পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রতিকুল আবহাওয়াসহ নানা সমস্যা মোকাবিলা করে শেষপর্যন্ত সারাদেশে শীতকালীন সবজির ফলন হয়েছে আশানুরূপ। মাঠ ভরে গেছে সবজিতে। এই তথ্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের। সুত্র জানায়, হাট-বাজারে প্রচুর সবজি উঠছে। মাঠে সবজির ফলন দেখে চাষীদের বুক ভরে যাচ্ছে।
কিন্তু পাইকারী ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতে গিয়ে দারুণ হতাশ হয়ে পড়ছেন চাষিরা। কারণ উপযুক্ত মূল্য পাচ্ছেন না। আবার ভোক্তারা কম মূল্যে সবজি ক্রয় করতে পারছেন না। ভরা মৌসুমে যতটা কম হওয়ার কথা ততটা নয়। মাঝখানে পকেট ভারী হচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীদের। তাছাড়া সরকারী উদ্যোগে বাজার ব্যবস্থাপনা, প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ ও আধুনিক কলাকৌশল, উন্নত বীজ সরবরাহ এবং চাষীদের জ্ঞান ও দক্ষতার বিষয়টি নিশ্চিত করার বিষয়টি বরাবরই অনুপস্থিত থাকছে। সবচেয়ে সমস্যা মাঠের মূল্য আর বাজার মূল্যের পার্থক্য। যার মূল দায়ী মধ্যস্বত্বভোগীরা। অথচ এর বিরুদ্ধে সরকারের কৃষি ও বিপনন অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা ন্যুনতম কোন ভুমিকা রাখছেন না বলে অভিযোগ।
কাগজ কলমে মনিটরিং ব্যবস্থা থাকলেও বাস্তবে নেই। সে কারণে উৎপাদক চাষী ও ভোক্তা উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন শুধু চলতি মৌসুমে নয়, প্রায় প্রতিটি মৌসুমে। এই একই চিত্র দেশের প্রায় সবখানেই। সবজি উৎপাদনের রেকর্ড সৃষ্টির যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উৎপাদক চাষী, মাঠপর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষক সংগঠকরা জানান, এই অবস্থা চলতে থাকলে সবজি বিপ্লব মাঠে মারা যাবে। মূলত বাজার নিয়ন্ত্রণ ও সংরক্ষণ ব্যবস্থার অভাবেই দেশের মোট সবজি চাহিদার প্রায় ৬৫ ভাগ সরবরাহকারী দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ সারাদেশের চাষীরা দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিষয়টির দিকে সরকারকে জরুরি নজর দেয়া দরকার বলে কৃষি বিশেষজ্ঞরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
সরেজমিনে সবজি উঃপাদনে রেকর্ড সৃষ্টির যশোরের বিভিন্ন মাঠ ঘুরে চাষীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ক্ষেত সবজিতে ভরে গেলেও চাষীদের মন ভরছে না। কারণ উপযুক্ত মূল্য পাচ্ছেন না তারা। সবজি চাষীদের কথা, কঠোর পরিশ্রম করে সবজি উৎপাদনের পর যদি উপযুক্ত মূল্য না পাওয়া যায় তাহলে কষ্ট পাই। সরকারের বাজার নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা না থাকায় মধ্যস্বত্বভোগীরা অতিরিক্ত টাকা পকেটে হাতিয়ে নেয়ার সুযোগ পাচ্ছে। তাছাড়া অনেক সময় সবজি সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়। বরবারই সবজি চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নানাভাবে। বাজারজাতকরণ এবং সংরক্ষণ ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে সবজি চাষীরা অনেকটাই পিছিয়ে থাকছেন। যশোরের মাঠে মাঠে এখন শীতকালীন সবজি আর সবজি। দেশের অন্যান্য রেকর্ড সৃষ্টির এলাকার মাঠ থেকে প্রতিদিনই প্রচুর সবজি বাজারে উঠছে। স্থানীয় চাহিদা পুরণ শেষে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে সবজির অভ্যন্তরীণ রফতানী হচ্ছে।
কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্র জানায়, সারাদেশে এবার শীতকালীন সবজির আবাদ হয়েছে প্রায় ৫লাখ হেক্টর জমিতে। সুত্র জানায়, চলতি মৌসুমের শুরুতে নিম্নচাপসহ প্রতিকুল আবহাওয়া, বীজ সমস্যা, উপকরণের মূল্যবৃদ্ধিসহ নানা সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা ছিল। শেষপর্যন্ত আবাদ ও উৎপাদন খুবই ভালো হয়েছে। তাছাড়া গতানুগতিক সবজি আবাদ থেকে চাষিরা বেরিয়ে এসেছেন। এখন জৈব সার ব্যবহার হচ্ছে সবজির জমিতে। কীটনাশকের ব্যবহারও কমে গেছে। যশোর, বরিশাল, মাগুরা, সাতক্ষীরা, মুন্সীগঞ্জ, ভোলা, নাটোর, ঈশ্বরদী, বগুড়া, রংপুর, রাজশাহী, নরসিংদী, কুমিল্লা ও ঝিনাইদহ রেকর্ড সৃষ্টি করলেও দেশের সবখানেই কমবেশী সবজি আবাদ ও উৎপাদন হয়। সবজি চাষি যশোরের বারীনগরের লিয়াকত আলী জানান, ফলন ভালো হলে কি হবে দাম পাচ্ছি না। সবজির মধু খেয়ে যাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। পালং শাক, শিম, বেগুন, মুলা, লাউ ও বাধা কফিসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজি বাজারে উঠার সাথে সাথে পাইকারী ব্যবসায়ীরা কম দামে কিনে ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে নিয়ে বেশী দামে বিক্রি করছে। মধ্যস্বত্বভোগীদের লাগাম টেনে ধরার কোনরূপ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সিন্ডিকেটের কারণে উৎপাদক চাষী ও ভোক্তা উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। মাঠের এককেজি শিম ২০/২৫টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৫০/৬০ টাকা। অন্যান্য সবজির ক্ষেত্রেও মাঠের মূল্যের সাথে বাজারের মূল্যের পার্থক্য গড়ে ২০ থেকে ৫০ পারসেন্ট বেশী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।