Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

নির্বিচার নিধনে মঠবাড়িয়ায় অস্তিত্ব সঙ্কটে দেশি মাছ

| প্রকাশের সময় : ২০ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আবদুল হালিম দুলাল, মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) থেকে : দেশী মাছের ভান্ডার বলে খ্যাত উপকূলীয় মঠবাড়িয়া উপজেলায় চলছে মাছ নিধনের উৎসব। প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় অসাধু জেলেরা অবৈধ জাল, চাই ও কীট নাশক প্রয়োগে বেপরোয়াভাবে মাছ নিধন করায় উপজেলার জলাশয় গুলো এখন দেশী মাছ শূন্য হওয়ার পথে। পরিকল্পিতভাবে নিধন উৎসবে ছোট হয়ে আসছে দেশী মাছের তালিকা।
ভৌগলিকভ অবস্থানে নিচু ভূমির মঠবাড়িয়া উপজেলার অসংখ্য জলাশয়ে এক সময়ে দেশী মাছের অভয়ারণ্য ছিল। দিন দিন জলাশয় ভরাট করে আবাস গড়া এবং নিত্য নতুন পদ্ধতিতে মাছ নিধনের ফলে বিলুপ্ত হয়ে গেছে অনেক দেশী মাছ। শোল, গজার, কৈ, শিং, মাগুর, পুটি, পাবদা, টেংরা, বাইলা, টাকি, বাইন, বাশপাতা, রুই, কাতল, মৃগেল, ফলি, সর পুটি, বোয়াল, ভেটকি, দরগি, মলান্দি, চান্দাগুরা, ভেদী, বকথুরিনা, চিতল, উটকাল, নাপতা চিংড়ি, মলা, ভাটা, ফাইস্যা, বাতসী, চ্যালা, কাটালি, মৌ কাটালি, গোদা চিংড়ি ইত্যাদি দেশী মাছে সমৃদ্ধ জলাশয় গুলো এখন মাছ শূন্য হওয়ার পথে। অনেক দেশী মাছের নাম এখন শুধু বইয়ের পাতা আর মৎস্য অফিসের পাতায় আছে পানিতে নাই।
সরেজমিনে দেখা গেছে ধানক্ষেত, ডোবা, খাল ও পুকুরে ৪ সেন্টিমিটারের ছোট ফাঁসের বেআইনি বাঁধা (বেন্দি), বোডা, গড়া ও চরগড়া জালসহ মিহি সুতার কারেন্ট জাল এবং বুচনা চাই দিয়ে মাছ, মাছের রেণু ও ডিম নিধন করা হয়। উপজেলার বিভিন্ন খালে কয়েকশত বাঁধা ও গড়া জাল পাতা হয়। গড়া জালে শুধু মাছ নয় খালের পাড়ও ভেঙ্গে যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলেরা জানান, খালে জাল পাতার জন্য এলাকার প্রভাবশালীদের খুশি করতে হয়। বোডো ও কারেন্ট জাল এবং চাই পাতা হয় ধানক্ষেতে। আর ফসলের ক্ষেতে নির্বিচারে কীট নাশক ব্যবহারে মাছের বংশ বৃদ্ধি দারুনভাবে ভ্যহত হচ্ছে।
উপজেলার আমুয়া-মিরুখালী-ধানিসাফা-তুষখালী লাইনের খালে মিরুখালী গ্রামে আড়াআড়িভাবে অবৈধ গড়া জাল দিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে মাছ নিধন করে আসছে ওই গ্রামের জাকির হোসেন। অবৈধ গড়া জাল দিয়ে মাছ নিধনের বিষয় জানতে চাইলে জাকির হোসেন জানান, গত ৫/৬ বছর ধরে এভাবে মাছ ধরলেও প্রশাসন থেকে তাকে কোন সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়নি।
মা ইলিশ রক্ষায় অবরোধের সময় বলেশ্বর নদ তীরবর্তী এলাকায় উপজেলা মৎস্য দপ্তরের সহায়তায় উপজেলা প্রশাসন কয়েকটি অভিযান চালিয়ে কিছু জাল পোড়ায়। এর বাইরে দেশী মাছ রক্ষায় প্রশাসনের আর কোন তৎপরতা সারা বছরে দেখা যায় না।
এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মোজাম্মেল হকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এক মাস হয় তিনি মঠবাড়িয়ায় যোগ দিয়েছেন। খোজ খবর নিয়ে দেশী মাছ নিধন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে তিনি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ