Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চকরিয়া পিআইও কার্যালয়ের ৮০ লাখ টাকার কাজ ভাগিয়ে নিল সরকারদলীয় প্রভাবশালীরা

| প্রকাশের সময় : ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

জাকের উল্লাহ চকোরী, কক্সবাজার : কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) কার্যালয় থেকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের অফিস আদেশ গোপন রেখে ৮০ লাখ টাকার একটি রাস্তার কাজ ভাগিয়ে নিল সরকারদলীয় প্রভাবশালীরা। এ কাজে প্রভাবশারী ঠিকাদারদের অনিয়মতান্ত্রিক সহযোগিতা করেছে পিআইও ও তার সহকারী। ক্ষুদ্ধ ঠিকাদররা ওই কাজে অংশ গ্রহণ করতে না পেরে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।
অফিস সূত্রে জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে প্রচারিত দরপত্র বিজ্ঞপ্তি নং ১ ও ২ এর অধিনে গ্রামীণ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে চকরিয়া উপজেলার জন্যে ৩টি সড়ক নির্মাণের জন্য দরপত্র আহবান করলে ওই অফিস থেকে ১ ও ২ নং সিডিউল বিক্রি করা হয়। কিন্তু ৩ নং সিডিউলটি গোপন রেখে টেন্ডার ছাড়াই উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাতিজা ও তার ব্যক্তিগত সহকারি আদরকে প্রায় ৮০ লাখ টাকার সড়ক নির্মাণ কাজ মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে ভাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নোটিশ বোর্ডে কোন ধরণের টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি না টাঙ্গিয়ে এবং সিডিউল বিক্রি বন্ধ রেখে অত্যন্ত গোপনে পিআইও অফিস এ কাজটি সেরে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ঠিকাদারেরা। এতে ঠিকাদারা ক্ষুব্ধ হয়ে প্রকল্প কর্মকর্তার কার্যালয়ে তালা দেয়ার চেষ্টা করলে দু’ পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। গত ২০ ডিসেম্বর বুধবার বিকালে চকরিয়া উপজেলাপ্রকল্পবাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ঘটেছে এ ঘটনা।
অভিযোগে জানা যায়, চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা ইউনিয়নের সওদাগরঘোনা চারাবটতলী সড়কের ৭৫ লাখ ৫৯হাজার ২২৯টাকা ও দক্ষিণ পালাকাটা সড়কের জন্য ৭৫লাখ ৫৭হাজার ৯৯৯টাকার ২টি কাজের সিডিউল ঠিকাদারদের মাঝে বিক্রি করলেও হারবাং ইউনিয়নের ৮০লাখ টাকার কাজটি গোপনে প্রভাবশালীরা ভাগিয়ে নেয়। এ কাজটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নোটিশ বোর্ডে প্রচার করা হয়নি। দরপত্র দাখিলের শেষ দিনে দেখা যায় ওই ৮০লাখ টাকার কাজটির ফরম দেয়া হয়েছে উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাতিজা তৌহিদুল ইসলাম কাজল, জালাল নামের এক ঠিকাদার ও ব্যক্তিগত সহকারি হাসানুল ইসলাম আদরকে। ৮০ লাখ টাকার ব্রিক সলিনের কাজটি মুলত তাদেরকেই পাইয়ে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় ঠিকাদারদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করেছে। বেশ কজন ঠিকাদার উপজেলাপ্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিসের তালা দেয়ার চেষ্টা করে। পরে অন্য ঠিকাদারে মধ্যস্থতায় তালা দেয়া থেকে বিরত থাকে। এদিকে চকরিয়া উপজেলার অর্ধশতাধিক ঠিকাদার নতুন করে দরপত্র আহবান ও নোটিশ বোর্ডে বিজ্ঞপ্তিপ্রচারের দাবী জানিয়েছেন। যাতে সকল ঠিকাদার সমানভাবে অংশ নিতে পারে। বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকারও আহবান জানান তারা। ইতোমধ্যে চকরিয়া ঠিকাদার সমিতি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরসহ অন্তত ৯টি কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জানান, ৩ নং সিডিউলটি মন্ত্রনালয় থেকে বিলম্বে পাঠানোর কারণে এ ঘটনাটি ঘটেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ