Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ধামরাইয়ে যত্রতত্র গড়ে উঠছে স্কুল-কলেজ কিন্ডারগার্টেন

সরকারি নীতিমালার তোয়াক্কা নেই

| প্রকাশের সময় : ২ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম


মো. আনিস উর রহমান স্বপন, ধামরাই(ঢাকা) থেকে : ধামরাই পৌর শহরে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠছে নামে বেনামে কিন্ডারগার্টেনসহ স্কুল ও কলেজ। অধিকাংশ স্কুল ও কলেজ সরকারী সুনির্দিষ্ট নীতিমালার তোয়াক্কা না করেই নিজেদের মতো করে পরিচালনা করছে। এতে একদিকে যেমন পড়াশোনার মান ক্রমশঃ কমে যাচ্ছে অপরদিকে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে। আর এ সব স্কুলে যারা শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছেন তাদের অধিকাংশই স্বল্প শিক্ষিত। যাদের নেই কোন শিক্ষকতার প্রশিক্ষণ। তবে ব্যবহার করা হচ্ছে নামী-দামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নাম।
আর এভাবেই জোড়াতালি দিয়ে ধামরাই পৌর শহরে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে কিন্ডারগার্টেনসহ স্কুল-কলেজ। অলি-গলিতে এমন কিন্ডারগার্টেনের সাইনবোর্ড দেখতে পাওয়া যায়। স্কুল-কলেজ গুলোর মধ্যে হাতেগোনা এক/ দু’টি নিজস্ব ভবনে পরিচালিত হলেও বেশী সংখ্যক পরিচালিত হচ্ছে ভাড়া বাসা-বাড়িতে। এসব কিন্ডারগাডের্টনে বেশীর ভাগ শ্রেণিকক্ষেই নেই পর্যাপ্ত আলো বাতাস। নেই কোন খেলার মাঠ বা প্রসস্ত জায়গা। সামনে জায়গা না থাকায় অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় সংঙ্গীত পর্যন্ত গাওয়া হয়না। এতে করে বিকশিত হতে পারছে না কোমলমতি শিশুদের মেধা। শারীরিকভাবেও দুর্বল হয়েই বেড়ে উঠছে।
শহুরে জীবনে বদ্ধ ঘরে থাকার পরে বিদ্যালয়ই হচ্ছে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের ক্ষেত্র। বর্তমানে এসব বিষয় মাথায় না রেখেই আবাসিক ফ্লাট বা বাসা-বাড়ি ভাড়া করেই কেউ কেউ খুলে বসেছেন কিন্ডারগার্টেনসহ স্কুল কলেজ। এসব কিন্ডারগার্টেন পরিচালকরা সকল প্রকার উন্নত সুযোগ-সুবিধা ও শিক্ষার মনোমুগ্ধকর প্রচার-প্রচারণায় অভিভাবকদেরকে আকৃষ্ট করে তাদের শিশু সন্তানদের ভর্তির মাধ্যমে ইচ্ছেমাফিক অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। বাস্তবে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুযোগ-সুবিধাতো দুরের কথা শিক্ষার মানও নি¤œ। কমখরচে অধিক মুনাফার জন্য উপজেলার প্রায় সকল হাট বাজার ও বাস ষ্ট্যান্ডের কাছে গড়ে উঠেছে এসব কিন্ডারগার্টেন। এসব স্কুল কলেজে শিশুদের ভর্তির জন্য শুধু যে দেয়াল লিখন ও ব্যানার ফেষ্টুন তা নয় মাইকেও প্রচার করছে বিভিন্ন প্রলোভনের ফুলঝুড়ি দিয়ে। খোদ ধামরাই সরকারি কলেজের সন্নিকটেই গড়ে তোলা হয়েছে স্কুল এন্ড কলেজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এ যেন দেখার কেউ নেই।
আবার কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ব্যানার-ফেষ্টুনে লেখা রয়েছে এ প্রতিষ্ঠান সরাসরি টাংগাইল ক্যাডেট একাডেমী থেকে পরিচালিত ।
সরকারী নীতি মালায় যেটুকু জানা গেছে, পড়া-লেখার জন্য কোনো স্কুল বা কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবশ্যই সামনে সু-প্রসস্ত জায়গা থাকতে হবে। সুনির্দিষ্ট জায়গা থাকাতো দুরের কথা এ্যাসেমবøী ক্লাসে সকল ছাত্রছাত্রী দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীত গাইবে সে জায়গা পর্যন্ত নেই। অনেকেই বাসা-বাড়ি ভাড়া নিয়ে রংবেরঙের কাপড়ে প্রলোভনের ফুলঝুড়ি দিয়ে পৌর শহরের বিভিন্ন দেয়ালে দেয়ালে আলপনায় লিখে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানের নাম। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে উপজেলায় দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নজরদারি না থাকার কারণে। কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সরকারি বই পেতে অবশ্যই জুন কিংবা জুলাই মাস আসার আগে চাহিদাপত্র দিতে হয়। অথচ জুন-জুলাই মাসে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামে সাইনবোর্ড পর্যন্ত ছিলনা। এসব প্রতিষ্ঠানের নামে কিভাবে নতুন বইয়ের চাহিদাপত্র অন্তর্ভুক্ত হয়েছে তা বোধগম্য নয়। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী রাশেদ মামুনের সঙ্গে আলাপ কালে ধামরাইয়ে কিন্ডার গার্টেন ক’টি এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সঠিক তথ্য আমার জানা নেই। তিনি আরো বলেন, যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নতুন হয়েছে বই থাকলে তারা সবার পরে পাবে। অথচ ওই অফিস থেকেই চাহিদার কোড নাম্বার বসিয়ে বই সরবরাহ করা হয়েছে এমন তথ্য রয়েছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ