Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

নবজাতক একুশের প্রাণ রক্ষাকারী ওসিসহ চট্টগ্রামে পুলিশ পদক পাচ্ছেন ৭ কর্মকর্তা

| প্রকাশের সময় : ৩ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : ময়লার ভাগাড় থেকে কুড়িয়ে পাওয়া একুশের (নবজাতক) প্রাণ রক্ষার ভূমিকা পালনকারী ওসি আলমগীর মাহমুদসহ চট্টগ্রামের ৭ পুলিশ কর্মকর্তা পাচ্ছেন বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম) ও প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল (পিপিএম)। অপরাধ দমনে সাহসিকতা, ক্লুলেস মামলা তদন্তে সাফল্য এবং মানবিকাতয় ভূমিকা রাখায় তাদের এ সর্বোচ্চ পদক দেয়া হচ্ছে। আগামী ৮ জানুয়ারি ঢাকায় পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনী দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ পদক তাদের গলায় পরিয়ে দেবেন।
পদকপ্রাপ্তরা হলেন- চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) ও সোয়াত প্রধান মীর্জা সায়েম মাহমুদ, সীতাকুÐ থানার ওসি ইফতেখার হাসান, আকবর শাহ থানার ওসি আলমগীর মাহমুদ, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা, সোয়াতের এটিএসআই জিহাদ হোসেন এবং জেলা পুলিশের রিজার্ভ অফিসার (আরও) মো. শফিকুল ইসলাম। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এবার সারাদেশের ১৮২ জনকে বিপিএম ও পিপিএম পদক দেওয়া হবে। এর মধ্যে ৫৮ জন বিপিএম এবং বাকিরা পিপিএম পদক পাচ্ছেন।
গত বছরের ২০ ফেব্রæয়ারি মধ্যরাতে নগরীর আকবর শাহ থানার আল আমিন হাসপাতাল এলাকায় আবর্জনার ভাগাড় থেকে নবজাতককে উদ্ধার করে আনেন আকবর শাহ থানার ওসি আলমগীর মাহমুদ। তিনি তাকে নিয়ে প্রথমে ছুটে যান আগ্রাবাদ শিশু হাসপাতালে। সেখানে তার চিকিৎসা না পেয়ে তিনি ছুটেন চমেক হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকদের আপ্রাণ প্রচেষ্টায় ওই নবজাতক প্রাণে বেঁচে যায়। একুশের প্রথম প্রহরে নবজাতককে উদ্ধার করায় তার নাম রাখা হয় একুশ। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে এক চিকিৎসক দম্পতির জিম্মায় দেয়া হয়। জন্মের পর আবর্জনায় ছুঁড়ে ফেলে দেয়া নবজাতককে উদ্ধার করে দ্রæত চিকিৎসার ব্যবস্থার করার মাধ্যমে তার প্রাণ রক্ষায় অনন্য ভূমিকা পালন করায় ওসি আলমগীর মাহমুদকে সর্বোচ্চ পুলিশ পদক দেয়া হচ্ছে। নগর পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, আলমগীর মাহমুদ মানবিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
এদিকে সীতাকুÐে জঙ্গি অস্তানায় ‘অপারেশন অ্যাসল্ট সিক্সটিন’ পরিচালনায় সাহসী ভূমিকা রাখায় পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা বিপিএম সাহসিকতা, মীর্জা সায়েম, ইফতেখার হাসান ও জিহাদ পিপিএম সাহসিকতা পদক পাচ্ছেন। পিবিআই পরিদর্শক সন্তোষ চাকমা রাঙামাটির লংগদুতে যুবলীগনেতা নুরুল ইসলাম নয়ন, ব্যবসায়ী জালাল উদ্দিন সুলতান, খুলশীর প্রবাসী মো. নাছির, রাঙ্গুনিয়ার নৈশপ্রহরী খুন, বাকলিয়ায় মানসিক প্রতিবন্ধী যুবক খুনসহ ১২ টি মামলার রহস্য উদঘাটন করায় দ্বিতীয়বারের মতো পিপিএম পদক পাচ্ছেন। পেশাদার, দক্ষ এ পুলিশ কর্মকর্তা ইতোমধ্যে ক্লুলেস মামলার তদন্তে অপরিসীম পারদর্শিতা দেখিয়েছেন। চট্টগ্রাম মহানগর এবং জেলায় যেকোন জটিল মামলার রহস্য উদঘাটনে এখন একমাত্র ভরসা এ পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, জটিল মামলার রহস্য উদঘাটন করে তিনি আনন্দ পান।
গত বছরের মার্চ মাসে সীতাকুন্ডে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান পরিচালনার জন্য চট্টগ্রাম রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি ও বর্তমানে অ্যান্টি টেরোজিম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহা. শফিকুল ইসলামও বিপিএম পদক পাচ্ছেন। গত বছরের ১ জুন খাগড়াছড়ির দিঘীনালা থেকে লংগদুর যুবলীগ নেতা ও ভাড়ায় মোটর সাইকেল চালক নয়ন খুন হয়। এজন্য স্থানীয় বাংলাভাষীদের অনেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতিকে দায়ী করে। তবে জনসংহতি সমিতি ওই অভিযোগ অস্বীকার করে। এ ঘটনার পর রাঙামাটি জেলা পুলিশের অনুরোধে মামলার তদন্ত কাজ শুরু করে পিবিআই পরিদর্শক সন্তোষ। তিনি দুই আসামি গ্রেফতার এবং খাগড়াছড়ির দিঘীনালার মাইনি নদী থেকে মোটর সাইকেল উদ্ধার করেন। পাহাড়ি-বাঙালি বিরোধ নয়, মোটর সাইকেল ছিনতাইয়ের জন্য নয়নকে হত্যা করা হয় বলে সন্তোষের তদন্তে বেরিয়ে আসে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ