বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
প্রশাসনের দাবি নিয়ম মেনেই সব হচ্ছে
জাবি রিপোর্টার : আসন্ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সিনেটে রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচনের শেষ মূহুর্তে এসে বিধি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছে আওয়ামীপন্থী একাংশের প্যানেল ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল জোট’। যার নেতৃত্বে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির ও কৃষকলীগের সভাপতি মোতাহের হোসনে মোল্লা। তবে কোন বিধি ভঙ্গ হয়নি, নিয়ম মেনেই সব হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম ও নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক শেখ মোহাম্মদ মন্জরুল হক।
গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার লাউঞ্জে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির বলেন, সাধারণত নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে রিটার্নিং অফিসার সংশ্লিষ্ট সকল দলের পরামর্শ বা মতামত গ্রহণ করে। আসন্ন নির্বাচনের ক্ষেত্রে এটা করেনি। এ বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার বলেন, ‘এর আগের কোন সিনেট নির্বাচনে এমন কোন পরামর্শ বা মতামত গ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়নি। তারপরও আমরা সকল প্রার্থীদের মতামত নেওয়ার চেষ্টা করেছি। তবে একসঙ্গে সকলকে নিয়ে বসা সম্ভব হয়নি।’
এছাড়া নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সিনেটে রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচন সংক্রান্ত সংশোধিত সংবিধির চতুর্থ এর ১.১ ধারা লঙ্ঘন করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভিসির অনুমোদনক্রমে রিটার্নিং অফিসার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করার কথা। কিন্তু রিটার্নিং অফিসার নিয়োগের আগেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে। তবে এ বিষয়ে ভিসি বলেন, ‘আমরা কোন বিধি ভঙ্গ করি নাই। অফিসিয়ালভাবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আগেই রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।’ এ বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার বলেন, ‘আমাকে রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল এ বছরের ১১ সেপ্টেম্বর। আমি নিয়োগ পাওয়ার পরেরদিন ১২ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করি।’
এ সময় অধ্যাপক শরিফ এনামুল কবির অভিযোগ তুলে আরো বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন সম্পর্কিত যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা একমাত্র নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু ভিসি রিটার্নিং অফিসারকে পাশ কাটিয়ে লিখিত আদেশ দিয়ে ভোটারদের মোবাইল নাম্বার উন্মুক্ত করেন। এ বিষয়ে ভিসি বলেন, ‘প্রার্থীরা আমার কাছে এসে অভিযোগ করেন। একটি প্যানেল ভোটারদের নাম্বার পেয়ে মেসেজ পাঠাচ্ছে। তখন আমি মোবাইল নাম্বার সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেই। কারণ নির্বাচনে যাতে সকল প্রার্থীদের ‘লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত হয়।’ এদিকে এ বিষয়ে কয়েকজন প্রার্থী বলেন, ‘ভিসি ম্যাডাম মোবাইল নাম্বার তো একজনের জন্য উন্মুক্ত করেন নাই। সকল প্রার্থীর জন্য উন্মুক্ত করেছেন। তাহলে এখানে দোষের কি আছে ?’
একই সময় তিনি দৈনিক ইনকিলাবের ‘জাবি ভিসির সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটিকে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে আখ্যা দেন। পরে উপস্থিত সাংবাদিকরা সংবাদটির সত্যতা উল্লেখ করে ভিসির বক্তব্য তুলে ধরেন। এ বিষয়ে ভিসি সাংবাদিকদের বলেন, গত ২৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ওই প্যানেলের প্রার্থীরা সিনেট ভবনে আমাকে ডেকে নিয়ে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং সাংবাদিকের বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা না নিলে আটকে রাখার হুমকি দেন।’
এদিকে সাংবাদিকরা আরো তুলে ধরেন, সভা চলাকালীন সিনেট ভবনের পাশে থেকে সাংবাদিকরা ভিসির সাথে প্যানেলটির প্রার্থীদের অসৌজন্যমূলক কথাবার্তা শুনে। এমন ভাষ্য শুনার পর অধ্যাপক শরিফ এনামুল কবির বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে কোন মন্তব্য করেননি।
অন্যদিকে তাদের প্যানেলের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই প্রো-ভিসির প্রচার প্রচারণার বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি কোন উত্তর দেননি। এছাড়া বিতর্কিত প্রার্থীদের ব্যাপারে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন দু-একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠবে। তা নিয়ে আমরা চিন্তিত নই। আমাদের প্যানেলের সবাই যোগ্য।
এদিকে নির্বাচন নিয়ে অধ্যাপক শরিফ এনামুল কবির বলেছেন, যেসব অসঙ্গতি আছে এসব থাকা সত্তে¡ও বহুল প্রত্যাশিত ও প্রতীক্ষিত এ নির্বাচন সুষ্ঠভাবে হোক তা আমরা চাই। তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন এবং জয়-পরাজয় মেনে নিবেন। তবে তারা জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন নির্বাচনের প্রার্থী ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।