Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দখল হয়ে যাচ্ছে শেডের পরিত্যক্ত জায়গা

| প্রকাশের সময় : ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

উত্তরাঞ্চলের সাথে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ট্রেন চলাচল বিঘিœত : যাত্রীদের বাড়ছে দুর্ভোগ
পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ সান্তাহার জংশনের লোকোমোটিভ শেড বিলুপ্তির ১৭ বছর পরও নির্মাণ করা হচ্ছে না শেড
মো. মনসুর আলী, আদমদীঘি (বগুড়া) : পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ সান্তাহার রেলওয়ে জংশনের লোকোমোটিভ (শেড) বিলুপ্তি পর দীর্ঘ ১৫ বছর অতিবাহিত হলেও এ জংশনে শেড নির্মাণ না করার ফলে ডকশেডসহ ইঞ্জিন মেরামতের সুবিধাজনক জায়গা না থাকায় উত্তরাঞ্চলের সাথে দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলের ট্রেন চলাচলে বিঘিœত হচ্ছে। এতে ট্রেনযাত্রীদের হতে হচ্ছে নানা বিড়ম্বনায়। ছাড়াও কোটি কোটি টাকা মূল্যের লোকোমোটিভ ইঞ্জিনের বাড়ছে ত্রæটি। এখানে লোকোমোটিভের নিজস্ব কোন অফিস না থাকায় স্টেশনের ভোজনালয়ে অফিস বানিয়ে লোকোমোটিভের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাজ না থাকায় নিরলস দিন কাটাচ্ছেন। বিলুপ্তি হওয়া শেডের পরিত্যক্ত জায়গাগুলো দখল হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় রেল সূত্রে জানা যায়, সান্তাহার জংশন স্টেশন থেকে মিটারগ্রেইজে দিনাজপুর, বুড়িমারী, লালমনিরহাট, বোনাপাড়ার মধ্যে ১০টিসহ সান্তাহার জংশনের উপর দিয়ে রাজশাহী, খুলনা ও রাজধানী ঢাকাগামীসহ প্রতিদিন ৩০টি ট্রেন চলাচল করে। এসব ট্রেনের সান্টিং ছাড়াও গম ও রাইস সাইলো, পাওয়ার প্লান খাদ্যগুদামের গুডস ট্রেনের সান্টিং-এর প্রয়োজন হয় প্রতিদিন। এখানকার লোকোমোটিভ শেড বিলপ্তির পর এখানে ফুয়েলিং-এর ব্যবস্থা না থাকায় ইঞ্জিনের তেলের প্রয়োজন হলে শত শত কিলোমিটার দূরে বোনারপাড়া বা লালমনিরহাট শেডে ফুয়েলিং-এর জন্য ইঞ্জিন প্রেরণ করতে হয়।
কতিপয় রেল কর্মকর্তার সিদ্ধান্তহীনতার কারণে ব্রিটিশ আমলের স্থাপিত কোটি কোটি টাকা মূল্যের সান্তাহার জংশনের লোকোমোটিভ (শেড) ২০০২ সালে বিলপ্তি ঘোষণা করে এর কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতিসহ পুরো স্থাপনা পানির দামে নিলামে বিক্রি হয়। এর পর থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই জংশন স্টেশনে ডকশেড না থাকায় ট্রিপ ইন্সপেকশনের সময় লোকোমোটিভের আন্ডার শেয়ার চেক করা সম্ভব হয় না, ব্রেক বøক পরিবর্তন সাপোর্ট বিয়ারিং অবলোকনে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়াও বর্ষাকালীন সময়ে খোলা আকাশের নিচে যত্রতত্র ইঞ্জিন ফেলে রাখার কারণে চিমনি দিয়ে পানি প্রবেশ করার কারণে সমস্যাগুলো সহজে সমাধান করা সম্ভব হয় না। এখানে কোনো স্পেয়ার মালামালের বরাদ্দ না থাকায় খুচরা যন্ত্রাংশের অভাবে বিভিন্ন রকমের মেরামত কার্যক্রমের বিঘিœত ঘটছে। বর্তমানে এখানকার লোকোমোটিভ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা রেল স্টেশনের একটি ভোজনালয়ের পরিত্যক্ত রুমে অফিসের কার্যক্রম চালাচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানের লক্ষে এখানকার লোকোমোটিভ কর্মকর্তা ও স্টেশন মাস্টার রেলওয়ের বিভিন্ন দপ্তরে একাধিকবার প্রতিবেদন পাঠান। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পশ্চিমাঞ্চলের রেল বিভাগ থেকে গত ২৫/৫/২০০৭ ইং তারিখে লালমনিরহাটের তৎকালীন ডি.এ.এমই কে উল্লেখিত সমস্যাগুলো পর্যবেক্ষণের জন্য জরুরিভিত্তিতে নির্দেশ প্রদান করা হলে তিনি দু’দিন ধরে পর্যবেক্ষণ করে মেরামতসহ বিভিন্ন সমস্যাগুলো নিরসনের জন্য প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী রেলওয়ে পশ্চিমজন রাজশাহী বরাবরে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। উল্লেখিত প্রতিবেদনের দাখিলের পরও সমস্যাগুলো সমাধান না করার ফলে বাড়ছে কোটি কোটি মূল্যের লোকোমোটিভ ইঞ্জিনের সমস্যা। এ কারণে সান্তাহার জংশনের সকল রেল রুটের ট্রেন চলাচল বিঘœ ঘটছে। ফলে যাত্রীদের ভোগান্তিও দিন দিন বাড়ছে। অপরদিকে দখল হয়ে যাচ্ছে বিলুপ্তি ঘোষণা করা লোকো শেডের পরিত্যক্ত কোটি কোটি টাকার মূল্যবান জায়গা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ