বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বিশেষ সংবাদদাতা, যশোর : নতুন বছরের আগমন ও বিদায়ের স্মৃতি হাতড়ে অতীত ও ভবিষ্যতের হিসাব-নিকাশ চলছে সবখানে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রত্যাশা নতুন ভোর আলোয় উজ্জ্বল হবে, মাদক ও সন্ত্রাস শূন্যের কোঠায় আসবে। সবার কথা আমজনতার প্রত্যাশা পুরণের স্বার্থে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার বিকল্প নেই। তাই কেটে যাক রাজনৈতিক অস্থিরতা। হোক দেশ ও জাতির উন্নয়ন। রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের মধ্যে সহনশীলতা, সহমর্মিতা, রাজনৈতিক সংস্কৃতি, শিষ্টাচার ও সৌহার্দ্যপুর্ণ পরিবেশ অনুপস্থিতি রাজনীতি সচেতন প্রতিটি মানুষকে প্রচন্ডভাবে আহত করে। এর থেকে সবাই পরিত্রাণ চায়। নানা কারনে ২০১৭ সাল কেটেছে নানা সংশয় ও শঙ্কার মধ্যে। ২০১৮ সালে যেন অতীতের পুনরাবৃত্তি না ঘটে। নতুন বছরটি খুব ভালো কাটুক।
জাতীয় রাজনীতির গতিপ্রকৃতির সাথে তাল মিলিয়ে এমনকি অনেকটা আরেকধাপ বাড়িয়ে জেলা ও উপজেলাসহ স্থানীয় পর্যায়ে অস্থিরতা মারাত্মক রূপ নেয় বছরের অধিকাংশ সময়ে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিশেষ করে প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ - বিএনপির মধ্যে সাংঘর্ষিক অবস্থা বিরাজ করে। এ অঞ্চলে অনেক স্থানে টেন্ডারবাজির অভিযোগ ছিল গেল বছর। নতুন বছরে সেটি যাতে না হয় তাও প্রত্যাশা করা হয়েছে সচেতন ও পর্যবেক্ষক মহল থেকে। অজপাড়া গা’য়ের কয়েকজন কৃষকের কথা, আমরা কৃষিপণ্যের উপযুক্ত মূল্য পাই না। আবার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বাড়ছেই। নতুন বছরে আমাদের প্রত্যাশা সবকিছু আসুক একটা শৃঙ্খলার মধ্যে। বাজারে সিন্ডিকেটের দাপট বন্ধ হোক। গ্রামে গ্রামে পাড়ায় মহল্লায় উঠতি বয়সের সন্ত্রাসীদের দাপট বেড়ে গেছে। বন্ধ হোক এসব। মাদক সন্ত্রাস আসুক শূন্যের কোঠায়।
যশোর ও খুলনাসহ এ অঞ্চলে এনজিওদের ঋণের জালে আটকেপড়া কৃষকদের বের করে আনা যাচ্ছে না। তাছাড়া মধ্যস্বত্বভোগীদের লাগাম টেনে ধরার জোরদার কোনো ব্যবস্থাপনা ছিল না গেল বছর। চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধের ব্যবস্থাও ছিল একেবারেই ঢিলেঢালা। সারাদেশের মোট চাহিদার ৬৫ ভাগ সবজি উৎপাদন করে এ অঞ্চল। মাঠের মূল্য আর বাজার মূল্যের বিস্তর ফারাকের কারনে উৎপাদক চাষী ও ভোক্তা উভয়েই ঠকেছে। যশোরের একজন কলেজ শিক্ষক ও সাংবাদিক মন্তব্য করেন বিরোধীদল দমনে সরকার শতভাগ সফল। টেন্ডারবাজিরও অভিযোগ ছিল না এমন কোনো দপ্তর খুঁজে পাওয়া কঠিন। নতুন বছরে এসব যাতে না হয়। দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পাইপ লাইনে গ্যাস সরবরাহের কাজ সম্পন্ন হয়নি। নতুন বছরের প্রথমে সেটি সম্পন্নের প্রত্যাশা।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চারদিকে বছরের শুভাগমনে ও বিদায়ক্ষণে বেশী আলোচিত হয় উঠতি বয়সের সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বৃদ্ধির বিষয়। এক সময়ের সন্ত্রাসের জনপদে ২০১৭ সালেও লোমহর্ষক হত্যাকান্ডের ধারা বন্ধ হয়নি। ২০১৬ সালের বিদায় বেলায় রুদ্ধশ্বাস আতংকে কাটানো জনসাধারণের প্রত্যাশা ছিল সম্ভাবনাময় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ঘটবে আমুল পরিবর্তন। কিন্তু বাস্তবে সেই প্রত্যাশা পুরণ হয়নি। সুত্রমতে, গোটা অঞ্চলে শুধু সন্ত্রাসী নয়, ডাকাত, মাস্তান, ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজসহ সব অপরাধী এবং সমাজবিরোধীরা কার্যত একাকার হয়ে একের পর এক অঘটন ঘটাচ্ছে। এক সময় চরমপন্থী ও সন্ত্রাসীদের হাতে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার হত। এখন সব ধরণের অপরাধী আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করছে। উঠতি বয়সের তারুণ্য ও মাস্তানদের হাতেও অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র উঠেছে। ছোটখাটো ঘটনায়ও অস্ত্রের ব্যবহার হচ্ছে। যে ধরনের সন্ত্রাসই হোক না কেন, উৎপত্তি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র। অবৈধ অস্ত্রের উৎস বন্ধ করা যায়নি। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের কথা, কালের গর্ভে হারিয়ে যাওয়া ২০১৭ সার্বিক বিষয়ে কেটেছে মোটামুটি। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলবাসী পুরাতনকে ধুয়ে মুছে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে প্রত্যাশা করেছে, ২০১৮ কাটুক গেল বছরের চেয়ে অনেক অনেক ভালো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।