Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ছাগলনাইয়ায় ভ্যানচালক জানু হত্যা মামলা স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিকের স্বীকারোক্তি

| প্রকাশের সময় : ১১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ছাগলনাইয়া (ফেনী) উপজেলা সংবাদদাতা : মিরসরাইয়ের করেরহাট ইউনিয়নের জোরারগঞ্জ থানাধীন করেরহাট-রামগড় সড়কের নয়টিলা মাজারের পাঁচশত গজ পূর্বপাশে সরকারি আগর বাগান এলাকায় পাহাড়ে মৃতদেহ আংশিক পচন ও পোকা ধরা ভ্যানচালক জয়নাল আবেদীন প্রকাশ জানুর লাশ গত ২৬ নভেম্বর উদ্ধার করে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ। জানু ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার ছাগলনাইয়া পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নুরুল আলমের ছেলে। সে দুই ছেলে ও দুই মেয়ের জনক ছিল। তার স্ত্রী বিবি আয়েশা বেগম স্বামীর অগোচরে পাশ্ববর্তী উত্তর মন্দিয়া গ্রামের মৃত শফিউল্ল্যাহর ছেলে বাসচালক সাহাব উদ্দীন ড্রাইভারের সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। এরপর আয়েশার স্বামী যখন ভ্যান নিয়ে জীবিকার তাগিদে সকাল সকাল বেরিয়ে পড়ে, তখন সাহাব উদ্দীন সুযোগ বুঝে বসতঘরে এসে পরকীয়া করত, নয়তো দীর্ঘ সময় নানা রসাত্মক কথা বলে মুঠোফোনে সময় কাটাত।
গত ২৩ নভেম্বর জানু রামগড় তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার জন্য ছাগলনাইয়া বাজারে আসে। এ সময় জানুর সাথে দেখা হয় সাহাব উদ্দীনের, তখন সাহাব উদ্দীন জানুর সাথে তারও এক আত্মীয়ের বাড়ি যাবে বলে জানায়। তখন দুইজন একসাথে করেরহাট এলাকার নয়টিলা মাজার পর্যন্ত আসে। এ সময় সাহাব উদ্দীন জানুকে জানায় যে, তার এক আত্মীয়ের বাড়ি রয়েছে পাহাড়ের উপর। তারপর মাজারের পাশের আগর বাগানে জানুকে নিয়ে যায় সাহাব উদ্দীন। এ সময় জানুর সাথে থাকা দা বহন করতে অসুবিধা হচ্ছে অজুহাতে সাহাব উদ্দীন ইতোমধ্যে দা নিয়ে নেয় এবং পাহাড়ে উঠার পর সেই দা দিয়েই সাহাব উদ্দীন জানুকে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যার পর জানুর স্ত্রী আয়েশাকে মুঠোফোনে সাহাব উদ্দীন জানুকে উপরে পাঠিয়ে দিয়েছে বলে নিশ্চিত করেন। তিনি আরো বলেন, স্বামীকে হত্যার সাথে তার এবং সাহাব উদ্দীনের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তা যেন পুলিশ কোনোভাবে সন্দেহ না করে সে জন্য সে সাহাব উদ্দীনের পরামর্শে অজ্ঞাতদের আসামি করে জোরারগঞ্জ থানায় মামলা করে। এই ঘটনায় দীর্ঘদিন পুলিশ অনুসন্ধ্যান চালিয়ে গত ৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় জানুর স্ত্রী আয়েশাকে এবং কথিত প্রেমিক সাহাব উদ্দীনকে ছাগলনাইয়া বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।
৯ ডিসেম্বর (শনিবার) সকালে চট্টগ্রাম আদালতে স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করে ৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে তারা। জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুল কবির জানান, গত ২৬ নভেম্বর জোরারগঞ্জ থানাধীন নয়টিলা মাজারের উপরের একটি সড়ক থেকে ভ্যানচালক জয়নাল আবেদীন জানুর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে নিহতের স্ত্রী বিবি আয়েশা অজ্ঞাত ব্যক্তিবর্গকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করে। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি অবলম্বন করে বিবি আয়েশার কথিত প্রেমিক সাহাব উদ্দীনকে গ্রেফতার করে। পরে সাহাব উদ্দীনের জবানবন্দী অনুসারে জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী বিবি আয়েশাকে গ্রেফতার করে। শনিবার তাদের চট্টগ্রাম আদালতের প্রেরণ করা হলে হত্যার কথা স্বীকার করে তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ