বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নাটোর জেলা সংবাদদাতা :নাটোরের আলোচিত বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান প্রকাশ্যে খুন হওয়া বিএনপির জনপ্রিয় নেতা সানা উল্লাহ নূর বাবু হত্যা মামলার বাদী ও প্রধান বিবাদীর মধ্যে জমে উঠেছে বনপাড়া পৌরসভার তৃতীয় নির্বাচন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
স্থানীয় ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ৮ অক্টোবর বনপাড়া বাজারে ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের প্রকাশ্য সন্ত্রাসী হামলায় বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান ও বনপাড়া পৌরসভার প্রথম মেয়র পৌর বিএনপির সভাপতি সানাউল্লা নুর বাবু নিহত হন। পরের দিন তার সহধর্মিণী মহুয়া নুর কচি আওয়ামী লীগ নেতা প্রভাষক কেএম জাকির হোসেনকে প্রধান আসামী করে ৪৮ ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। সকল অভিযুক্তই বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। সাত বছর অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত এই মামলার তদন্তই শেষ হয়নি, তবে বদল হয়েছে মামলার সাত তদন্ত কর্মকর্তা।
এবার পৌরসভার নির্বাচনে নতুন ৩ টি ওয়ার্ড বৃদ্ধি পেয়ে মোট ওর্য়াড হয়েছে ১২টি। সংশ্লিষ্ট এলাকা পৌরসভার মধ্যে ঢোকার সাথে সাথে মোট ৪ হাজার ২৩৫ জন নতুন ভোটারও পৌরসভার অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন। ফলে মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ২১৫ জন। এবার প্রথম বারের মতো এখানে দলীয় প্রতিকেও ভোট হবে। তাই দলীয় ভাবে মনোনয়ন দেয়ায় দুদলেই এবার রয়েছে একক প্রার্থী। ফলে এবার পৌরসভার প্রথম মেয়র বিএনপি নেতা সানা উল্লাহ নূর বাবু হত্যা মামলার বাদী ও প্রধান বিবাদীর মধ্যে তুমুল নির্বাচনী যুদ্ধ হবে এটাই এখন জেলা জুড়ে আলোচনার অন্যতম বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে। শেষ পর্যন্ত কতটা নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে ভোট হবে এবং এবার কে পরবে বিজয়ের মালা তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ২৮ ডিসেম্বর ভোট গণণা শেষ না হওয়া পর্যন্ত।
বিএনপির প্রার্থী জেলা বিএনপির সদস্য ও বনপাড়া পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মহুয়া নুর কচি বলেছেন, বনপাড়ার মানুষ তার স্বামীর কথা এবং তাকে প্রকাশ্যে নির্মমভাবে হত্যার কথা ভুলেনি। স্বামীকে হত্যার পর থেকে নিজে রয়েছে রাজনীতির ময়দানে। তিনি তার স্বামীর সকল অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে চান, তাই পৌরসভার মানুষ অবশ্যই তার পাশে থাকবে এবং তিনিই বিজয়ী হবেন। এ ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী। অপরদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান মেয়র কে এম জাকির হোসেন বলেছেন, গত পাঁচ বছরে তিনি বনপাড়া পৌরসভার যে উন্নয়ন করেছেন, তার দল ক্ষমতায় আছে, আগামী নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হলে সব অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত করতে পারবেন। তাই বনপাড়ার মানুষ তাকেই ভোট দিবেন। আগামী নির্বাচনে তিনিও বিজয়ের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী।
বড়াইগ্রাম উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রির্টানিং অফিসার মো. ইছাহাক আলী জানান, বনপাড়া পৌরসভায় ৯টি ওয়ার্ড ছিল। কিন্তু এবারে আরও ৩ টি ওয়ার্ড বৃদ্ধি করে ১২টি ওয়ার্ড হয়েছে। এতে ওই দুইটি ইউনিয়ন থেকে এবার ৪ হাজার ৪৪৯ জন ভোটার ও অতিরিক্ত সীমানা পৌরসভার মধ্যে এসেছে। বর্তমানে এই পৌরসভার আয়তন বৃদ্ধি পেয়ে ১১.১৬ বর্গকিলোমিটার হয়েছে। পৌরসভা এলাকায় মোট ভোটার ২১ হাজার ৩০৯ জন।
বনপাড়া পৌরসভা নির্বাচনে জেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ আবুল হোসেন রিটার্নিং অফিসার হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, এই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, নির্বাচনে ভোট গ্রহন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণসহ কার্যকর সকল কর্ম পরিকল্পনা ইতোমধ্যে প্রনয়ন করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের সকল প্রস্তুতি এগিয়ে চলেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।