Inqilab Logo

সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

আদমদীঘির শহীদ চার মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতিস্তম্ভ ৪৬ বছরেও নির্মিত হয়নি

| প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আদমদীঘি (বগুড়া) থেকে মো. মনসুর আলী : বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা সদরে শ্বশান ঘাটিতে পাক-হানাদার বাহিনীর নির্মমতার শিকার চার শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামে স্মৃস্তিমম্ভ নির্মান স্বাধীনতার ৪৬ বছরেও হয়নি। উপজেলার বিভিন্ন খাতে উন্নয়ন করা হলেও এই শ্বশানঘাটিটি শুধু ভিক্তিপ্রস্তর ফলক তৈরি করে রাখা হয়। যাতে লেখা নাম পর্যন্ত মুছে গিয়ে অবহেলায় আর অযতেœ কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এই চার শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি রক্ষাার জন্য জরুরি ভিক্তিতে স্মৃস্তিমম্ভটি নির্মাণের জন্য উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাসহ স্বাধীনতার পক্ষের মানুষরা আহŸান জানান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনতার জন্য সেদিন অনেকেই মহান মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি কেউবা সহযোগিতার মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেন। সারা দেশের ন্যায় পশ্চিম বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের পাঁচ শতাধিকেরও অধিক সে সময়ের টকবগে যুবকরা মহান এই মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। দীর্ঘ ৯ মাস পাক-হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদরদের সাথে গেরিলা ও সম্মুখযুদ্ধে অনেকে শহীদ হন আবার অনেক যোদ্ধা পঙ্গুত্ব বরণ করেন। এই উপজেলায় ২৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এদের মধ্যে আদমদীঘি সদরে পাক-হানাদার বাহিনী ও রাজাকারদের হাতে কোমারপুর গ্রামের অবদুুল জলিল আকন্দ, চকসোনার গ্রামের আলতাফ হোসেন, কাঞ্চনপুর গ্রামের মনসুরুল হক টুলু ও আব্দুস ছাত্তার আটক হন। এরপর পাক-হানাদার বাহিনী বীর এই চার মুক্তিযোদ্ধাকে আদমদীঘি থানায় নিয়ে খেজুরগাছের কাঁটাওয়ালা ডাল ও রাইফেলের বাটসহ বিভিন্নভাবে মধ্যযুগীয় কায়দায় চারদিন ধরে প্রকাশ্যে শারীরিক নির্যাতন করার পর ১৯৭১ সালের ১১ নভেম্বর আদমদীঘির খাড়ির ব্রিজ সংলগ্ন শ্বশানঘাটিতে নিয়ে দিনের বেলা প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে ফেলে রেখে যায়। এই নির্মমতার দৃশ্য আজো প্রত্যক্ষদর্শিদের মতো অনেকের মনে তাড়া করে বেড়ায়। এই চার বীর শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নামে শ্বশানঘাটিতে একটি স্মৃতিস্তমম্ব নির্মাণের দাবি মুক্তিযোদ্ধাদের। ১৯৯৬ সালে উপজেলা পরিষদ থেকে এখানে স্মৃতিস্তমম্ভ নির্মাণে জন্য ভিত্তিপ্রস্তর ও ফলক তৈরি করে রাখা হলেও আজও সেই আশা পূরণ হয়নি। অযতেœ আর অবহেলায় কালের সাক্ষী হয়ে পড়ে রয়েছে ফলকটি। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলহাজ আবদুল হামিদ, ডেপুটি কমান্ডার আবির উদ্দিন, সহকারি কমান্ডার সোলায়মান আলী, মজিবর রহমান দুঃখ প্রকাশ করে জানান, সরকার বিভিন্ন খাতে উন্নয়ন করলেও অবহেলিত ও অরক্ষিত রয়েছে এই চার বীর শহীদের স্থানটি। তারা অবিলম্বে এখানে একটি স্মৃতিস্তমম্ভ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ