জটের কবলে পড়তে হয়। টোল আদায়ের ছয়টি কাউন্টার এক সাথে চালু থাকলে এমন সমস্যা হতো না। আজও একটি কম্পিটার ভাল মতো কাজ করছে না। এই কারণে ওই কাউন্টারের সামনে দীর্ঘজট। তিনি বলেন, পটিয়া থেকে অনেকে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে অফিস করেন। আবার শহর থেকেও অনেকে পটিয়া এবং দক্ষিণ চট্টগ্রামের অনেক এলাকায় কর্মস্থলে যান। সেতুর দুই প্রান্তের সড়কে এমনিতেই যানজট। তার উপর সেতুতে টোল দিতে গিয়ে জট আর বিড়ম্বনায় মানুষ অতিষ্ঠ। চট্টগ্রাম কক্সবাজার রুটের এস আলম বাস সার্ভিসের চালক মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, টোল আদায়ে ধীরগতির কারণে এমন সমস্যা হচ্ছে। এই অব্যবস্থাপনার কারণে যাত্রীদের বিশেষ করে কক্সবাজার ও বান্দরবানের পর্যটকদের দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। সেতুর সুফল পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। ঢাকা-কক্সবাজার রুটের শ্যামলী পরিবহনের একজন চালক বলেন, ডিজিটাল যুগে এসেও টোল দেওয়ার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে কেন। টোল আদায়ে গতি বাড়াতে পারলে এমন সমস্যা হওয়ার কথা না।
কথা হয় টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠান ইউডিসি-ভিএএএন জেবির কর্মকর্তাদের সাথে। টোল আদায়ে ধীরগতির বিষয়টি তারা স্বীকারও করেন। একজন কর্মকর্তা জানান পহেলা জানুয়ারী থেকে টোল আদায়ের দায়িত্ব পান তারা। তার আগে টানা পাঁচ বছর সেতুতে টোল আদায় করেছে জিএসআইসি সেল তমা জেবি নামে একটি প্রতিষ্ঠান। সংশ্লিষ্টরা বলছেন সে সময়ও টোল আদায়ে ধীরগতি ছিল। এখন গতি আরও কমেছে। টোল কাউন্টারগুলোতে যারা কাজ করছেন তারা নতুন হওয়ায় কাজে গতি আসছে না। এতে করে একটি গাড়ির টোল আদায় করতে কয়েক মিনিট লেগে যাচ্ছে। ফলে জট বাড়ছে।
টোল আদায়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের পরিচালক (অপারেশন) অপূর্ব লাল সাহা বলেন, জানুয়ারি প্রথম দিন থেকে আমরা কাজ শুরু করি। এই কারণে হয়তো কাজ বুঝে উঠতে কিছুটা সময় লাগছে। তবে আমাদের লোকবল বা প্রযুক্তির কোন ঘাটতি নেই। তিনি আশাবাদি খুব শিগগির কাজে আরও গতি আসবে। বাকি দুটি কাউন্টারও চালু করা হবে জানান তিনি। ওই প্রতিষ্ঠানের অপর একজন কর্মকর্তা জানান তিন বছরের জন্য তারা টোল আদায়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। যারা টোল আদায় করছেন তারা এই সেতুতে নতুন। দেশের অন্যসেতুতে এর আগে তারা টোল আদায়ের কাজ করেছেন। চট্টগ্রামবাসীর স্বপ্নের এ কর্ণফুলী সেতু চালু হয় ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে। বিএনপি সরকারের সময়ে এ সেতুর প্রায় পুরো কাজ সম্পন্ন হয়। সেতুতে টোল আদায়ে অব্যবস্থাপনা এবং দুইপ্রান্তে গোলচত্বরে তীব্র জটের কারণে সেতুর সুফল মিলছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।