Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রান্না হবে ৭১ মণ খাবার দেশের সবচেয়ে বড় ডেগ মানিকগঞ্জে

| প্রকাশের সময় : ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) থেকে মো. সোহেল রানা খান : দেখতে একটা ঘরের সমান, রান্নার জন্য ব্যবহৃত এ পাত্রের ভেতরে কিছু দিতে হলে ওঠতে হবে মই দিয়ে। আবার ডেগের ভেতর রান্না করার সময় নাড়াচাড়া করতে বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে মোটরের যন্ত্র। খাবার তুলতে ভেকুর মতো আরেকটি যন্ত্র বানানো হয়েছে। আবার ডেগটিতে রান্না করতে তৈরি করা হয়েছে ইটের তৈরি বিশেষ ধরনের চুলার। একটি ডেগ নিয়ে এতো সব আয়োজন।
বাংলাদেশের সব চেয়ে বড় ডেগ তৈরি হয়েছে মানিকগঞ্জে। যাতে রান্না করা যাবে ৭১ মণ খাবার। গত ১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর জৌনপুরী খলিফা শাহ সূফি হযরত মাওলানা মরহুম মাগফুর এখলাছ উদ্দীন কু: (রহ.)-এর প্রতিষ্ঠিত ৯৭তম বাৎসরিক ওরশ শরিফে মানিকগঞ্জের ঘিওরের জাবরা ইমামবাড়ি দরবার শরিফে প্রথমবারের মতো রান্না হয় এ ডেগটিতে। প্রতি বছর শুধুমাত্র ওরশে রান্না করতে তৈরি করা হয়েছে এত বড় ডেগটি। ডেগ তৈরি শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রতিদিন শত শত মানুষ ডেগটি দেখতে আসছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশের সব চেয়ে বড় প্রায় ৭০০ কেজি ওজনের এ ডেগটি তৈরি করতে যে টাকা খরচ হয়েছে তা দিয়েছে দরবারের ওরশ কমিটি, ভক্ত ও সাধারন জনগন। দুইজন মিস্ত্রী তিনমাস ধরে তৈরি করেছে এ বিশাল আকৃতির ডেগ।
জাবরা ইমাম বাড়ি দরবার শরিফের ওরশ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম জানায়, এটি বর্তমানে বাংলাদেশের সব চেয়ে বড় ডেগ। ডেগটির উচ্চতা সাড়ে ছয় ফুট। এর মুখের চারপাশের আয়তন ছয় ফুট দুই ইঞ্চি। আর মাঝামাঝি চারপাশের আয়তন সাত ফিট। ডেক এর ওপর দিকে মাঝ বরাবর চারকোণে চার পাশে রিং রয়েছে। যার প্রতিটির ওজন প্রায় চার কেজি করে। ডেকটি স্থানান্তর করার সময় এই রিং এর ভেতর বাঁশ জাতীয় কোনো কিছু দিয়ে ধরে সরাতে হয়। ডেকটি স্থানান্তরে পূর্ণবয়ষ্ক ৪০ থেকে ৪৫ জন লোক লাগে।
ওরশ কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. খোরশেদ জানায়, প্রতিদিন ডেগটি দেখতে শত শত মানুষ আসে।
ডেগটির ওজন প্রায় ৭০০ কেজি। ডেগ তৈরি করতে মিস্ত্রী আনা হয়েছে ঢাকা থেকে। দুইজন মিস্ত্রীর এটি তৈরি করতে সময় লেগেছে প্রায় তিন মাসের মতো। ডেগটি তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়েছে পাঁচ মিলি স্টিলের ১১৩ কেজি করে ওজনের পাঁচটি সিট, ঝালা দিতে লেগেছে ২০ কেজি রড, ডেগটির কানধিতে ব্যবহৃত হয়েছে ১৮ কেজির স্টিল, আর ডেগটির চার কোণে ১৬ কেজি কয়রা লাগানো রয়েছে।
ওরশ কমিটির সভাপতি ছিদ্দিকুর রহমান ছিদ্দিক জানায়, গত ১৪ সেপ্টেম্বর ওরশ উপলক্ষে ডেকটিতে প্রথম রান্না করা হয়। ২১ মণ চাল ও ডাল, তৈল, পানি ও মসলাসহ রান্না করা যাবে ৭১ মণ। ডেকটি তৈরি করা হয়েছে শুধুমাত্র ওরশের সময় তবারক রান্না করতে। ডেগটিতে ওরশের সময় খিচুড়ি রান্না করা হবে।
জাবরা ইমাম বাড়ি, দরবার শরিফের পীর সাহেব হযরত মাওলানা খাজা আবুল কালাম আজাদ চিশতি জানান, আধ্মাতিকভাবে ধ্যান করার সময় তিনি এ রকম একটি বড় ডেগ তৈরির নির্দেশনা পান। পরে ভারত উপমহাদেশের আওলিয়া খাজা মইনুদ্দিন হাসান চিশতির মাজার শরিফের খাদেম হজরত খাজা আহম্মেদ আলী চিশতির নিদের্শক্রমে এই ডেগ তৈরি করা হয়। এটি বাংলাদেশের সব চেয়ে বড় ডেগ। এত বড় ডেগ আর বাংলাদেশে নেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ