Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যমুনা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

তারাকান্দি-ভ‚য়াপুর সড়ক রক্ষা ও বালু উত্তোলন বন্ধে বিক্ষোভ

| প্রকাশের সময় : ২২ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

জামালপুর জেলা সংবাদদাতা : সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে যমুনা নদী থেকে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। এতে হুমকির মুখে পড়েছে তারাকান্দি-ভ‚য়াপুর সড়ক। অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীভাঙনের কবলে রয়েছে শতাধিক ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও যমুনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ। এদিকে তারাকান্দি-ভ‚য়াপুর মহাসড়ক রক্ষা ও বালু উত্তোলন বন্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার ডোয়াইল, পোগলদিঘা, আওনা, সাতপোয়া, কামরাবাদ ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার রেলিঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। উপজেলার কোথায়ও অনুমোদিত কোনো বালুমহল নেই এবং নদী থেকে বালু উত্তোলনে নেই প্রসাশনের অনুমতিও। তারপরও রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছত্র ছায়ায় মাসের পর মাস উপজেলার যমুনা, ঝিনাই ও সূবর্ণখালী নদীর একাধিক স্থান থেকে ড্রেজার দিয়ে চলছে অবাধে বালু উত্তোলন। এভাবে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙনের কবলে পড়ে অনেকেই হচ্ছেন ভ‚মিহীন। প্রসাশনের নাকের ডগায় কয়েকটি সংঘবদ্ধ দল অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। এ বালু বিক্রি করে অনেকেই হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। এ কারণে নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করায় হুমকির মুখে পড়েছে নদী তীরবর্তী ঘরবাড়ি ও আবাদি জমির মালিকরা। বালু উত্তোলনের প্রত্যেকটি পয়েন্টেই নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার দলীয় স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। এ অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে নেই প্রসাশনের কোন উদ্যোগ।
এ ব্যাপারে সরকারের ভ‚মি বিভাগসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্তা ব্যক্তিদের নজরদারির পাশাপাশি যথাযথ ভ‚মিকা রাখা অতি জরুরি হয়ে পড়েছে বলে এলাকাবাসী মনে করেন।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা ইউনিয়নের যমুনা নদী বাধ নির্মাণে সরকার প্রায় ৩০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এ প্রকল্পের কাজ অতি দ্রæত শুরু করা হবে। অথচ পিংনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খন্দকার মোতাহার হোসেন জয়ের অনুমতিক্রমে ইউপি সদস্য হারুন-অর-রশিদের নেতৃত্বে যমুনা নদীর প্রধান সড়ক ঘেঁষে একাধিক ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়মানুযায়ী নদীর তীর থেকে দুই হাজার ৫০০ ফুট মাঝ থেকে বালু উত্তোলনের নিয়ম থাকলেও এসব নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছেনা কেউ। নদীর তীরবর্তী এলাকায় শ্যালোইঞ্জিন চালিত ড্রেজার দিয়ে যত্রতত্র গর্ত করে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে নদীভাঙনের কবলে রয়েছে শতাধিক ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও যমুনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ এবং হুমকির মুখে তারাকান্দি-ভ‚য়াপুর সড়ক। ওই সব এলাকার বাসিন্দারা ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে। পিংনা ইউনিয়নের বাশুরিয়া গ্রামের আসাদ আলীর ছেলে সুরুজ আলী ড্রেজার মেশিন বন্ধের দাবিতে জেলা প্রশাসক ও সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত আবেদন করলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার মোতাহার হোসেন জয় অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অবৈধভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলনের খবর শুনে সেটা বন্ধ করার জন্য বলেছি। এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইয়েদ এ জেড মোর্শেদ আলী জানান, বালু উত্তোলনের কথা শুনেছি এবং সেটা বন্ধে পিংনা ইউপি চোয়ারম্যানকে বলা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ