Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

তিস্তায় বিলীন জনপদ : বেড়ি বাঁধ নির্মাণের আর্তি

প্রকাশের সময় : ৭ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৮ এএম, ৭ জানুয়ারি, ২০১৮

পীরগাছা (রংপুর) থেকে সরকার রবিউল আলম বিপ্লব : রংপুরের পীরগাছায় একটি বেড়ি বাঁধের অভাবে তিস্তা নদীর ভাঙনে প্রতিবছর বিলীন হচ্ছে দু’টি ইউনিয়নের একের পর এক জনপদ। পানি উন্নয়ন বোর্ড নতুন করে বেড়ি বাঁধ নির্মাণ ও পূর্বের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার না করায় গত ৫ বছরে তিস্তা নদীর ভাঙনে উপজেলার তাম্বুলপুর ও ছ্ওালা ইউনিয়নের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৫টি গ্রামের ৫ শতাধিক পরিবারের বসত বাড়ি ও আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ড তিস্তার ভাঙন রোধ করতে পারছে না। এ কারণে প্রতিবছর শত শত পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে সহায় সম্বল ও বসত বাড়ি হারিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসির দাবী ‘আমরা প্রতিবছর বন্যার সময় ত্রাণ চাই না, তিস্তার বন্যা ও ভাঙনের হাত থেকে বাঁচতে শিবদেব চরে একটি বেড়ি বাঁধ চাই।’
এলাকাবাসি, পাউবো ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন পূর্বে পানি উন্নয়ন বোর্ড(পাউবো) ছাওলা ও তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ভেঙে যাওয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি দায়সারা ভাবে পূণঃনির্মাণ করে । কিন্তু পাউবো বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটির উজানে শিবদেব চর এলাকায় বেড়ি বাঁধ নির্মাণ না করায় এ বাঁধটিই এলাকাবাসির সুখ কেড়ে নিয়েছে। শিবদেব চর এলাকায় পাউবোর নির্মাণ করা ২০০ মিটার বেড়ি বাঁধসহ ১ কিলোমিটার একটি সড়ক ভেঙ্গে তিস্তা নদী গর্ভে বিলীন হওয়ায় তিস্তার ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে। এতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি হুমকীর সম্মুখীন হয়ে পড়ে। শিবদেবচর গ্রামের একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ প্রায় ৫ শতাধিক পরিবারের বাড়ি ঘর আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় এবং ৩টি ইউনিয়নের ৩৯ টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে ১৮ হাজার পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়ে।
চর ছাওলা গ্রামের সহিদ আলী (৬২), আলিম উদ্দিন (৪৫), তমিজ উদ্দিন (৫৫) ও আবুল কালাম (৪৪) অত্যন্ত ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পাউবোর ভুলের কারণে তারা এ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। পাউবো বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণের সময় যদি উজানে শিবদেব চর এলাকায় একটি বেড়ি বাঁধ নির্মাণ করত তাহলে লোকালয়ে নদীর পানি ঢুকতে পারত না, আর এতো ক্ষতিও হতো না। চর ছাওলা গ্রামের কাদের আলী ও শিবদেব চর গ্রামের ফজল উদ্দিনসহ আরো অনেকে জানান, ‘আমরা ত্রাণ চাই না, তিস্তার ভাঙনের হাত থেকে বাঁচতে শিবদেব চরে একটি বেড়ি বাঁধ চাই।’
ছাওলা ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আব্দুল হাকিম জানান, প্রতি বছর বন্যা ও পাহাড়ী ঢলে ছাওলা ইউনিয়নের শিবদেবচর, চরছাওলা, কামারের হাট, বজরা পাড়া, নয়ারহাট ও রহমতের চরসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়।
উপজেলা প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম জানান, ছাওলা ও তাম্বুলপুর ইউনিয়নে তিস্তার ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করেছে। তিস্তার ভাঙন রোধে ওই এলাকায় আরও বেশ কয়েকটি বেড়ি বাঁধ নির্মাণ জরুরী হয়ে পড়েছে। এসব নির্মাণ করা হলে কৃষকেরা আর ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
গাইবান্ধা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, তিস্তার ভাঙন রোধে শিবদেব চরে একটি বেড়ি বাঁধ নির্মাণ করা জরুরী হয়ে পড়েছে। কিন্তু ওই এলাকায় পাউবোর কোন নিজস্ব জমি নাই। তাছাড়া বেড়ি বাঁধ নির্মাণের জন্য আলাদা কোন বরাদ্দ নেই। বরাদ্দ পেলে বেড়ি বাঁধ নির্মাণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ