Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

নরসিংদীতে বাড়ছে ধর্ষণ- এবার শিকার তৃতীয় শ্রেণীর স্কুলছাত্রী ও গার্মেন্টস শ্রমিক

| প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : নরসিংদীতে অব্যাহত গতিতে বেড়ে চলছে ধর্ষণ। গত বুধবার একই দিনে নরসিংদীর মনোহরদী ও রায়পুরায় দুটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। কন্যার কাছে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে ৪৫ বছর বয়স্ক পিতা বাচ্চু মিয়ার ধর্ষণের শিকার হয়েছে শুভাগী নামে এক তৃতীয় শ্রেণীর স্কুলছাত্রী। এই ঘটনাটি ঘটেছে মনোহরদীর মন্ডলদিয়া গ্রামে। গতকাল রোববার তাকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়েছে। জানা গেছে একই গ্রামের সাদেক মিয়া নামে এক সিএনজি চালকের শিশু কন্যা শুভাগী একই গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীতে লেখাপড়া করে। পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী বাড়ী বাচ্চু মিয়ার ডিগ্রি পড়–য়া কন্যা রিনির নিকট প্রাইভেট পড়ে। বুধবার দিন স্কুল থেকে পরীক্ষা দিয়ে সে বিকেল ৪ টায় রিনির কাছে প্রাইভেট পড়তে যায়। সেখানে গিয়ে জানতে পারে যে, রিনি বাড়ীতে নেই। এ সময় রিনির পিতা বাচ্চু মিয়া তাকে ঘরে রেখে দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে সে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। অসুস্থ অবস্থায় সে বাড়ী ফিরে ঘটনাটি তার মাকে জানায়। মা ঘটনাটি মেয়ের পিতা সাদেক মিয়াকে জানালে সে ঘটনাটি থানা পুলিশকে অবহিত করে। পরে পুলিশ তাকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। দ্বিতীয় ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে একই দিন রায়পুরা উপজেলার চরমরজাল গ্রামে। প্রতিবেশীকে বিশ্বাস করতে গিয়ে রাতভর গণধর্ষণের শিকার হয়েছে শশী (ছদ্মনাম) নামে এক গার্মেন্টস শ্রমিক। ধর্ষকরা তাকে সারারাত পালাক্রমে ধর্ষণ করে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে রেখে চলে গেছে। গত বুধবার রায়পুরা উপজেলার চরমরজাল গ্রামে এই গণধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে। গতকাল রোববার তাকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়েছে। জানা গেছে রায়পুরা উপজেলার চরমরজাল গ্রামের রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়ার কন্যা এই শশী আক্তার সাভারের একটি গার্মেন্টেসে চাকুরী করে জীবিকা নির্বাহ করে। গত বুধবার ফ্যাক্টরী থেকে ছুটি নিয়ে বাসযোগে রাত ১০ টায় মরজাল বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে নামে। বাসস্ট্যান্ডে নেমেই শশী তাকে বাড়ীতে নিয়ে যাবার জন্য তার ভাইকে মোবাইলে ফোন করে। তার ভাই বাড়ী থেকে আসতে দেরি হওয়ায় সে বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকে। এ সময় একই গ্রামের বশিরের পুত্র জলিল আবু সায়েদের পুত্র ইমন ও খোরশেদের পুত্র নাজমুল তাকে বাসস্ট্যান্ডে দেখে জিজ্ঞেস করে কোথায় যাবে। শশী জানায় যে, তার ভাই রিক্সা নিয়ে আসছে সে বাড়ী যাবে। এতে তিন ধর্ষক তাকে বলে যে, তারাই রিক্সায় করে তাকে বাড়ীতে পৌছে দিবে। প্রতিবেশী হিসেবে শশী তাদের কথায় বিশ্বাস করে তাদের রিক্সায় উঠলে রিক্সাটি তাকে নিয়ে বাড়ীর দিকে রওনা দেয়। বাড়ীর কাছাকাছি গিয়ে রিক্সাটি ভিন্ন দিকে মোড় নিলে শশী তাদেরকে জিজ্ঞেস করে তাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তারা? এ সময় ৩ ধর্ষক তাকে কোন কথা না বলার জন্য ধমকে দেয়। এরপর তারা রিক্সাটি একটি সিমের মাচার কাছে নিয়ে শশীকে রিক্সা থেকে নামিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। চারজন তাকে ধর্ষণ করে ভোরে পাশ্ববর্তী বাড়ীর পাশে নিয়ে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যায়। এরপর জ্ঞান ফিরতে থাকলে সে গোঙাতে শুরু করে। এ সময় পার্শ¦বর্তী বাড়ীর লোকজন ঘটনা স্থলে গিয়ে শশীকে দেখে তার বাড়ীতে খবর দেয়। বাড়ী লোকজন এসে তাকে ঘটনা স্থল থেকে উদ্ধার করে পর দিন নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ব্যাপারে রায়পুরা থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ