Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিম চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন মিরসরাইয়ের কৃষক

| প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) থেকে আমিনুল হক : মিরসরাই উপজেলার সব গ্রামে এখন কৃষকরা শিম চাষের ব্যস্ত সময় পার করছে। এখানকার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা সহস্রাধিক একর জমিতে খামার পদ্ধতিতে কিংবা রাস্তার ধারে, কেউ পতিত জমিতে শিম আবাদ করছেন। অল্প সময়ে অধিক লাভ হওয়াতে বর্তমানে অনেকেই শিম চাষে ঝুঁকছেন। গ্রামীণ পথের দু’পাশের জমিতে শোভা পায় অগনন শিমের বাগান। তাই অগ্রহায়ণের প্রথম দিকে বিস্তীর্ণ জমিতে শিমের সবুজ সমারোহে সাদা-বেগুনি ফুলে ছেয়ে গেছে। মিরসরাইয়ের পথে-প্রান্তরে কোনো কোনো এলাকায় কঁচি শিমের গন্ধ ভাসছে বাতাসে।
মিরসরাইয়ের বিভিন্ন গ্রামের চাষিরা জানান, গত বছর শিমের ফলন বৃদ্ধি ও দাম ভালো পাওয়ায় এবার যেন চাষিদের উৎসাহের শেষ নেই। সারাদিন খামারে পরিচর্যায় ব্যস্ত তারা। এখানকার প্রায় সব জমিই এখন শিম চাষ হচ্ছে। পরিত্যক্ত, অপেক্ষাকৃত নিচু জমিতে মাঁচা তুলে খামরা পদ্ধতিতে চলছে শিম চাষ। এ ছাড়া এখানে অন্যান্য সময় মৌসুমি সবজির চাষ করা হয়। মিরসরাই উপজেলার হাইতকান্দি গ্রামের শিমচাষি আবুল হোসেন জানান, তিনি প্রায় ১৫ বছর যাবত শিমসহ বিভিন্ন সবজির চাষ করছেন। এবছর দুই কানি জমিতে শিমের চাষ করেছেন। এতে প্রায় এক লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। আশা করছেন তিন লাখ টাকার উপরে বিক্রি হবে তার। লাভ থাকবে দুই লাখ টাকারও বেশি। তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে ফুল থেকে শিম আসতে শুরু হয়েছে। পৌষের প্রথম থেকে মাঘের শেষ পর্যন্ত শিমের পরিপূর্ণ মৌসুম থাকবে। বর্তমানে অনেক কৃষকই শিম তুলতে শুরু করেছেন। পোকা মাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় এবার শিমের বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।
ওয়াহেদপুর গ্রামের শিমচাষি হারুনুর রশিদ ও তানজিলা বেগম বলেন, শিমের ফলন এ বছর ভালো হবে বলে মনে হচ্ছে। গত বছর লাভ হওয়াতে এই বার আরো বেশি জমিতে শিমের আবাদ করেছেন তারা। উৎপাদন খরচ পুষিয়ে লাভবান হবেন এমনটাই আশা তাদের। মিরসরাই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের চাষিরা আরো জানান, শিম চাষের জন্য প্রথমে জমি নির্বাচনের মাধ্যমে বীজ রোপণের জন্য উঁচু করে মাটি প্রস্তুত করতে হয়। পরিমিত সার ও অন্যান্য উপাদান প্রয়োগের মাধ্যমে সময়মত বীজ রোপণ করতে হয়। এ ছাড়া বাঁশ দিয়ে মাঁচা তৈরি করা হয়। মাচার উপরে তর তর করে বেড়ে উঠে শিমের লতা। সাধারণত দুই-তিন মাসের মধ্যেই লতায় ফুল আসে। বর্তমানে গাছে ফুল থেকে শিম ধরা শুরু হয়েছে। অনেকেই আবার সেই শিম হাটে তুলতে আরম্ভ করেছেন। স্থানীয় ভাষায় ক্ষেতের প্রথম শিম তোলাকে ‘হালভাঙা’ বলে। এ সময় রীতিমতো উৎসবের সৃষ্টি হয় শিম তোলাকে কেন্দ্র করে। মিরসরাই উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা বুলবুল আহম্মেদ জানান, মিরসরাইয়ে সব গ্রামে সবসমই শিমের জন্য বিখ্যাত। আমরা চাষিদের বিভিন্ন রোগবালাই সম্পর্কে ধারণা ও পরামর্শমূলক সহায়তা দিয়ে থাকি। আর চলতি বছর আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় শিমের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ