বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মো: শামসুল আলম খান ময়মনসিংহ থেকে : শিক্ষা নগরী ময়মনসিংহের সরকারি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের (কেবি) ভর্তি ফি নিয়ে রীতিমতো নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশ অমান্য করে তারা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৪ হাজার ৬৪০ টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছে।
এ ঘটনায় ক্ষোভের অনলে পুড়ছেন সংশ্লিষ্ট কলেজে ভর্তি হতে যাওয়া শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা। ইতোমধ্যে সংক্ষুব্ধ এক অভিভাবক রাজধানীর আগারগাঁওয়ের প্রশাসনিক এলাকার তথ্য কমিশনের প্রধান তথ্য কমিশনার বরাবর এক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। নিজের সন্তানকে ভর্তি করতে গিয়ে চরম বিপাকে পড়া ভুক্তভোগী এসব অভিভাবকরা এ বিষয়ে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জানা যায়, ময়মনসিংহের নামি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ হিসেবে পরিচিত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ (কেবি)। কিন্তু চলতি শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে মনগড়া ভর্তি ফি নির্ধারণ করেছে সংশ্লিষ্ট কলেজ কর্তৃপক্ষ। ভর্তি নীতিমালা লঙ্ঘন করে তারা নির্দিষ্ট টাকার অঙ্কের পরিবর্তে ইচ্ছামতো অতিরিক্ত ফি আদায় করছে।
এ কলেজের ভর্তিচ্ছু এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক নগরীর কাঁচিঝুলি গোলাপজান রোডের বাসিন্দা আব্দুল্লাহ আল শিফাত অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায়ে কলেজটির বিরুদ্ধে তথ্য কমিশনের প্রধান তথ্য কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ ঠুকেছেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ (কেবি) থেকে এইচএসসি’র ফরম ফিলাপের জন্য বাধ্যতামূলক ১০ হাজার ৫২৫ টাকা নেয়া হচ্ছে। কলেজের বেতন রশীদ অনুযায়ী কলেজের আনুসাঙ্গিক খরচ ৩ হাজার ৫৫০ টাকা। এবং বোর্ড ফি, কেন্দ্র ফি ও রেজিষ্ট্রেশন ফি ২ হাজার ৩৩৫ টাকা।
তিনি আরো বলেন, তবে এইচ.এস.সি পরীক্ষা উপলক্ষে অতিরিক্ত ক্লাস ও পরীক্ষা ফি হিসেবে ৪ হাজার ৬৪০ টাকা নেয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে এ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে যা, প্রত্যক্ষভাবে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ডের নির্দেশ অমান্য করে। অতিরিক্ত এ টাকা আদায় অনিয়ম ও দুর্নীতির শামিল বলেও মনে করেন তিনি। এ কলেজে ভর্তিচ্ছু একাধিক অভিভাবক বলেন, ভাল এ কলেজে ভর্তির ইচ্ছা থাকে প্রতিটি মেধাবী শিক্ষার্থীর। কিন্তু তারা যেভাবে মনগড়া স্টাইলে ভর্তি ফি বাড়াচ্ছেন তা অনেক অভিভাবকেরই সাধ্যের বাইরে।
ফলে ইচ্ছা থাকা সত্তে¡ও বেশিরভাগ অভিভাবকই তাদের সন্তানদের কলেজটিতে ভর্তি করতে পারছেন না। এ নিয়ে তারা চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন।
তবে এ বিষয়ে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের (কেবি) শিক্ষক ভাস্কর সেন গুপ্ত ইনকিলাবকে বলেন, ছাত্রদের আবেদন অনুযায়ীই তাদের জন্য অতিরিক্ত ক্লাস, পরীক্ষা, লেকচার শিট ও মডেল ্েটস্টের জন্য এ টাকা নেয়া হচ্ছে। এ টাকায় শিক্ষার্থীদের ৭৫ টি ক্লাস, ৭৫ টি পরীক্ষা, ৭৫ টি লেকচার শিট এবং ১৩ পত্রে ১’শ নম্বরের মডেল টেস্টের জন্য এ অর্থ নেয়া হচ্ছে। তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, নগরীর ক্যান্টনম্যান্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজ, আলমগীর মনসুর মিন্টু মেমোরিয়াল কলেজ ও রয়েল মিডিয়াসহ বেশ কয়েকটি কলেজে আমাদের চেযে বেশি চার্জ নিচ্ছে এসব বাবদ।’ জানতে চাইলে সরকারি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের (কেবি) প্রিন্সিপাল সাখাওয়াত হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, ওইসব ক্লাস, পরীক্ষা ও লেকচার শিটের খরচ হিসেবে এ টাকা নেয়া হচ্ছে। বোর্ড ফি আলাদাভাবেই দেখানো হয়েছে। আমাদের কমিটি এভাবেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ময়মনসিংহ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মো: আব্দুল মোতালেব ইনকিলাবকে বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক (ডিসি) খলিলুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায় বোর্ডের নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।