Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পরীক্ষা না দিয়েও পাস করলেন ৪ জন

চৌদ্দগ্রামে প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল দশা

| প্রকাশের সময় : ৫ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

কেন্দ্রে উপস্থিত থেকে পরীক্ষা দিলেও ফলাফলে অনুপস্থিত!
মোঃ আকতারুজ্জামান, চৌদ্দগ্রাম থেকে : কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার বেহাল দশা চলছে। পরীক্ষা দিয়েও পায়েরখোলা বালক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে উপস্থিত থেকে পরীক্ষায় অংশ নিলেও প্রকাশিত ফলাফলে অনুপস্থিত উল্লেখ করার ঘটনা ঘটেছে। আর পরীক্ষা না দিয়েও পাশ করলেন ৪ শিক্ষার্থী। এতে সর্বমহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। প্রকাশিত ফলাফলে রাকিব হোসেন সিয়াম (রোল-৭৫৮২) নামের এক শিক্ষার্থীকে অনুপস্থিত উল্লেখ করায় ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি করানো নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সিয়াম জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের নোয়াগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র। সে একই গ্রামের দিদার মজুমদার ও রিতা বেগমের একমাত্র পুত্র।
জানা গেছে, গত শনিবার সারাদেশে একযোগে ঘোষিত পিইসি ফলাফলে অনুপস্থিত উল্লেখ করায় সিয়ামের অভিভাবক কয়েকদিন ধরে নিয়মিতই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে যোগাযোগ করছেন। পরে প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও নোয়াগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সিয়ামের পরিবারকে জানানো হয়, সে জিপিএ-৩.৫৮ পেয়েছে। কিন্তু এ সংক্রান্ত কোন ধরনের কাগজপত্র শিক্ষা অফিস ও নোয়াগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয় তাদেরকে দেয়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার ফলাফল প্রকাশের ইন্টারনেট সার্ভারে রাকিব হোসেন সিয়ামের মার্কসীটে অনুপস্থিত উল্লেখ রয়েছে। কর্তৃপক্ষের অনিয়মের কারণে এ ফলাফলে অভিভাবকরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এদিকে যথা সময়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হতে না পেরে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে স্কুল ছাত্র সিয়াম।
এ ব্যাপারে সিয়ামের অভিভাবক হাবিবুর রহমান জানান, ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হওয়ায় কয়েকদিন ধরেই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে যোগাযোগ করা হচ্ছে। ২-১ দিনের মধ্যে তা সংশোধন করে দেয়া হবে বললেও ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর এই পর্যন্ত তা সংশোধন করা হয়নি।
অন্যদিকে পরীক্ষা না দিয়েও পাশ করলেন ৪ শিক্ষার্থী তারা হচ্ছে, জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের বেতিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র এবায়দুল হোসেন (রোল-৭৬৮২), মুন্সিরহাট ইউনিয়নের মুন্সিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী মোসাঃ সাথি আক্তার (রোল-৪৪৭০), আলকরা ইউনিয়নের পদুয়া দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী আয়শা আক্তার (রোল-৮১৮৯) ও নুসরাত জাহান (রোল-৮১৯০)। এরমধ্যে এবায়দুল পেয়েছে জিপিএ-৩.৫৮, মোট নম্বর ৩৭৮। সাথি আক্তার পেয়েছে জিপিএ-২.৫০, মোট নম্বর ৩০৫। আয়শা পেয়েছে জিপিএ-২.৩৩, মোট নম্বর ২৯০। নুসরাত জাহান পেয়েছে জিপিএ-২.২৫, তার মোট নম্বর ২৯৩।
জানা গেছে, গত শনিবার সারাদেশে একযোগে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা ২০১৭ এর ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এরমধ্যে চৌদ্দগ্রামের বেতিয়ারা, মুন্সিরহাট ও পদুয়া দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থী পরীক্ষা না দিয়েও পাশ করায় শিক্ষকরা হতবম্ব হয়ে পড়েন। আশ্চার্যান্বিত হন চার শিক্ষার্থীরা পিতা-মাতাও। পুরো এলাকায় আলোচনা-সমালোচনা চলছে শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে। তথ্যটি স্বীকার করেছেন বেতিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হামিদা আক্তার ও মুন্সিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুশিউর রহমান। ভুলের ঘটনাটি জানাজানি হওয়ায় অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘মিথ্যা তথ্যে ভাগ্য খুলেছে এয়াদুল, আয়শা, নুসরাত ও সাথি আক্তারের’। এ যদি শিক্ষার অবস্থা তাহলে কোমলমতি শিশুরা আর কি শিখবে? এ ব্যাপারে স্বীকার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফাতেমা নাসরিন বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে জেনেছি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে ভুল সংশোধনের চেষ্টা চলছে। অপরদিকে কুমিল্লা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ