বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
জাবি সংবাদদাতা : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সিনেটে রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচন হয়না দীর্ঘ ১৯ বছর। অবশেষে আগামী ৩০ ডিসেম্বর হতে যাচ্ছে সে কাঙ্কিত নির্বাচন। তবে এ নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের প্রশ্ন, এবারের নির্বাচন হওয়ার পর নিয়মিতভাবে হবেতো এ নির্বাচন, নাকি আবার থেমে যাবে? কারণ বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ-১৯৭৩ এর অ্যাক্ট অনুযায়ী প্রতি ৩ বছর পর পর সিনেটে সাবেক ছাত্রদের প্রতিনিধিত্বকারী রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু জাবিতে সর্বশেষ ১৯৯৮ সালে নির্বাচন হয়েছিল। তাই এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের অনেকেই নির্বাচন নিয়মিত করার প্রতিশ্রæতি দিচ্ছেন।
জানা যায়, আওয়ামীপন্থিদের একাংশের প্যানেল ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও প্রগতিশীল গ্র্যাজুয়েট মঞ্চ’র ইস্তেহারে গুরুত্ব পেয়েছে নিয়মিত নির্বাচনের বিষয়টি। তাদের ইস্তেহারে বলা হয়েছে, নির্বাচনে জয়ী হলে ৩ বছর পূরণ হওয়ার আগেই রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে। এই প্রতিশ্রæতি রক্ষ করতে না পারলে ৩ বছর পর তারা সিনেট থেকে ‘পদত্যাগ’ করবেন।
এ প্যানেলের নেতৃত্বদানকারী দ্য পিপলস ইউনিভার্সিটির সাবেক ভিসি ও বর্তমান জাবির পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরী জানান, ‘আমরা নির্বাচিত হলে ৩ বছর পূরণ হওয়ার পর একদিনও বেশি পদ ধরে থাকবো না।’
এছাড়া গ্রন্থাগারের আধুনিকায়ণ, আবাসিক ও পরিবহন সমস্যার সমাধান, জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন, কার্যকর অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন গঠন, অডিটোরিয়ম সংষ্কার, শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ তৈরি, রাজনীতির নামে হয়রানি বন্ধসহ ইত্যাদি প্রতিশ্রæতি গুরুত্ব পেয়েছে তাদের ইস্তেহারে।
এদিকে বিএনপিপন্থি ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, বহুদলীয় গণতন্ত্র ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী’ প্যানেলর ইস্তেহারেও গুরুত্ব পেয়েছে যথা সময়ে রেজিস্ট্রার্ডর্ গ্র্যাজুয়েট নির্বাচন ও জাকসু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।
এছাড়া শিক্ষক নিয়োগে মেধাকে প্রাধান্য, প্রতিষ্ঠাকালীন মাস্টারপ্ল্যানের বাস্তবায়ণ, আবাসিক সমস্যার সমাধান, চিকিৎস সুবিধা বৃদ্ধিসহ ইত্যাদি গুরুত্ব পেয়েছে তাদের ইস্তেহারে।
এই প্যানেলের প্রার্থী কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমরা জাকসু নির্বাচন ও যথা সময়ে রেজিস্ট্রার্ডর্ গ্র্যাজুয়েট নির্বাচন দিতে বদ্ধপরিকর। আমাদের এসব প্রতিশ্রæতি পূরণ করতে না পারলে আমরা পদত্যাগ করব।’ ওই প্যানেলের আর এক প্রার্থী অধ্যাপক নূরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ৩ বছর পূরণ হওয়ার আগেই রেজিস্ট্রার্ডর্ গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচনের ব্যবস্থা করবো। ৩ বছরের বেশি একদিনও ক্ষমতায় থাকবো না।’ এদিকে প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে আছে অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরের নেতৃত্বধীন আওয়ামীপন্থি একাংশের প্যানেল ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ^াসী প্রগতিশীল জোট’। এই প্যানেলে ইস্তেহারে জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন, ৩ বছর পর রেজিস্টর্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচনের ব্যবস্থা করা মত সুস্পষ্ট কোন ইস্যু উল্লেখ করা হয়নি।
তবে শিক্ষা গবেষণার সুযোগ বৃদ্ধি, ভৌত অবকাঠাম সংস্কার, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীর স্বার্থ সংরক্ষণের কথা উল্লেখ আছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এই প্যানেলে থেকে ৫ জন দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে সিনেট থাকার পরেও ফের প্রার্থী হয়েছে। সেকারণেই তারা ৩ বছর পর দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া বা পদত্যাগের প্রতিশ্রæতি দিচ্ছেন না।
ওই প্যানেলের অন্যতম প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ। যিনি গত ১৯ বছর ধরে সিনেটে রেজিস্ট্রার্ডর্ গ্র্যাজুয়েটদের প্রতিনিধিত্ব করছেন এবং ছাত্র জীবনে বাম রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সকল পেশার গ্র্যাজুয়েটদের সমন্বয়ে প্যানেল ঘোষণা করেছি। সাবেক সিনেটরদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিতে নিতে কাজ করব।’
এ বিষয়ে আব্দুল্লাহ মামুন নামের এক ভোটার বলেন, “সিনেটে গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধিদের দাবি না থাকার কারনেই ১৯ বছর পর নির্বাচন হতে যাচ্ছে। ফলে আসন্ন নির্বাচনে ‘৩ বছর পর সিনেট নির্বাচন ব্যবস্থা, অন্যথায় পদত্যাগ’, জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের মত প্রতিশ্রæতি ভোটারদেরকে প্রভাবিত করবে।”
নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন মুকসিমুল আহসান অপু, রেজাউল হক কৌশিক, মুকিমুল হাসান হিমেলসহ আরো কয়েকজন প্রার্থীরা প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন, তারাও নির্বাচিত হলে ৩ বছরের বেশি একদিনও সিনেটর হিসেবে থাকবেন না বলে জানিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।