Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চৌদ্দগ্রামে পাখির কৃত্রিম অভয়াশ্রম

| প্রকাশের সময় : ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

কিচির মিচির কোলাহলমুখর বিমোহিত পরিবেশ
মোঃ আকতারুজ্জামান চৌদ্দগ্রাম থেকে : চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নস্থ ডাকরা গ্রামে একদল প্রকৃতি ও পাখিপ্রেমী যুবকের উদ্যোগে এবং সিনিয়রদের চতিল্লা দিঘীর পাড়ের মসজিদ সংলগ্ন গাছ গুলোতে গড়ে উঠেছে নানা প্রজাতির পাখির এক ব্যতিক্রমী অভয়াশ্রম। যুবকদের এই উদ্যোগে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন এলাকার মুরব্বী শ্রেণীও। যুবকদের উদ্যোগ আর সিনিয়রদের সহযোগিতায় মাটির ও বাঁশ-কাঠের তৈরি প্রায় শতাধিক অভয়াশ্রমে আবাস গড়েছে দোয়েল-কোয়েল, ময়না-টিয়া, শালিক-শ্যামাসহ নানা প্রজাতির রঙ-বেরঙের পাখি। নির্ভয়ে এবং কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে কোনো পাখি ডিম পাড়ছে, কেউবা তা দিচ্ছে, কোনো পাখি সদ্য ফোটা পাখি ছানা পরিচর্যায় ব্যস্ত। চৌদ্দগ্রাম-খিরনশাল সড়কের পার্শ¦বর্তী ব্যতিক্রম এই পাখির আবাসস্থল দেখতে চতুল্লা এলাকায় বাড়ছে উৎসুক মানুষের ভীড়। সড়কের এ অংশ অতিক্রম করার সময় পাখিদের কলতানে এক অন্যরকম আবহের সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে ভোরবেলা মসজিদ থেকে মুসল্লীরা বের হওয়ার পরে পাখির কোলাহলে এক অন্যরকম আবহের সৃষ্টি হয়। ব্যতিক্রমী এই অভয়াশ্রম সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, দিঘীর পাড়সহ এলাকার বেশীর ভাগ গাছেই রয়েছে মাটির হাঁড়ি ও বাঁশ-কাঠের দ্বারা মানুষের তৈরী শতাধিক কৃত্রিম পাখির বাসা। এই কৃত্রিম বাসাগুলোতে বাস করছে নানা প্রজাতির রং বেরঙের অসংখ্য পাখি। এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে ডাকরা গ্রামের প্রকৃতি ও পাখিপ্রেমী একদল উদ্যমী যুবক। যারা প্রকৃতি প্রেমে মশগুল হয়ে পরিবেশ ও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক কৌতুহলের সৃৃষ্টি করেছে।
ডাকরা গ্রামের পাখিপ্রেমী মহিন, মাহফুজ ও সুমনের সাথে কথা বলে জানা যায়, পাখির প্রতি ভালোবাসা থেকে পাখিদের বসবাসকে সহজ করে তুলতে এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে তারা এমন উদ্যোগ নিয়েছে। তারা জানায়, আমরা এখন পাখি শিকার বন্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করছি। গত বছর থেকে এ পর্যন্ত পাখির জন্য শতাধিক কৃত্রিম বাসা দিঘীর পাড়ের গাছগুলোতে প্রতিস্থাপন করেছি। বাসাগুলোতে পাখি এসে আবাস গড়েছে। পাখিরা এখানে পর্যাপ্ত পরিমান নিরাপত্তা অনুভব করে বলেই দিনের পর দিন নতুন নতুন প্রজাতির পাখি এসে এখানকার কৃত্রিম বাসাগুলোতে আবাস গড়ছে। বলা যায়, আমাদের আশা সফল হয়েছে। তারা আরো বলেন, আমরা যখন প্রথম এ কাজ শুরু করি তখন আমাদের এ কাজকে অনেকেই বাড়াবাড়ি ও পাগলামী মনে করে নানা মন্তব্য করে। তবে আশার কথা হলো, দিন দিন তাদের সে ধারনা ভুল বলে প্রমাণিত হয় এবং বর্তমানে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আশাতীত সাড়া পাচ্ছি। অনেকেই নিজের ভুল বুঝতে পেরে আমাদের সাথে একাত্বতা পোষণ করে আর্থিক সহযোগিতা সহ সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে। এখন আমাদের একটাই ইচ্ছা, এই অভয়াশ্রমের পরিধি আরো বৃদ্ধি করা। এজন্য এলাকাবাসীসহ সকল সরকারী-বেসরকারী সংস্থার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ