Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সৌদিতে খালেদা জিয়ার সম্পদ প্রধানমন্ত্রী তথ্যের ভিত্তিতে বলেছেন, প্রমাণ আছে আওয়ামী লীগ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মধ্যপ্রাচ্যের সউদী আরবসহ বিভিন্ন দেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও তার পরিবার ১২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে-এই অভিযোগ-বক্তব্যে অটল আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে কথা বলেছেন। সত্য বলার সৎ সাহস শেখ হাসিনার আছে। তথ্য প্রমাণ ছাড়া শেখ হাসিনা কোন কথা বলেননি। তিনি যা বলেছেন জেনে শুনেই বলেছেন এবং এর তথ্য প্রমান আছে বলেই বলেছেন। এসময় এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নিতে দুদকের প্রতিও আহŸান জানন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী।
গতকাল শনিবার আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় দলের এই প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন।
কম্বোডিয়া সফর নিয়ে গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি নেত্রীর সউদী আরবে সম্পদ থাকার খবর বিদেশি সংবাদ মাধ্যমে দেখার কথা জানিয়েছিলেন। এর পরদিন গত শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ ‘বানোয়াট ও ভিত্তিহীন’ দাবি করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশে করে বলেছিলেন, ‘এই মানহানিকর তথ্য প্রচারের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন, বক্তব্য প্রত্যাহার করুন। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আমরা বাধ্য হব।’ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য কল্পিত পাচারকৃত সম্পদের বর্ণনা এবং কল্পিত সংবাদ মাধ্যমে তা প্রকাশের কল্পিত কাহিনী প্রকাশ সর্বৈব মিথ্যা, বানোয়াট, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন দাবি করেন তিনি। দেশের ‘সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রীর’ ভাবমূর্তি বিনষ্ট করা এবং তাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করাই এর উদ্দেশ্য বলে অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং তার পরিবারের সদস্যদের ‘সউদী আরবের সম্পদ’ নিয়ে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহনের আহŸান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, জিয়া পরিবারের সউদী আরবে অর্থ পাচার ও বাংলাদেশের জনগনের সঙ্গে প্রতারণা করে যে অর্থ বিদেশে পাচার করেছে এই গুলোর তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আমরা দুদককে আহŸান জানাচ্ছি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, সত্য যতই অপ্রিয় হোক, যতই কঠিন হোক সত্যের বন্যা অপ্রতিরোদ্ধ। যে সত্য দিবালোকের মত পরিস্কার, তা চাপা দিয়ে কারও কোন লাভ নাই।
কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সততা বাংলাদেশে সর্বজন স্বীকৃত ও প্রতিষ্ঠিত। বাংলাদেশের বাইরেও তার সততা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এবং সর্বশেষ ১৭৩টি দেশের মধ্যে সেরা সৎ ব্যক্তির মধ্যে শেখ হাসিনার নাম আসার পর থেকে বাংলাদেশে বিএনপির নেতৃত্বে একটা মহলের গাত্রদাহ শুরু হয়ে গেছে এবং তারা তাদের মিথ্যাচারে ভাঙ্গা রেকর্ড নতুনভাবে বাজাঁনো শুরু করেছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেব, আপনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্ত্যব্যের প্রতিক্রিয়ায় যে বিষয়টি এনেছেন, সেটা কখনো কখনো মনে হয় শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্ঠা করেছেন। আবার কখনো কখনো মনে হয় সত্যকে পাশ কাটিয়ে যেতে চাইছেন। অন্ধকারে ঢিল ছোড়ার চেষ্টা করছেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা পরিস্কারভাবে বলতে চাই সত্য বলার সৎ সাহস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আছে। তথ্য প্রমাণ ছাড়া শেখ হাসিনা কোন কথা বলেননি। তিনি যা বলেছেন জেনে শুনেই বলেছেন এবং এর তথ্য প্রমান আছে বলেই বলেছেন।
তিনি বলেন, আমি বিএনপির মহাসচিবকে বলবো, আপনি যেভাবে শেখ হাসিনার বক্তব্যকে খন্ডন করতে গিয়ে যেই অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করেছেন এটাই আপনাদের আসল চরিত্রের বহি:প্রকাশ।
কাদের বলেন, এখন তো তারা বুঝে ফেলেছে ইতোমধ্যে দুর্নীতির মামলা ঝুলছে, আরো দুর্নীতির মামলা আসছে। নির্বাচন সামনে তারা এখন হাবুডুবু খাচ্ছে হতাশার সাগরে। তাই এখন আবোল তাবোল বলা শুরু করেছে। পাপ কখনও বাপকে ছাড়ে না। অপরাধ করলে তার বিচার হবেই।
এ সময় ২০০৫ সালে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে করা সংবাদ সম্মেলনের কথা তুলে ধরে ওবায়দুর কাদের বলেন, আপনাদের কি মনে আছে, আমি যখন ২০০৫ সালে পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সংবাদ সম্মেলন করে বিমানবন্দরে ৩০০টি স্যুটকেসের কথা বলেছিলাম। এই কাহিনী কোন কল্প কাহিনী নয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ক্ষমা তো আপনারা চাইবেন। এই পর্যন্ত ক্ষমা চাওয়ার কোন দৃষ্টান্ত নেই। প্রমাণিত সত্য আমেরিকা, সিঙ্গাপুরের আদালত তারপরও আপনারা কোন দিন জাতির কাছে ক্ষমা চাননি। এগুলো কি করে অস্বীকার করবেন।
পদ্মা সেতু ও মেট্রো রেলে দুর্নীতি হয়েছে বিএনপির এমন অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, যদি প্রমাণ করতে না পারেন যে পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেলে দুর্নীতি হয়েছে, তাহলে আপনাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে।”
কাদের বলেন, শেখ হাসিনা সরকার আজকে সারা দুনিয়ায় একটা প্রতিষ্ঠিত সরকার, যে সরকারের প্রকল্পগুলো দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশে আজকে বাস্তবায়িত হচ্ছে। পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যংক সরে গিয়েছিল সেই বিশ্বব্যাংক আজ পদ্মা সেতু নিয়ে বলছে যে শতভাগ সচ্ছতার ভিক্তিতে পদ্মা সেতু হচ্ছে।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, এই পদ্মা সেতু আর মেট্রো রেল নিয়ে যারা এসব কথা বলছে তাদেরকেই বলি প্রমাণ করুন যে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে। তা না হলে আপনাদের মামলার মুখোমুখি হতে হবে। এর জন্য আপনাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। আর প্রমাণ করতে পারলে আদালত আমরা ফেস করবো।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, ত্রাণ ও দূর্যোগ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী।



 

Show all comments
  • মো. মহিউদ্দিন ১০ ডিসেম্বর, ২০১৭, ৫:৪৭ এএম says : 0
    সময় হলে আরো কত জনের সম্পদের খবর বের হবে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আওয়ামী লীগ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ