Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বল্প জনবলেও ব্যাপক সাফল্য

কুমিল্লা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের কার্যক্রম

| প্রকাশের সময় : ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : সারাদেশের বেশ কয়েকটি মাদকপ্রবণ জেলার মধ্যে কুমিল্লা নামটিও রয়েছে। একদিকে সীমান্তবর্তী জেলা এবং অন্যদিকে চট্টগ্রাম-ঢাকার করিডোর হওয়াতে মাদক ব্যবসার জন্য একটি অন্যতম ট্রানজিটে পরিণত হয়েছে কুমিল্লা। জেলা পর্যায়ে মাদক পাচার ও ব্যবসা বন্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হচ্ছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়। কুমিল্লায় শহরের বাগিচাগাঁও এলাকায় রয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়। তথ্য প্রযুক্তির এই সময়ে কুমিল্লায় মাদক পাচার ও বিপণনের জন্য মাদক ব্যবসায়িরা নিজেদের সেক্টরে লোকবল বাড়াচ্ছে, প্রযুক্তি ও উন্নত যানবাহন ব্যবহার করছে। কুমিল্লা জুড়ে মাদক ব্যবসায়িদের বিশাল শক্তিশালী নেটওয়ার্ক রয়েছে। মাদক পাচারকারি ও ব্যবসায়িদের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত জনবল, যানবাহন ও বিশেষ লজিষ্টিক সাপোর্ট ছাড়াই অভিযান পরিচালনা করে আসছে কুমিল্লা মাদক নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়। মাত্র দশজন নিরস্ত্র জনবল নিয়ে সংস্থাটি গত জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত দেড় সহ¯্রাধিক অভিযান পরিচালনা করে ৩১২জন মাদক ব্যবসায়ি-পাচারকারি গ্রেফতার এবং সাড়ে ৮৭ লক্ষাধিক টাকার মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে। স্বল্প জনবল নিয়ে কুমিল্লায় মাদকবিরোধী অভিযানে বড় সাফল্য বয়ে আনছে সংস্থাটি।   
মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে ১৯৯০ সালে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর গঠিত হয়। বর্তমান সরকার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উপ-আঞ্চলিক অফিসগুলোকে ২০১৫ সালের নভেম্বর থেকে অধিদফতরের নতুন সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ি জেলা কার্যালয়ে রূপান্তরিত করেন। কুমিল্লায় কম জনবল নিয়ে সংস্থাটি মাদক বিরোধী কার্যক্রমে সন্তোষজনক ভূমিকা রাখছে। গোটা কুমিল্লায় এ সংস্থাটি মাত্র একটি গাড়ী আর ১০জন নিরস্ত্র লোক দিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছে। মাদক পাচারকারি ও ব্যবসায়ির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার জন্য যে ধরণের লজিষ্টিক সাপোর্ট থাকার প্রয়োজন, তা এখানকার এ সংস্থায় নেই বললেই চলে। তারপরও একজন উপ-পরিচালকের নেতৃত্বে নিরস্ত্র ২জন পরিদর্শক, ২জন উপ-পরিদর্শক, ২জন সহকারি উপ-পরিদর্শক এবং ৪জন সিপাই দিয়ে কুমিল্লার ১৬টি উপজেলায় মাদকদ্রব্য পাচার, বেচাকেনা ও মাদক ব্যবসায়িদের বিরুদ্ধে কাজ করতে হচ্ছে। অনেক সময় বড় অভিযান পরিচালনার জন্য অস্ত্রধারি পুলিশের সহযোগিতা নেয়া হয়। ।
কুমিল্লা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয় এবছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের ২৫ তারিখ পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে ১হাজার ৬৬৩টি মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে ৩১২জন মাদক ব্যবসায়ি ও পাচারকারিকে আটক করেছে। আর মাদক আইনে মামলা হয়েছে ৩৩৪টি।
জানতে চাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয় কুমিল্লার উপ-পরিচালক মানজুরুল ইসলাম বলেন, কাজের পরিধির বিষয়টি চিন্তা করলে জনবল খুব একটা বেশি নয়। আর যানবাহন বলতে ওই একটিই রয়েছে। যা দিয়ে কাজ সারতে হয়। তবে কুমিল্লায় আমরা মাদক বিরোধী অভিযানে সাফল্যের সাক্ষর রেখে চলেছি। গত বছরের তুলনায় এবার মাদকদ্রব্য উদ্ধার, মাদক ব্যবসায়ি-পাচারকারি আটক হয়েছে বেশি। আমরা পৃথকভাবে অভিযান ছাড়াও পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি’র সাথে সমন্বয় করে মাদক বিরোধী অভিযানে পরিচালনা করে থাকি।  তাছাড়া সীমান্ত এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাদক বিরোধী জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে থাকি। মাদকের বিরুদ্ধে স্কুল পর্যায়ে ফুটবল টুর্নামেন্ট ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করছি।  সামনে দিকে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা প্রাপ্তির মধ্যদিয়ে কুমিল্লায় এ সংস্থাটি আরো গতিশীল হয়ে উঠবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে উপ-পরিচালক মানজুরুল ইসলাম বলেন, মাদক ব্যবসায়িদের সঙ্গে এ সংস্থার কারোর সখ্যতার প্রমাণ মিললে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ