পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘ভাই কী বোঝেন রাজনীতির হাল-অবস্থা? ২০১৮ সালে তো এমপি ইলেকশন হতে পারে। অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে তো? হাওয়া কোন দিকে যাচ্ছে বলেন তো দেখি’? গতকাল (সোমবার) দুপুরে বন্দরনগরীর কর্মচঞ্চল আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় একটি বেসরকারি অফিসে সরগরম চায়ের আলাপে-আড্ডায় কথাগুলো বলছিলেন কয়েকজন লোক। তাদের মাঝে মূল আলোচনার কেন্দ্রে ছিল আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার বিষয়টি। কথার ফাঁকে ফাঁকে কখনও আশাবাদ কখনওবা সন্দেহ-সংশয় আর কৌতূহল ফুটে ওঠে। কেউ কেউ বলেন, অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারটা অনেকাংশে ক্ষমতাসীন দলের সদিচ্ছার উপর নির্ভর করছে। এরপর রয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) মেরুদন্ড শক্ত রেখে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে পারবে কি পারবে না তার উপর। আড্ডায় কেউ কেউ বললেন, বিগত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির স্টাইলে ১৫৪টি আসনে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় জয়লাভ করতে সরকার এবার নিশ্চয়ই চাইবে না। তাছাড়া মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনী লড়াইয়ে যাবে তা নিশ্চিত। এরফলে একতরফা ভোট তো এবার হচ্ছে না।
১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাস গণনা কার্যত গতকাল ইংরেজি ২০১৮ সালের প্রথম মাস আর পয়লা দিনটি থেকে শুরু হয়ে গেছে। শুধুই আগ্রাবাদে নয়। বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলে এখন ভোটের হাওয়া বইছে। শীতের আমেজে মানুষের আলাপচারিতা-আড্ডাও জমে উঠেছে। হাট-বাজার, মার্কেট, ব্যবসা-বাণিজ্যকেন্দ্র, বিয়ে-শাদিসহ সামাজিক অনুষ্ঠানাদি, দলীয় তৃণমূল অফিস থেকে শুরু করে নেতাদের ড্রয়িংরুম পর্যন্ত সবখানে বিভিন্ন স্তরের কৌতূহলী মানুষের মুখে মুখে কমন একটি প্রশ্ন ঘুরেফিরে উচ্চারিত হচ্ছে। আর তা হলো নির্বাচনী বছর ২০১৮ সাল এবার কেমন কাটবে। নির্বাচনী পরিবেশ ভালয় ভালয় কাটবে তো? চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত গ্রামেগঞ্জে ভোটের রাজনীতির গুঞ্জন জোরালো হয়ে উঠছে। এরই মাঝে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে আশা-নিরাশার দোলাচলে রয়েছেন সাধারণ মানুষ।
সরকারি দল আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা ইতোমধ্যে অনেকটা খোলাসা করে বলেছেন যে, তারা বিজয়ের মাস ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। তবে বিএনপিকে অপ্রস্তুত বা বেকায়দায় ফেলে হঠাৎ আগাম নির্বাচন দেয়া হতে পারে বলেও বিএনপির কোনো কোনো শীর্ষ নেতা নির্বাচন নিয়ে সরকারের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সতর্ক মন্তব্য করছেন। তবে সাধারণ লোকজনের আলাপচারিতায় ফুটে উঠছে, ‘এখন নাকি তখন’ এভাবে এভাবে সময় পার করে হয়তো আগামী ডিসেম্বর মাসে জাতীয় নির্বাচন দোরগোড়ায় এসে যেতে পারে।
শত বছরে আন্দোলন সংগ্রামের সূতিকাগার বৃহত্তর চট্টগ্রামের মানুষ এমনিতেই বেশিমাত্রায় রাজনীতি সচেতন। ফলে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন থেকে নতুন বছরে পদার্পনের সাথে সাথেই নির্বাচনমুখী রাজনীতি নতুন মোড় নিয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগরী তো বটেই জেলা-উপজেলার হাট-বাজার, সড়কে ‘নতুন বছর ইংরেজি ২০১৮ সালের শুভেচ্ছা-স্বাগতম’ জানিয়ে সম্ভাব্য প্রার্থী কিংবা মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ঢাউস সাইজের ছবি সম্বলিত পোস্টার-বিলবোর্ড, ব্যানারে ছেয়ে গেছে।
আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি এক্ষেত্রে এগিয়ে আছে। তবে জোট-মহাজোটের কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবিও চোখে পড়ছে বিভিন্ন এলাকায়। নতুন বছরে কোনো কোনো মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতা চাটগাঁর ঐতিহ্যবাহী ‘মেজ্জান (মেজবান) খাইয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী ও নিজ নিজ কর্মী-সমর্থকদের চাঙ্গা করার চেষ্টা করছেন। হরেক উপায়ে সম্ভাব্য প্রার্থীরা সম্পর্ক ঝালাই করছেন। দুই প্রধান দলের হাইকমান্ডের পক্ষ থেকেও সম্ভাব্য প্রার্থী বা মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নিজের এলাকাবাসীর সঙ্গে থেকে স্থানীয় কর্মসূচিতে মনোযোগ দেয়ার জন্য দিক-নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগরী এবং চট্টগ্রাম জেলায় নির্বাচনী আসন বা এলাকা ১৬টি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ঘন ঘন ছুটছেন নিজের এলাকায়। কর্মীসভা করছেন। মান্যগণ্য ব্যক্তিদের সাথে শলা-পরামর্শ করছেন। এসব কিছুর মধ্য দিয়ে তারা যার যার নির্বাচনী কৌশল ঠিক করে এগুচ্ছেন। এলাকাবাসী বলেছেন, এটাই এখানকার নির্বাচনী হাওয়া। তারা সম্ভাব্য প্রার্থীদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছেন। ভালমন্দ দিক সম্পর্কেও মন্তব্য করছেন নিজেদের আড্ডায়। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপিসহ বিভিন্ন দল বা জোট-মহাজোটের তৃণমূল নেতা-কর্মী, সমর্থকদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা বেড়েই চলেছে। বাড়ছে তাদের কদর। ভোটের বছরে মাঠে তারা ব্যস্ততার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ মুহূর্তে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ এলাকায় সর্দার-মাতবর, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে ছুটছেন দোয়া ও সমর্থন লাভের আশায়। সেই সাথে প্রধান দু’টি রাজনৈতিক পক্ষ আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী কিংবা সম্ভাব্য প্রার্থী, তৃণমূল নেতা-কর্মী, সমর্থকরা নির্বাচনের নানামুখী আলোচনা-পর্যালোচনা, আগাম হিসাব-নিকাশ ও জল্পনা-কল্পনা শুরু করে দিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।