Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় বিনিয়োগ জরুরি

| প্রকাশের সময় : ৩ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা : খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্বিতীয় কাউন্ট্রি ইনভেস্টমেন্ট প্লান (সিআইপি) চ‚ড়ান্ত করা হয়েছে। পাঁচ বছর (২০১৬-২১) মেয়াদি এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এই মুহূর্তে ২৮ হাজার কোটি টাকা তহবিল প্রয়োজন বলে সিআইপি সূত্রে জানা গেছে। সিআইপি’র প্রতিবেদনে বিনিয়োগের জন্য ১৩টি খাত শনাক্ত করা হয়েছে। এসব খাত উন্নয়নে দ্রæত বিনিয়োগ প্রয়োজন। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে পণ্য রক্ষার জন্য এবং পণ্য সংরক্ষণ, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের ক্ষতিপূরণ ইত্যাদির খাতে বিনিয়োগের কথা বলা হয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা ও গুণগত মানের খাদ্য উৎপাদনের জন্য গবেষণা, ডাটা ও তথ্যভিত্তিক অন্যান্য খাতে এই মুহূর্তে বিনিয়োগ জরুরি প্রয়োজন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিআইপি হচ্ছে কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিত করতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিনিয়োগের জন্য দেশভিত্তিক একটি পরিকল্পনা। এর আলোকে দেশের খাদ্য ও পুষ্টির উন্নয়নে বিনিয়োগের জন্য ১৩টি খাত শনাক্ত করা হয়েছে। বিনিয়োগের উল্লেখযোগ্য খাতের মধ্যে আছেÑ পণ্য উৎপাদনে বিকেন্দ্রীকরণ পদ্ধতি, কৃষি উৎপাদন বাড়াতে গুণগত বীজ, সেচ ব্যবস্থাপনা ও জমির সক্ষমতার উন্নয়ন, পণ্য সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে পণ্য রক্ষা এবং উন্নত পণ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থা। এ ছাড়া রয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ, খাদ্য নিরাপত্তা ও গুণগত মানের খাদ্য উৎপাদন, গবেষণা ডাটা ও তথ্যভিত্তিক কাজ ইত্যাদি। সূত্র মতে, টেকসই উন্নয়নের লক্ষমাত্রা অর্জনের একটি সূচক হচ্ছে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সরকার এ লক্ষ্যে খাদ্য নিরাপত্তায় নতুন পরিকলল্পনা প্রণয়ন করছে। এসব বাস্তবায়নে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। সারাদেশে বায়ু দূষণের প্রধান কারণ হলো ইটের ভাটা। অথচ এই খাতে পরিবেশ দূষণ কিভাবে কমানো যায় এর কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই। আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ জনসংখ্যা ২০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। তাদের বাড়িঘর রাস্তাঘাটের চাহিদা পূরণের পর আবাদি জমির পরিমাণও কমছে। গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে প্রতিবছর শতকরা এক ভাগ কৃষিজমি কমে যাচ্ছে। এই জমি মানুষের নতুন আবাসন ও শিল্পকারখানা গড়ে তুলতে ব্যবহার হচ্ছে। এইভাবে আবাদি জমি কমে গেলে দেশে খাদ্য উৎপাদন ও কৃষি খাতে কর্মসংস্থান ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাবে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পলিসি রিচার্জ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. জায়েদি ছত্তার বলেন, সিআইপি বাস্তবায়নে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে কৃষিজমি সঙ্কোচনশীল প্রবণতা সিআইপি লক্ষ্য অর্জনে সবচেয়ে বড় বাধা। এ কারণে দেশে খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ মোকাবেলায় দেশীয় উৎপাদন ব্যাপক বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তা সম্ভব যদি জমির উৎপাদনক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষিজমির ক্ষয় রোধ করা যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, সিআইপি বাস্তবায়নের পথে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে। তখনই কেবল ফিশারি, ফরেস্ট্র্রি এবং প্রাণীজ সম্পদসহ (ডেইরি ফার্ম) কৃষির বিভিন্ন উপখাতে ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এই দিকে নারী ও শিশুর পুষ্টি নিশ্চিত করতে গম, ডাল, তৈলবীজ, শাকসবজি ও ফলমূল, দুধ ও মাংস উৎপাদন বাড়ানো প্রয়োজন। এভাবে খামার ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন বাড়াবে। জমির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার, পণ্যের কার্যকর বাজার গড়ে তোলার পাশাপাশি ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা উৎপাদিত পণ্য সংরক্ষণ এবং পর্যপ্ত গবেষণার মাধ্যমে কৃষি খাতের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ