Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

দুপচাঁচিয়ার স্কুলছাত্রী সীমা নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে দিলো

পড়ালেখার দায়িত্ব নিলেন ইউএনও

| প্রকাশের সময় : ২২ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) উপজেলা সংবাদদাতা : দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের সরদারপাড়ায় গত ২০ ডিসেম্বর বুধবার ৮ম শ্রেণীর দরিদ্র ছাত্রী সীমা মহন্ত সাহসিকতার সাথে নিজেই নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকে দিয়েছে। জানা গেছে, উপজেলা সদরের পালপাড়ার উৎপল মহন্ত অভাব অনটনের কারণে তার পৈত্তিক বাড়ির জায়গা বিক্রি করে পাশের্^ সরদারপাড়ায় বাসা ভাড়া নেয়। এক মেয়ে, এক ছেলে ও স্ত্রীসহ ভাড়া বাসায় বসবাস করে। স্থানীয় সিওঅফিস বাসষ্ট্যান্ডে এক কটকটির দোকানে সে কর্মচারি হিসেবে কাজ করে এই দ্রব্য মূল্যে বাজারে কোন রকমে সংসার চালাতে থাকে। একমাত্র মেয়ে স্থানীয় পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী সীমা মহন্ত পড়ালেখার ব্যয় বহন তার পক্ষে কষ্টকর হয়ে উঠে। এরই মাঝে নওগাঁ জেলার জনৈক ছেলে (২৫) এর সাথে মেয়েটির বিয়ের প্রস্তাব আসে। এক পর্যায় বিয়ে ঠিকও হয়। গত বুধবার রাতে মেয়েকে তার নানির বাড়ি পাশর্^বর্তী কাহালু উপজেলা সদরের পালপাড়া নিয়ে গিয়ে বিয়ের কথাও পাকাপাকি হয়। এ দিকে এই বাল্য বিয়ের বাঁধ সাজে মেয়ে সীমা মহন্ত নিজেই। সে কৌশলে গত বুধবার সকালে তার বাল্যবিয়ে দেওয়ার বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহেদ পারভেজ এর মোবাইলে ম্যাসেজ করে জানায় এবং বাল্যবিয়ে থেকে তাকে রক্ষার জন্য অনুরোধ করে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাৎক্ষণিক বিষয়টি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আব্দুর রাজ্জাক কে জানান। অফিসার ইনচার্জ একদল পুলিশ ফোর্স মেয়েটির বাড়িতে পাঠিয়ে মেয়েটির বাল্যবিয়ে বন্ধের নির্দেশ দেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহেদ পারভেজ মেয়ের মা’র সব কথা জেনে তাকে অফিসে আসতে বলেন এবং বিয়ে বন্ধের নির্দেশ দেন। গতকাল বৃহস্পতিবার মেয়েটির মা শিউলি মহন্ত মেয়ে সহ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিস কক্ষে আসেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাসারকেও ডেকে নেন এবং মেয়েটির বাল্যবিয়ে না নেওয়ার নির্দেশ দেন। একই সাথে তিনি মেয়েটির লেখাপড়ার চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। মেয়েটি পড়ালেখা করতে চাইলে, তিনি তার পড়ালেখার জন্য জানুয়ারী মাস থেকে উপবৃত্তির ব্যবস্থা গ্রহণ, বিদ্যালয়ে বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ সহ তার প্রাইভেট শিক্ষকের ব্যবস্থা নেন। সেই সাথে মেয়েটির স্কুল ড্রেস ও স্কুল ব্যাগ ক্রয়ের জন্য নগদ অর্থ প্রদান করেন। তিনি মেয়েটির পড়ালেখার খরচ বাবদ প্রতি মাসে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে অনুদান প্রদানের প্রতিশ্রæতি দেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ