Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ধামরাইয়ে ইটভাটা থেকে শিশু শ্রমিকসহ ১২ জন উদ্ধার

| প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


ধামরাই(ঢাকা)উপজেলা সংবাদদাতা ঃ এক জাতীয় সংসদ সদস্যের সুপারিশে ঢাকার ধামরাইয়ে দুটি ইটভাটার বন্দিদশা থেকে শিশুসহ ১২ শ্রমিককে উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। শ্রমিকদের রাতে কক্ষের মধ্যে তালাবদ্ধ করে আটকিয়ে রেখে দিনের বেলায় পাহাড়া দিয়ে জোর করে ইটভাটায় কাজ করানো হচ্ছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইটভাটা থেকে শ্রমিকদের উদ্ধারের পর পালিয়ে যাওয়া শ্রমিক দলনেতা (স্থানীয় ভাষায় সর্দার বা দালাল ) আবুল কালামকে এক মাসের মধ্যে থানায় হাজির করার শর্তে শ্রমিকদের ছেড়ে দেয় পুলিশ। তবে পুলিশ বলছে শ্রমিকদের উদ্ধার করা হয়নি ভাটার মালিক ও শ্রমিকদের থানায় ডেকে আনা হয়েছিল।
উদ্ধার হওয়া শ্রমিকরা হলেন সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার হরিনগর গ্রামের আমীন (১৯),মিজানুর রহমান (১২),আমিনুর রহমান(১০),শহিদুল গাজী (৩০),আবাদ চন্ডিপুর গ্রামের আহসান হাবিব(২৩),রুহুল আমিন ইসলাম(১৯), নূরুল ইসলাম(২৩), মিঠু(২৪) রহমত আলী,টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া গ্রামের ফজল খাঁ(৩২)সহ ১২জন।
পুলিশ ও ইটভাটা থেকে উদ্ধার শ্রমিকরা জানায়, প্রায় দুই মাস আগে উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের সেভেন স্টার ইটভাটার মালিক নুরুল হুদা ও নাছির উদ্দিন এবং মাষ্টার বাড়ি ইটভাটার মালিক সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার হরিনগর গ্রামের দলনেতা (সর্দার বা দালাল ) আবুল কালামকে প্রায় ১৫ লাখ টাকা অগ্রিম দেয় ইটভাটায় শ্রমিক দেয়ার শর্তে। শর্তানুযায়ী শ্রমিক সর্দার আবুল কালাম তার আপন ভাই ভাতিজাসহ সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলাসহ আশপাশ এলাকার কিছু সংখ্যক শ্রমিক এনে ওই ভাটায় কাজ দেন। শ্রমিকদের কাজ ধরিয়ে দিয়েই পারিশ্রমিক হিসেবে আংশিক টাকা দিয়ে ইটভাটা থেকে প্রায় ২৬ দিন আগে দলনেতা কালাম পালিয়ে যায়। এরপর থেকে দুই ভাটার মালিক পক্ষ কালামের নিয়োজিত ১২জন শ্রমিককে রাতের বেলায় কক্ষে আটকে রেখে দিনে পাহাড়া দিয়ে জোর করে ভাটায় কাজ করান।
শ্রমিক রুহুল আমীন,আহসান হাবিব ও ফজল খা জানান, সর্দার বা দালাল আবুল কালাম পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে তাদের রাতে একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখা হতো। দিনে মালিকের লোকের প্রহরায় কাজ করানো হতো। রাতে প্রস্রাব-পায়খানা কক্ষেই সেড়ে নেয়া হতো। অবশেষে শ্রমিকরা নিজ নিজ গ্রামের বাড়ীতে স্বজনদের জানিয়েছিল বন্দিদশা থেকে মুক্ত করতে। পরে শ্রমিকদের স্বজনরা শ্যামনগন উপজেলার স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সুপারিশসহ ইটভাটা থেকে তাদের উদ্ধারের জন্য সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর-কালীগঞ্জ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য বরাবর একটি আবেদন করেন। ওই আবেদনে সংসদ সদস্য ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারকে বিষয়টি নিয়ে সুপারিশ করেন। পরে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার ধামরাই থানা ওসিকে বিষয়টি অবহিত করলে বৃহস্পতিবার রাতে ধামরাই থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সাইদ আল মামুনের কক্ষে দুই ইটভাটার মালিক নুরুল হুদা ও আজম,ধামরাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন,ভাড়ারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আলম ও শ্রমিকদের স্বজন মুক্তিযোদ্ধা সোরত আলী গাজীকে নিয়ে সালিশ বৈঠকে বসেন। ওই সময় কক্ষের বাইরে অবস্থান করা বন্দিদশা থেকে উদ্ধার হয়ে আসা শ্রমিকদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করছিলেন ধামরাই প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক দৈনিক ইনকিলাবের ধামরাই সংবাদদাতা আনিস উর রহমান স্বপনসহ অপর এক সাংবাদিক। এ সময় পরিদর্শক (তদন্ত) তাঁর কক্ষ থেকে বেড়িয়ে এসে শ্রমিকদের নাম ঠিকানা নিতে নিষেধ করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় সাংবাদিকরা থানায় জড়ো হন। এক পর্যায়ে সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খোরশেদ আলমকে বিষয়টি অবগত করেন সংবাদকর্মীরা। পরে তদন্ত কর্মকর্তা সাংবাদিকদের ডেকে নিয়ে বিষয়টি সুরাহা করেন। এ বিষয়ে ধামরাই থানার পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) আবু সাঈদ আল মামুন বলেন,সাতক্ষীরার এমপি সাবের সুপারিশে ঢাকার এসপি স্যারের নির্দেশে ইটভাটার মালিক ও শ্রমিকদের নিয়ে বৈঠক করি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ