Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুক্তিপণের টাকা দিতে না পেরে বাড়ি ছাড়লেন ব্যবসায়ী

| প্রকাশের সময় : ১ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে: মুক্তিপণের ৫ লাখ টাকার মধ্যে দেড় লাখ টাকা নগদ পরিশোধ করেও বাকী সাড়ে তিন লাখ টাকা দিতে না পেরে পুলিশের ভয়ে বাড়ীঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে রফিকুল ইসলাম নামে এক পরিবহন ব্যবসায়ী। বাকী সাড়ে তিন লাখ টাকা না দিলে তাকে গুম করে ফেলবে বলে হুমকি দিয়েছে পুলিশ। তার বাড়ী রায়পুরা শহরের থানাহাটি মহল্লায়। রায়পুরা থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন ও এসআই তারক চন্দ্র শীল’র বিরুদ্ধে এই মর্মে একটি লিখিত অভিযোগ পুলিশের আইজিপি ও নরসিংদী পুলিশ সুপারের নিকট দায়ের করেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ এই ব্যাপারে তদন্ত কাজ শুরু করলেও পুলিশ ক্ষান্ত হচ্ছে না। গত পরশু পরিবহন ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম নরসিংদী প্রেস ক্লাবে গিয়ে তার এই ঘটনা সাংবাদিকদের নিকট বিবৃত করেছেন।
অভিযাগপত্রে বলা হয়েছে, গত ২২ নভেম্বর’১৭ রাত দেড়টায় রায়পুরা থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন ও এসআই তারক চন্দ্র শীল তাদের কথিত সোর্স জুলহাস ও রতনকে সাথে নিয়ে রফিকুল ইসলামের বাড়ীতে যায়। এরপর তারা ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলামকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে বিনা মামলা, বিনা ওয়ারেন্টে তাকে হাতকরা পরিয়ে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তারা রফিকুল ইসলামের নিকট ৩০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। রফিকুল ইসলাম এত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে এসআই তারক ও সেকেন্ড অফিসার আল মামুন রফিকুল ইসলামের হাত, পা ও চোখ বেধে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। এরপর তারা রাত ৩ টায় তাকে ওসির অফিস কক্ষে নিয়ে ৩০ লক্ষ টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। এতেও রফিুকল ইসলাম টাকা দিতে অস্বীকার করলে কথিত সোর্স রতন, রফিকের কাছে গিয়ে জানায় যে, ১০ লাখ টাকা দিলে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে। রফিক এই পরিমাণ টাকা দিতেও অস্বীকার করলে পুনরায় ৫ লাখ টাকায় নেমে আসে। এই অবস্থায় রফিক বাধ্য হয়ে তার স্ত্রীর কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা নিয়ে পুলিশকে দেয়। বাকী সাড়ে তিন লাখ টাকা ১০ দিনের মধ্যে পরিশোধ করার অঙ্গীকার করলে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। পুলিশ রফিককে এই মর্মে হুমকি দেয় যে, ১০ দিনের ভিতর বাকী সাড়ে তিন লাখ টাকা না দিলে তাকে অস্ত্র, বিস্ফোরক মামলায় ঢুকিয়ে দেয়া হবে। এসব কথা কাউকে জানালে তাকে গুম করে ফেলা হবে। এই অবস্থায় রফিকুল ইসলাম, তার পরিবার পরিজনসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে ঘটনাটি অবহিত করে। ১০ দিন চলে যাবার পর পুলিশ টাকা নেয়ার জন্য তাদের সোর্স রতনকে রফিকের নিকট পাঠায়। কিন্তু রফিক মুক্তিপণের বাকী সাড়ে তিন লাখ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে পুলিশ তার প্রতি ক্ষিপ্ত হয় এবং তাকে গুম করা ফেলা হবে বলে হুমকি দেয়।
এই অবস্থায় ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম দ্বিতীয় গ্রেফতারের ভয়ে বাড়ীঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। এরপর থেকে পুলিশের ভয়ে প্রায় মাসাধিককাল ধরে সে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। পরে পলাতক থাকা অবস্থায় রফিকুল ইসলাম গত ২৭ ডিসেম্বর পূনরায় আরেকটি অভিযোগপত্র নরসিংদী পুলিশ সুপারের নিকট দাখিল করে তার জীবনের নিরাপত্তা দাবি করে। কিন্তু নরসিংদী পুলিশ অফিস থেকে এ পর্যন্ত কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। এ ব্যাপারে নরসিংদী প্রেস ক্লাব থেকে রায়পুরা থানার এসআই তারক চন্দ্র শীল’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ দায়েরের কথা স্বীকার করেন। কিন্তু অভিযোগে বর্ণিত ঘটনার কথা অস্বীকার করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ