সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে নজির হোসেন নজু : সৈয়দপুরসহ নীলফামারী জেলার বিভিন্ন স্থানে শীত জেঁকে বসেছে। হঠাৎ ঘন কুয়াশায় সূর্যের দেখা না পাওয়ায় গরম কাপড়ের অভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ছিন্নমূল ও দরিদ্র শ্রেণীর মানুষের। হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা সারা নীলফামারী জেলার অভাবী মানুষজন শীত নিবারণের জন্য খড়কুটো জ্বালিয়ে অব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দেখা গেছে, হিমালয়ের খুব কাছের এলাকা সৈয়দপুর। আর এ কারণে জেঁকে বসেছে শীত। গত শীত মৌসুমের তুলনায় এবারের পুরাতন গরম কাপড়ের মূল্য তুলনামূলক বেশি হওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে নিন্ম আয়ের মানুষ। এরপরও এক বেলা খেয়ে না খেয়েও তারা ক্রয় করছেন শীতবস্ত্র। হিমালয় থেকে ধেয়ে আসা হিমেল হাওয়ায় শীতের তীব্রতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। সন্ধ্যার পর থেকে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা এ শহরের মানুষ যবুথবু হয়ে পড়েছেন। রাতের শেষ প্রহরে শিশির পড়ছে বৃষ্টির মতো।
গতকাল সৈয়দপুর শহরের পুরাতন শীতবস্ত্রের বাজারে গরম কাপড় ক্রয় করতে আসা আশা নামের এক এনজিও কর্মকর্তা জানান, অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ বেশি গরিব ও অসহায়। সরকার পৃথিবীর উন্নত ধনী দেশ থেকে পুরাতন গরম কাপড় আমদানি শুরু করে। মধ্যবিত্ত ও নিন্মমধ্যবিত্তসহ সকল শ্রেণীর মানুষই যাতে কম মূল্যে গরম কাপড় ক্রয় করতে পারে, সে জন্য সরকারের ওই মহতি উদ্যোগ। গতদিনে যে সোয়েটারের মূল্য ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। সে সোয়েটার বর্তমানে ক্রয় করতে হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা দরে। পুরুষ মানুষের একটি জ্যাকেট বা একটি ভালো সোয়েটারের মূল্য ছিল ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা। কিন্তু তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। ওই এনজিও কর্মকর্তা বলেন, শীত বেশি পড়ায় শীতবস্ত্র ব্যবসায়ীরা বর্তমান আমলে লাভ কম হওয়ার কথা বলে সাধারণ ক্রেতাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা।
শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে সৈয়দপুরসহ সারা নীলফামারী জেলার সর্বস্তরের মানুষের একমাত্র অবলম্বন হলো ফুটপাথের পুরাতন শীতবস্ত্র। কিন্তু এবারে তুলনামূলক মূল্য বেশি হওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের জনপদ। শহরের মানুষ অভিযোগ করে বলেন, এ দেশের রাজনৈতিক কর্ণধাররা ক্ষমতা হাসিলেই ব্যস্ত। মধ্যবিত্ত, নিন্মমধ্যবিত্ত ও সর্বস্তরের মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ভোট প্রাপ্তির আশায় গেলেও ক্ষুধার্তদের পেটে অন্য ও শীতে কাতর মানুষের পাশে কেউই দাঁড়ায় না। মানুষ মানুষের জন্য এবং অভাবগ্রস্ত মানুষের কাছে লোভ-লালসা ভুলে দাঁড়ালেই এ দেশ সন্ত্রাসীর নয়, সোনার দেশে রূপান্তরিত হতে সময় লাগবে না বলে সৈয়দপুর শহরের সর্বস্তরের মানুষ এ প্রতিবেদকের কাছে মতামত ব্যক্ত করেন।