পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কল্পিত ও মিথ্যা বক্তব্য প্রত্যাহার এবং ক্ষমা না চাইলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল (শুক্রবার) সকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কল্পিত পাচারকৃত সম্পদের বর্ণনা এবং কল্পিত সংবাদ মাধ্যমে তা প্রকাশের কল্পিত কাহিনী প্রকাশ করেছেন। যা সর্বৈব মিথ্যা, বানোয়াট, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশে তিনি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাদের পরিবারকে হেয় প্রতিপন্ন করে ভাবমূর্তি বিনষ্ট করবার অপচেষ্টা থেকে বিরত থাকুন। বেআইনী মিথ্যা তথ্য প্রচার বন্ধ করুন এবং এই মানহানীকর মিথ্যা তথ্য প্রচারের জন্যে ক্ষমা প্রর্থনা করুন। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা করতে আমরা বাধ্য হব। আইনানুগ কী ব্যবস্থার কথা বিএনপি ভাবছে জানতে চাইলে মহাসচিব বলেন, আইনানুগ ব্যবস্থা বলতে যা বোঝায় তাই বুঝিয়েছি। আমরা বলেছি যে ক্ষমা প্রার্থনা করতে এবং বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। তা যদি না করেন তাহলে আইনের যে বিধান আছে, সে বিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
সেই ব্যবস্থা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কিনা- এমন প্রশ্নে ফখরুল বলেন, আমাদের বক্তব্য তো প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বিরুদ্ধে। নামও বলেছি। আমার বক্তব্যের শুরুতেই বলেছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, অনৈতিক ও অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী আওয়ামী সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে কম্বোডিয়া সফরের উপরে সংবাদ সম্মেলনে কাল্পনিক সব দূর্নীতির কল্পকাহিনী বর্ণনা করেছে। এর মূল উদ্দেশ্য দেশের সব চেয়ে জনপ্রিয় নেতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তাঁর পরিবারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করা এবং রাজনৈতিকভাবে তাকে জনগণের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা মাত্র। আমরা অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে স্পষ্ট করে বলতে চাই এই সব কল্পিত তথ্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। কল্পিত এই সব তথ্যের উপর ভিত্তি করে দায়িত্বশীল গণমাধ্যম স্বাভাবিকভাবেই তা প্রকাশ করেনি। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী কানাডা ভিত্তিক একটি কথিত টেলিভিশন চ্যানেলের বরাত দিয়ে সামাজিক মাধ্যমের ততোধিক অপরিচিত কয়েকটি অনলাইন মাধ্যমে এই মিথ্যা তথ্য রটনা করা হয়েছে, যে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তার সন্তানদের কল্পিত দুর্নীতির অর্জিত সম্পদ সৌউদি আরবের একটি শপিংমল ‘আল আরাফা’ এবং কাতারে বাণিজ্যিক ভবন ‘তিনারাট’ এ বিনিয়োগ করেছেন এবং তারাই এই সম্পদের মালিক। আরো বলেছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো কাতারে ‘ইকরা’ নামে একটি বহুতল ভবনের মালিক। আরবসহ বারোটি দেশে জিয়া পরিবারের বারো বিলিয়ন ডলারের সম্পদ রয়েছে। বাংলাদেশী টাকায় এই পরিমান অর্থ প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা। তিনি অভিযোগ করেছেন মূলধারার বেশির ভাগ গণমাধ্যমে এই মিথ্যা তথ্য প্রকাশিত হয়নি। সেই কারণে তিনি শিষ্টাচার বিবর্জিত অশালীন ভাষায় গণমাধ্যমকে তিরষ্কার করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই ধরনের মিথ্যা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট বক্তব্য শুধু অশালীন নয় এটা বেআইনী ও শাস্তিযোগ্য। তিনি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বা তার পরিবারের কারো বিরুদ্ধে বিদেশে সম্পদ পাচার অথবা বিনিয়োগ কোন অভিযোগ আজ পর্যন্ত প্রমাণিত হয়নি। অবৈধ্য ফখরুদ্দিন ও মাঈনউদ্দিন সরকার এবং শেখ হাসিনার অনৈতিক অবৈধ্য সরকার তন্ন তন্ন করে সারা বিশ্বে খোঁজ করেও আজ পর্যন্ত কোন সম্পদের অস্তিত্ব পায়নি।
বিএনপি নেতা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপি’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার কণিষ্ঠপুত্র আরাফাত রহমান কোকোর বিরুদ্ধে দূর্নীতি এবং সম্পদের কল্প কাহিনী তৈরী করে জোর করে গণমাধ্যমকে দিয়ে তা প্রচারের অপচেষ্টা শুধুমাত্র শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরায়নতা, রাজনৈতিক সংকির্ণতা, অন্তসারশূণ্যতা ও দেউলিয়াপনাই প্রমাণ করে। প্রধানমন্ত্রীর এই ধরণের কুরুচিপূর্ন বক্তব্য শুধু রাজনীতিকে কলুষিত করছে না ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছ রাজনীতিবিদের সম্পকে ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টি করবে।
ভূয়া সোর্সের মাধ্যমে মিথ্যা সংবাদ ছড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, কয়েকটি গণমাধ্যমে জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে যে সম্পদের কল্পিত কাহিনী প্রচার করা হচ্ছে সেগুলোতে উল্লেখিত উৎসই ভুল। প্রতিবেদনে সংবাদের উৎস বলা হয়েছিল, আরবভিত্তিক টিভি চ্যানেলগুলোকে উদ্ধৃত করে ‘গেøাবাল ইন্টেলিজেন্স নেটওয়ার্ক (জিআইএন)’ এবং ‘কানাডার টিভি চ্যানেল দ্য ন্যাশনাল’ এই খবর দিয়েছে। ইন্টারনেট ঘেঁটে ‘দ্য নাশনাল’ নামে কানাডার কোনো টিভি চ্যানেলের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। কানাডার রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেলে দ্য নাশনাল নামে একটি নিউজ গ্রোগ্রামের অস্তিত্ব পাওয়া যায়, তবে সেখানে সার্চ দিয়ে খালেদা সংক্রান্ত কোনো খবর পাওয়া যায়নি। আর গেøাবাল ইন্টেলিজেন্স নেটওয়ার্ক নামে কোনো গণমাধ্যম ইন্টারনেটে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
প্রধানমন্ত্রীকে সতর্ক করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কাচের ঘরে বসে অন্যের ঘরে ঢিল ছুড়বেন না। উন্নয়ন, মেগা প্রজেক্টের নামে যে মেগা লুট করছেন তা জনগণ জানেন। পদ্মা সেতু প্রকল্প, রূপপুর আনবিক শক্তি প্রকল্প, পায়রা বন্দর, এক্সপ্রেসওয়ে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ভিওআইপি, স্যটেলাইট স্টেশন, প্রতিটি সেতু, সড়ক, মহাসড়ক, প্রতিটি আন্তর্জাতিক টেন্ডারে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার লুটে যে অভিযোগ উঠছে জনগণ তা হিসাব নিচ্ছে। এদেশের পত্র-পত্রিকা, বিদেশের পত্র-পত্রিকা আপনাদের দলের মন্ত্রী, নেতা ও পরিবারে সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ পেতে শুরু করেছে। কানাডার বেগম পাড়া, বৃটেন, আমেরিকা, মালোশিয়া, সিঙ্গাপুর, বেলারুস, সুইচ ব্যাংক, পানামা অবশোর ইনভেষ্টম্যান্ট তালিকায় আপনাদের অনেকের নাম উঠে আসছে। ফ্লোরিডা, ওয়াশিংটন ডিসি, সিএটল বাফেলোসহ আমেরিকা ও কানাডাসহ ব্যায়বহুল শহরগুলোতে কাদের সন্তানদের এবং পরিবারে সদস্যদের নামে বাড়ি ও সম্পদ কেনা হয়েছে তার হিসেব জনগণ রাখছে। তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে এই দুর্নীতির মাধ্যমে। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা কারা লোপাট করেছে জনগণ তারও হিসাব রাখছে। দুই বার শেয়ার মার্কেট লুট করে অসংখ্য সাধারণ বিনিযোগকারীদের নিঃস্ব করা হয়েছে। সমাজের প্রতিটি রন্ধে দুর্নীতির পাকা ব্যবস্থা করা হয়েছে। জমি, বসতবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শাসকদের লোকেরা দখল করছে প্রতিদিন। সাধরণ মানুষসহ রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজের সদস্যদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করা হচ্ছে। দেশ, জাতিকে জিম্মি করে দুর্নীতির এই অভিযান আপনারাই চালিয়ে যাচ্ছেন। আপনাদের মুখে সুনীতি, সুশাসন, সততা শুধু বেমানান নয় হাস্যকর।
এসময় অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।