Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নরসিংদীতে কার্বাইড ও ফরমালিন মিশ্রিত বিষাক্ত টমেটোতে বাজার সয়লাব

| প্রকাশের সময় : ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে: কার্বাইড ও ফরমালিন মিশ্রিত পাঁকা টমেটোয় সয়লাব হয়ে গেছে নরসিংদীর হাট বাজার। তেল চুকচুকে চেহারার এসব টমেটো কিনে প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এসব টমেটো খেয়ে মানুষ বিভিন্ন আন্ত্রিক রোগের শিকার হচ্ছে। শিশুরা শিকার হচ্ছে দীর্ঘস্থায়ী বিষক্রিয়ায়। চোখের সামনে এসব বিষাক্ত টমেটো বেচা কেনা হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমদানিকারক ও বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না।
প্রতিবছরই শীতের প্রথম দিকে ভারত থেকে বৈধ অবৈধ পথে আমদানী হয় শত শত টন কাঁচা টমেটো। দেশী আমদানীকারকরা এসব কাঁচা টমেটোতে কার্বাইড মিশ্রণ করে পাঁকিয়ে আড়তে সরবরাহ করে। আড়তদাররা এসব টমেটোর পঁচন রোধ করার জন্য ২য় দফায় মিশ্রণ ঘটায় ফরমালিন। এরপর তারা সরবরাহ করে পাইকারী ক্রেতাদের কাছে। পাইকারী ক্রেতারা পুনরায় ফরমালিন স্প্রে করে সেগুলো বাজারে পাঠায়। খুচরা বিক্রেতারা এসব টমেটো চাটাইয়ে তুলে ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করে। তখন টমেটোর দাম থাকে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি। টমেটো ব্যবসায়ীরা টমেটোতে বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশ্রিত করে একদিকে জনগণের স্বাস্থ্যহানী ঘটায় অপরদিকে ২য় বার চড়া দামে বিক্রি করে জনগণকে পকেট থকে অর্থ হাতিয়ে নেয়। সাধারণ ক্রেতারা উচ্চ মূল্য দিয়ে এসব বিষাক্ত টমেটো কিনে নিয়ে খাচ্ছে। সাধারণ ভোক্তারা জানিয়েছে টমেটোর স্বাদ টক বা মিষ্টি হয়ে থাকে। কিন্তু এসব টমেটোর কোন স্বাদ নেই। নেই কোন গন্ধও। আগুন পানি এসব টমেটোর ধারে কাছেও যেতে পারে না। রান্না করলেও মনে হয় টমেটো ক্ষেতেই রয়ে গেছে। এসব টমেটো চিবুলে দাঁত বিষ করে। কিছু টমেটো চুইংগামের মতো ফুলে ওঠে। উপরন্তু এসব টমেটো দিয়ে খাট্টা রাধলে পঁচা ঘাসের গন্ধ বের হয়। টমেটোর ভর্তা একটি মুখরোচক খাবার। সবাই টমেটো ভর্তা পছন্দ করে। কিন্তু এসব টমেটো দিয়ে ভর্তা বানালে কোন স্বাদ পাওয়া যায় না। একবার খেলে আরেক বার খেতে ইচ্ছে করে না।
এরপরও সাধারণ ভোক্তারা এসব টমেটো কিনে নিতে বাধ্য হচ্ছে। শীত শুরু হলে দেশে উৎপাদিত হয় বিভিন্ন জাতের টমেটো। এসব টমেটোও প্রথম অবস্থায় কার্বাইড দিয়ে পাঁকিয়ে বাজারে আমদানী করে। প্রতিদিন শত শত টন টমেটো নরসিংদী বড় বাজার, ব্রাহ্মন্দী নয়াবাজার, রেলবাজার, ভেলানগর বাজার, কাউরিয়াপাড়া বাজার, হাজীপুর বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে। টমেটো বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে কোন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। গত কয়েক বছর জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোবাইল কোর্ট পাঠিয়ে কিছু আমদানীকারক, পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতাদের জেল জরিমানা করা হয়েছিল। এরপর থেকে অনেক বাজারেই এসব বিষ মিশ্রিত পাঁকা টমেটো বিক্রি অনেকটা কমে গিয়েছিল। কিন্তু এ বছর আমদানীকারক ও বিক্রেতারা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন বাধা না পেয়ে বেপরোয়াভাবে এসব টমেটো বিক্রি করছে। সচেতন ক্রেতারা বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশ্রিত টমেটো বিক্রি করতে নিষেধ করলেও তারা তা কানে তুলছে না। প্রতিদিন বাজারে চাটাইগুলো ভরাট করে এসব টমেটো বিক্রি করছে খুচরা বিক্রেতারা। আর তা খেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ