পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কাল বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি
স্টাফ রিপোর্টার : দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদান কাজির গরুর মতো কেতাবে আছে গোয়ালে নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, কুইক রেন্টালের নামে যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলা হয় এটা সেই কাজির গরুর মতো কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই। মুলত বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়েনি। পকেট ভারী হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ট আত্মীয়স্বজনদের। গতকাল (সোমবার) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন “বিএনপি আমলেও দেশে কোন বিদ্যুৎ ছিল না। সে সময় দেশ অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকত। তাদের রেখে যাওয়া ১৬শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ থেকে আমরা ১৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছি।” প্রধানমন্ত্রী যেভাবে ডাহা মিথ্যাচার করেন তা দেশবাসীর কাছে নতুন নয়। তিনি একগুঁয়ে ঝগড়াটে বালিকাস্বভাবসূলভ মারমুখি কথাবার্তা বলেন। মানুষ প্রকাশ্যে কিছু না বললেও সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের এ ধরনের আচরণে মনে মনে মানুষ ছি ছি করে। আওয়ামী লীগ ২০০১ সালে রেখে গিয়েছিল ১৮০০ মেগওয়াট বিদ্যুৎ, বিএনপির ৫ বছরে সেটা ৩২০০ মেগওয়াটে উন্নীত করা হয়। তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলতে চাই এত বিদ্যুৎ উৎপাদন করলেন সে বিদ্যুৎ গেল কোথাও। এ শীতের দিনেও শহরে দিনে তিন চার বার লোডশেডিং হয়। গ্রামেতো বিদ্যুৎ যায় না আসে। মফস্বল শহর এবং গ্রাম অন্ধকারে নিমজ্জিত।
রিজভী বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সময় দুর্নীতি পাগলা ঘোড়ার মতো বেসামাল হয়ে পড়েছে। বিশ্ব মিডিয়ায় শিরোনাম হয়েছে। আর এটি হতে গিয়ে সরকারের অনেক উর্ধ্বতন ব্যক্তিকে নাকে খত দিতে হয়েছে । বিগত নয় বছরে রাজকোষসহ সরকারি ব্যাংক লুট হয়েছে, শেয়ারবাজার, বীমা ও বেসরকারি ব্যাংকগুলো ক্ষমতাসীনরা লুটে নেওয়ায় অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে। লুটের কারণে আজকেও একটি বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তন দেখতে পেলাম। বিএনপির এই নেতা বলেন, পদ্মা সেতুর কথা মানুষ ভুলে যায়নি। কারণ সড়ক মহাসড়কের বেহাল বেহাল দশায় মানুষকে প্রতিদিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হচ্ছে। উন্নয়নের নামে দেশে যে হরিলুট চলছে তা মানুষ হিসেব রাখছে। এরপরেও নির্লজ্জের মতো কথা বলেন সরকার প্রধান থেকে সরকারের মন্ত্রীরা। নিজেদের কলঙ্ক তিলক ঢাকতে তারা জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে অলীক কাব্য কথা রচনা করেন। হাজার মিথ্যা দিয়ে নিজেদের সত্য অপকর্ম ঢাকতে পারবেন না। রাষ্ট্রশক্তিকে নিজেদের সুবিধামত ব্যবহার করে সেটি প্রয়োগ করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং সিনিয়র ভাইসচেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে। যা পরিকল্পিত ও নীলনকশারই অংশ। মিথ্যা অপপ্রচারের গোলকধাঁধা সৃষ্টি করে মানুষকে বোকা বানানো যাবে না।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, যারা বজ্জাত, খুনি, বদমাইশ, দাম্বিক, ক্ষমতাদর্পী ও অপব্যাহারকারী, সন্ত্রাসী, মানুষের হক নষ্টকারী, দাগি অপরাধি, রাজনৈতিক টাউট, নির্লজ্জ মিথ্যুকসহ কেউ কখনোই সময়েরর নির্মমতা ও প্রকৃতির প্রতিশোধ থেকে রেহাই পায় না। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে দিয়ে বিরোধী শক্তিকে কন্ট্রাক্ট গুম ও কিলিং চালিয়েও সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। জনগন এখন জেগে উঠেছে। উদ্বেলিত মিছিলে মিছিলে শৃঙ্খলমুক্ত করবেই তারা।
এদিকে রংপুরে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। তিনি বলেন, আগামী ২১ ডিসেম্বর রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অথচ এখনও সেখানে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি ইসি। আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও সমর্থকদের আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িক চলছে। কিন্তু কমিশন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে তেমন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
রিজভী বলেন, গত রোববার আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে নামমাত্র ৫ হাজার টাকা জরিমানা করলেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে তেমন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা ইসি। ক্ষমতাসীন জোটের লোকেরা নির্বাচনী মাঠে সকল আচরণবিধি ও নিয়মকে পদদলিত করে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সেখানে এখনও আতংকের পরিবেশ বিরাজ করলেও ইসি ভোটারদের নিরাপদে ভোট দেয়া এবং আস্থার পরিবেশ তৈরি করতে পারে নি। নির্বাচন কমিশিন আদৌ সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবশে চায় কি না এ প্রশ্নও উঠেছে ভোটারদের মধ্যে। তিনি আবারও নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবশে তৈরির জন্য ইসির প্রতি জোর দাবি জানান। একই সাথে কমিশন যেন চাকুরি বাচাঁনোর তাগিদে কাজ না করে জাতির স্বার্থে কাজ করে সেই আহ্বানও জানান।
রংপুর সিটি নির্বাচন পরিচালনায় কমিটি গঠন:
দলের ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান মাহমুদ টুককে আহŸায়ক ও সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুকে সদস্য সচিব করে রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করেছে বিএনপি। কমিটির সদস্যরা হলেন- রংপুর বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুজ্জামান, জাহাঙ্গীর আলম, ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুল খালেক। এছাড়া রংপুর জেলা ও মহানগর, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও, কুড়িগ্রাম, সৈয়দপুর, নীলফামারীর সভাপতিরা পদাধিকার বলে কমিটির সদস্য থাকবেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার বিএনপির প্রতিবাদ:
চাল-ডাল-পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি, সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভায় হোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। আগামীকাল বুধবার দেশজুড়ে প্রতিবাদ প্রতিবাদ সভা বা প্রতিবাদ মিছিল করবে বলে গতকাল এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, চাল-ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যম্ল্যূ বৃদ্ধি, সিটি করপোরেশনসহ পৌরসভার ট্যাক্স এবং বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী ১৩ ডিসেম্বর বুধবার ঢাকাসহ সারাদেশে প্রতিবাদ কর্মসূচি আমরা ঘোষণা করছি। তবে রংপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকা এর আওতার বাইরে থাকবে। ####
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।