পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শুধু ফার্মগেটের শহীদ আনোয়ারা পার্কে নয়, রাজধানীর ভেতরে কোথাও ওরস করার অনুমতি দেবে না ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। গত বছর ফারমগেট কুতুববাগ দরবার শরীফ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে চূড়ান্ত আলোচনার সূত্র ধরেই এবছর কঠোর অবস্থান নিয়েছে ডিএনসিসি। বিষয়টি সংশিষ্টদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে ওরস উপলক্ষে নির্মাণাধীন তোরণগুলোও অপসারণ করা হয়েছে। ডিএনসিসি’র আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা অজিয়র রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, যানজটসহ জনভোগান্তির কথা চিন্তা করে রাজধানীর ফার্মগেটের ইন্দিরা রোড ও খামারবাড়ির মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত শহীদ আনোয়ারা পার্কে আর কোনও ওরস করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। এ কারণে এবছর ওই স্থানে আগামী জানুয়ারিতে তিনদিনের জন্য ওরস করার অনুমতি চাইলেও কুতুববাগ দরবার শরীফের কর্তৃপক্ষকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তারা আর কোনও অনুমতি পাবে না।
গত ২৫ বছর ধরে এই স্থানটিতে বার্ষিক ওরসের আয়োজন করে আসছে কুতুববাগ দরবার শরীফ। এতে ওই এলাকায় যানজটসহ জনসাধারণের ভোগান্তি দেখা দেয়। নষ্ট হয় পার্কটির পরিবেশ। কুতুববাগ দরবার শরীফের এই আয়োজনকে ঘিরে মাসব্যাপী চলে নানা কর্মযজ্ঞ। ওরসের জন্য সাজানো মঞ্চ, আলোকসজ্জা ও দান হিসেবে আসা পশু রাখার কারণে জনদুর্ভোগ বাড়ে। স্থানীয়দের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতবছর এই আয়োজনে হস্তক্ষেপ করেছিলেন ডিএনসিসির মরহুম মেয়র আনিসুল হক।
ফার্মগেটে ডিএনসিসির উদ্যোগে ভেঙ্গে ফেলা হয় কুতুববাগ দরবার শরীফের ওরস শরীফের জন্য নির্মাণাধীন তোরণ
ডিএনসিসি’র আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা অজিয়র রহমান বলেন, গত বছর তারা (কুতুববাগ দরবার শরীফ কর্তৃপক্ষ) মেয়র আনিসুল হকের কাছে লিখিত কমিটমেন্ট করেছে এবছর তারা তাদের ওরস ঢাকার বাইরে নিয়ে যাবে। সে কারণে তাদেরকে গতবছর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সেই কাগজ আমার কাছে আছে। কিন্তু তারা সেই কমিটমেন্ট মানেনি। আমরা কোনও অনুমতি দেইনি। এবছর থেকে আমাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে সেখানে ওরসের জন্য কোনও অনুমতি দেওয়া হবে না।
ডিএনসিসির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, সব দরবারের ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত প্রযোজ্য। তবে যদি নিজস্ব আসরে ছোটখাট কোনও ওরস হয় সেটা ভিন্ন।
ডিএনসিসি’র এই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, কুতুববাগ দরবার শরীফ থেকে তাদের বার্ষিক ওরসের জন্য আগামী বছরের জানুয়ারির ২৫ থেকে ২৭ তারিখ পর্যন্ত মাত্র তিন দিনের জন্য সিটি কর্পোরেশন থেকে অনুমতি চেয়েছে। কিন্তু তারা অনুষ্ঠানের প্রায় দেড় মাস আগ থেকেই এর কাজকর্ম শুরু করে দিয়েছে। আবার অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তারা মালামাল খুলে নেয় না। এই দীর্ঘসময় ফার্মগেট এলাকায় যানজট লেগেই থাকে। তাছাড়া পার্কের পরিবেশও নষ্ট হয়। ওরসের জন্য প্রায় মাসব্যাপী মঞ্চ সাজানোর কাজ, আলোকসজ্জা, এবং দান হিসাবে আসা পশু ইন্দিরা রোড ও খামারবাড়িতে রাখার কারণে প্রতিবছরই দুর্ভোগের অভিযোগ করে আসছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু সেসময় শর্ত সাপেক্ষে সংক্ষিপ্ত আকারে করার জন্য শুধু গত বছরের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। আর শর্ত দেওয়া হয়েছিল, ২০১৭ সাল থেকে এই ওরস ঢাকার বাইরে সরিয়ে নিতে হবে। তারা এ সিদ্ধান্তে তখন রাজিও হয়। এবারে লিখিত দলিল আছে। কিন্তু, ডিএনসিসির সেই সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে এবছরও ওই স্থানে বার্ষিক ওরসের আয়োজন করে কুতুববাগ দরবার শরীফ। এর পরেও ফার্মগেটের শহীদ আনোয়ারা পার্কে ওরসের জন্য মঞ্চ তৈরি ও তোরণ লাগানো হয়। এ কারণে তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল রোববার সকালে ডিএনসিসির অঞ্চল-৫ এর নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অজিয়র রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত ফার্মগেটের আনোয়ারা পার্ক ও এর আশেপাশে কুতুববাগ দরবার শরীফের জন্য নির্মাণাধীন অবৈধ তোরণগুলো ভোেঙ্গ দেন। এসময় দরবার শরীফের লোকজন ভ্রাম্যমাণ আদালতকে ওরসের মঞ্চ ও তোরণ না ভাঙার অনুরোধ করলেও কেউ বাধা দেয়নি। প্রথমে সব মালামাল জব্দ করলেও পরে সরিয়ে নেওয়ার শর্তে তা দরবার শরীফকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, কুতুববাগ ওরশ শরীফের সংশ্লিষ্ট নম্বরে যোগাযোগ করা হলে নাম পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি জানান, ঢাকার বাইরে ওরস করার ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেননি তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।