Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাঙ্গুনিয়ায় বেপরোয়া বালু উত্তোলন

| প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

শত কোটি টাকার ব্লক স্থাপন উন্নয়ন প্রকল্প হুমকির মুখে
নুরুল আবছার চৌধুরী, রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) : রাঙ্গুনিয়ার কয়েকটি খাল ও কর্ণফুলী নদী থেকে বেপরোয়া বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। অনিয়ন্ত্রিত বালি উত্তোলনে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশংকা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে বাড়িঘর ও শতশত একর ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। নদী ভাঙ্গনরোধে শত কোটি টাকার ব্লক স্থাপন উন্নয়ন প্রকল্প হুমকির মুখে পড়েছে। উপজেলা প্রশাসন মাঝে মাঝে অভিযান পরিচালনা করে ড্রেজার মেশিন ও পাইপ আগুনে পুড়িয়ে দিলেও বালি উত্তোলন বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছে।
নৌকা চালক মো. জসিম জানান, অব্যাহত দখল আর বেপরোয়া বালি উত্তোলনে দেশের ঐতিহ্যের অংশিদার প্রবাহমান স্রোতস্বীনি কর্ণফুলী নদী ক্রমেই মরা নদীতে পরিণত হচ্ছে। অবৈধ দখলের আগ্রাসনে মরণদশা যেন ঘনিয়ে আসছে কর্ণফুলীর। বালিদস্যুরা গ্রাস করে চলেছে নদীর তলদেশের মাটি আর বালি।
উপজেলার চন্দ্রঘোনার ফেরীঘাট, কদমতলী, কোদালা, রাইখালী, মরিয়মনগর, শিলক, বেতাগী, সরফভাটা গোডাউন এলাকায় কর্নফুলী নদীতে চলছে বালি ও মাটি উত্তোলন। ইছামতি খাল, কোদালা খাল, শিলক খাল, পারুয়া সোনায়ছড়ি খালে প্রায় ২১টি ষ্পটে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রতিদিন শতশত যানবাহন দিয়ে লাখ লাখ ঘনফুট বালি পাচার হচ্ছে।
শিলকের কৃষক মো. রহিম উদ্দিন জানান, সরকারী অনুুমতি না থাকায় বছরে লাখক্ষ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। শিলক খাল ও কোদালা খালে কয়েকটি ষ্পটে সরকারী ইজারা দেয়া হয়েছে। ইজারা এলাকার বাইরে একাধিক ষ্পটে বালি উত্তোলন করায় ভাঙ্গন তীব্র হচ্ছে। একাধিক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট নদী ও খাল থেকে অবৈধভাবে উত্তোলন করে চলেছে। এখানে জমজমাট হয়ে উঠেছে অবৈধ বালি ব্যবসা।
প্রকাশ্যে কর্ণফুলী নদী ও খালের তলদেশ থেকে বেপরোয়া ভাবে উত্তোলন করা হচ্ছে বালি আর মাটি। ব্যাপকহারে তোলা বালিতে কর্নফুলীর তীরে তীরে বিশাল স্তুপে মজুদ গড়ে তোলা হয়। কোথাও কোথাও দীর্ঘ পাইপ টেনে ড্রেজার মেশিনে নদীর বালি ও মাটি সরবরাহ করে জমি ও বাড়ি ভিটার ভরাট কাজ চলে। চন্দ্রঘোনা কদমতলী হিন্দুপাড়া গ্রাম, পারুয়া ডিসি সড়ক, দক্ষিণ রাজানগর, রাজানগর বগাবিল, ইসলামপুর, কালিন্দিরানী সড়কের বিভিন্ন স্থানে জমি ও পার দখল করে বড় বড় বালির পাহাড় গড়ে তোলা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের বার বার অভিযানেও খাল ও নদীতে বালি উত্তোলন প্রতিরোধ হচ্ছে না।
কৃষকরা জানান, সরকার দলীয় নেতা কর্মী পরিচয়ে প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের অবৈধ বালি ব্যবসায় আপত্তি করতে সাহস করেনা কেউ। নির্বিচারে বালি উত্তোলনে নদীভাঙ্গন অব্যাহত আছে। এতে কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা ও গতিপথ সুরক্ষায় নদীশাসন কার্যক্রম নেই। কর্নফুলী নদীর তলদেশ এখন বালির খনিতে পরিনত হয়েছে। পাহাড়ি ঢল ও বর্ষার পানি নেমে আসায় বালি প্রতি বছর কর্নফুলী নদীর তলদেশে জমা হয়। বালি দস্যুরা লুটে পুটে নিচ্ছে এ সম্পদ। সরকার বঞ্চিত হচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আয় থেকে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ