বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বাংলাদেশের বিদেশির মুদ্রার সঞ্চয়ন বহু দিন পর চাপের মুখে পড়েছে। আমদানি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় এই চাপ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতির বিশ্লেষকরা। গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল তিন হাজার ৩২১ কোটি (৩৩ দশমিক ২১ বিলিয়ন) ডলার। নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) রেকর্ড ১৩৬ কোটি ডলারের আমদানি বিল পরিশোধের পর তা ৩২ বিলিয়ন ডলারের নীচে নেমে আসবে, যা হবে গত সোয়া বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম রিজার্ভ। আমদানি ব্যাপক বাড়ার পাশাপাশি প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ ও রপ্তানি আয়ের ধীর গতির কারণে এতোদিন রিজার্ভের যে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা ছিল সেটা আর থাকবে না বলেও আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা। গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে রিজার্ভ। ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর অর্থনীতির অন্যতম প্রধান এই সূচক ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। ৪ নভেম্বর ৩২ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে রিজার্ভ।
চলতি বছরের ২২ জুন রিজার্ভ ছাড়ায় ৩৩ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রিজার্ভ ছিল ৩৩ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার; ২০১৭ সালের জুলাই শেষে। বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন ১০০ কোটি ডলারের নিচে নেমে এলে ভাবমূর্তি নষ্ট হবে বলে ২০০১ সালে প্রথমবারের মতো আকুর আমদানি বিল বকেয়া রাখতে বাধ্য হয়েছিল বাংলাদেশ। রপ্তানি আয় এবং রেমিটেন্স বাড়ায় সেই রিজার্ভ বাড়তে বাড়তে ১৬ বছরের মাথায় ৩৩ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, আওয়ামী লীগের ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদের শেষদিকে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন এক বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি নেমে এসেছিল। এরপর বিচারপতি লতিফুর রহমানের তত্ত¡াবধায়ক সরকার যখন দায়িত্ব নেয়, তখন রিজার্ভ ছিল একবিলিয়ন ডলারের সামান্য বেশি। তখন আকুর বিল বাবদ ২০ কোটি ডলার পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তাতে রিজার্ভ ১ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসত। বাংলাদেশের ইতিহাসে ওই একবারই আকুর বিল বকেয়া রাখা হয়েছিল বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুদ থাকতে হয়। বাংলাদেশকে দুই মাস পরপর পরিশোধ করতে হয় আকুর বিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) আমদানি ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। পদ্মা সেতুসহ সরকারের বড় বড় প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, মূলধনী যন্ত্রপাতি (ক্যাপিটাল মেশিনারি), শিল্পের কাঁচামাল আমদানি বাড়ায় সার্বিক আমদানি বেড়েছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। ‘তবে এতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। এতো আমদানির পরও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে প্রচুর রিজার্ভ থাকবে। যা দিয়ে ৬/৭ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, আমদানি ব্যয় বাড়া মানে বিনিয়োগ বাড়া। অর্থনীতি এগিয়ে চলা; দেশের উন্নয়ন। আমাদের এখন সেটিই হচ্ছে।’ নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহে নভেম্বর-ডিসেম্বর মেয়াদের আকুর বিল পরিশোধ করবে বাংলাদেশ। এবার ১৩৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার পরিশোধ করতে হবে। আকুর এই বিল অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। এর আগে জুলাই-অগাস্ট মেয়াদে ১১৮ কোটি ৯০ লাখ ডলার পরিশোধ করা হয়েছিল। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মেয়াদে শোধ করা হয় আকুর ১১৩ কোটি ২০ লাখ ডলারের বিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।