পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : মেঘনা- গোমতী সেতুর টোল প্লাজার কারনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনে ছিল অবরুদ্ধ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোর ৪টা থেকে দাউদকান্দি টোল প্লাজা থেকে আমিরাবাদ পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটে আটকা পড়ে কয়েক হাজার গাড়ি। এতে করে ওই সব গাড়ীর চালক ও যাত্রীদেরকে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। কুমিল্লা হাইওয়ে পুলিশের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর জিয়া আলম বলেন, মেঘনা গোমতী সেতুর টোল প্লাজার ওজন পরিমাপক যন্ত্রে ধীরগতি, সেতু এলাকার নদী বন্দরে বালুবাহী ট্রাকের উল্টো পথে চলাচল ও মালবাহী কাভার্ড ভ্যানের ইচ্ছেমতো চলাচলের কারনে এ যানজটের সৃষ্টি হয়। জানা গেছে, গতকাল ভোর থেকে মেঘনার টোল প্লাজার ১৬টি বুথের বেশিরভাগই বন্ধ ছিল। শুক্রবার গাড়ির চাপ বেশি থাকায় বুথগুলোতে গাড়ির দীর্ঘ সারি থেকে যানজটের সৃষ্টি হয়। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামুখী শ্যামলী পরিবহনের চালক আজিম উদ্দিন বলেন, সবগুলো বুথ খোলা থাকলে এতো তীব্র যানজট হতো না। চলতি সপ্তাহের রোববার থেকে শুরু করে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সবগুলো বুথ খোলা থাকায় কোনো যানজট হয়নি। তিনি বলেন, শুক্রবার ও শনিবার গাড়ির চাপ বেশি থাকে। টোল আদায়কারী কর্তৃপক্ষের উচিত এই দুদিন সবগুলো বুথ খোলা রাখা। কিন্তু তারা সেটা না করে উল্টো বন্ধ রেখে মানুষকে কষ্ট দিয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী হানিফ পরিবহনের বাসচালক বশির মিয়া জানান, দাউদকান্দির আমিরাবাদে সকাল ৮টায় যানজটে আটকা পড়ে ১০ কিলোমিটার পথ পার হতে তিন ঘণ্টা লেগেছে। আবুল কালাম নামের এক যাত্রী ঢাকা থেকে ফেনী যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, যানজটের কারণে এক ঘণ্টার পথ অতিক্রম করতে তিন ঘণ্টা লেগেছে। টোল প্লাজাকে কেন্দ্র করে এই যানজট মুক্ত করার জন্য পুলিশ বা টোল কর্তৃপক্ষের কোনো তৎপরতা চোখে পড়ে নি। তিনি বলেন, এতো বড় একটা হাইওয়েতে টোল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এভাবে যানজটের ভোগান্তি কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না।
ভুক্তভোগি যাত্রী ও চালকদের মতে, চার লেনের মহাসড়কের শুধুমাত্র মেঘনা সেতু পার হতেই একেকটি যানবাহনকে প্রতিনিয়ত ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা বা কোনো কোনো সময় তারও বেশি সময় আটকে থাকতে হয়। মেঘনা সেতুতে টোল আদায়ের জন্য এই অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। গতকালের যানজটের অবস্থা সম্পর্কে হাইওয়ে পুলিশের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ভোর থেকে টোল বুথের অধিকাংশ বন্ধ থাকার কারনে গাড়িগুলো একটি লেনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াতে বাধ্য হয়। এতে ওই লেনে শুরু হয় যানজট। এরপর ধীরে ধীরে তা তীব্র আকার ধারন করে।
প্রত্যক্ষদর্শী, ভুক্তভোগি যাত্রী ও গাড়ির চালকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের আতঙ্কের নাম মেঘনা সেতু। ঢাকা থেকে একটি বাস ছেড়ে মেঘনা সেতু অতিক্রম করে গেলেই যাত্রী বা চালকদের তেমন কোনো ভাবনা থাকে না। ভুক্তভোগিরা জানান, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসার পথে মেঘনা সেতুই থাকে প্রধান ভাবনায়। এই সেতু পার হয়ে কাঁচপুর সেতু অতিক্রম করা মানেই ঢাকা পৌঁছা। কিন্তু সেতুর টোল বুথে অব্যবস্থাপনার কারনে অনেক সময় বেশি লাগে। অনেকের হিসাবে ৮টি টোল বুথ থেকে মিনিটে যতোগুলো গাড়ি ছেড়ে যাওয়ার কথা তার অর্ধেকও সম্ভব হয় না। এতে করে টোল বুথে গাড়ির দীর্ঘ সারি মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি করে। আবার টোলবুথ অতিক্রমের পর সেতুতে ওঠার আগে যানবাহনগুলো প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। টোলপ্লাজায় প্রবেশের আগেও চলে একইরকম প্রতিযোগিতা। এ কারনে সেখানেও কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট লেগেই থাকে।
জানা গেছে, চালুর পর মেঘনা সেতুতে টোলবুথ ছিল চারটি। চলতি বছরের ২২ জুলাই সেতুতে ডিজিটাল টোল আদায় পদ্ধতি উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। যানজট কমাতে ওইদিনই অতিরিক্ত বুথ বসানোর ঘোষণা দেন তিনি। এরপর কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে বসানো হয় আরো চারটি বুথ। গত সেপ্টেম্বরে চালু হয় এসব বুথ। কিন্তু টোলবুথ বাড়ানোর পর সেখানকার জনবল সেভাবে বাড়ানো হয়নি। বরং অদক্ষ জনবল নিয়োগ দেয়ায় যানজট তো কমেইনি, উল্টো যান চলাচলে সৃষ্টি হচ্ছে বিশৃঙ্খলা।
ভুক্তভোগিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মেঘনা সেতুর টোলবুথকে কেন্দ্র করে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিদিনই। সেতুর দুই পারে একই চিত্র। দুদিকেই ৩ থেকে ৫ কিলোমিটার যানজট এখন স্বাভাবিক ঘটনা। আর ছুটির আগের দিনে, বা ছুটি শেষ দিনে এই যানজট ১০-১৫ কিলোমিটার ছাড়িয়ে যায়। কয়েকজন বাস চালক জানান, আগে সেতুর ভেতরে যানজট হতো। বুথের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এখন টোলপ্লাজা পার হয়ে সেতুতে ওঠার আগেই দীর্ঘ যানজট তৈরি হচ্ছে। যা দীর্ঘায়িত হয়ে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্তও ছড়িয়ে পড়ছে কখনো কখনো।
এ দুই সেতুর টোল আদায়ের দায়িত্বে আছে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম (সিএনএস) লিমিটেড নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এখানকার কর্মকর্তাদের দাবি, দুই লেনের সেতুর কারণে যানজট হচ্ছে। পরিস্থিতির উন্নয়নে নতুন সেতু না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। তবে হাইওয়ে পুলিশের অভিযোগ, টোল আদায়ে অনিয়মের কারণেও যানজট পরিস্থিতি তীব্র আকার ধারণ করছে। কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, এখানে যানজট তৈরি হচ্ছে মূলত মেঘনা সেতুর কারণে। তিনি বলেন, সেতু থেকে শুরু করে চার কিলোমিটার দূরে এসে ঠেকে গাড়ির জটলা। সেতুতে টোল আদায়ে ধীরগতির কারণে যানজট পরিস্থিতি ক্রমেই তীব্র হয়ে ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল ভোর থেকে তীব্র যানজটে হাজার হাজার মানুষকে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখার সময় যানজট ছিল না বলে জানান হাইওয়ে ট্রাফিক পুলিশের একজন কর্মকর্তা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।