পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কমছে মাছ, মুরগি, ডিম ও সবজির দাম
গত বছরের এই সময়ের তিনগুণ
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : শতক পেরিয়েছে পেঁয়াজের দাম। রাজধানীর খুচরা বাজারে কয়েকদিনের ব্যবধানে ২০-২৫ টাকা বেড়ে কেজি প্রতি ১২০-১২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে দেশি পেঁয়াজ। একই সঙ্গে ১০ টাকা বেড়ে কেজি প্রতি ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। মাছ, মুরগি, ডিম ও সবজির দাম কমায় ক্রেতাদের কিছুটা স্বস্তি এলেও তা আবার দূর হয়ে যাচ্ছে পেঁয়াজ কিনতে গিয়ে। অথচ গত বছর এ সময়ে পেঁয়াজের দাম ছিল এখনকার তিন ভাগের এক ভাগ। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তালিকা অনুযায়ী, গত বছর এ সময়ে ভারতীয় ও দেশি পেঁয়াজের কেজিপ্রতি দাম ছিল ২৫ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে। অর্থাৎ প্রতি কেজি পেঁয়াজ কিনতে এখন নগরবাসীর খরচ বেড়েছে তিন গুণ বা তারও বেশি।
এদিকে পাইকারি বাজারে সব ধরনের পেঁয়াজের দর কমেছে বলে দাবি করেছেন বিক্রেতারা। মূলত দেশীয় পেঁয়াজের মজুদ কমে যাওয়ার পাশাপাশি এখনো নতুন পেঁয়াজ বাজারে না আসায় বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে বলে দাবি করেছেন বিক্রেতারা। সেই সঙ্গে দাম বাড়ায় ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি কমেছে বলেও জানান তারা। আগামী দু-এক সপ্তাহের মধ্যে দেশি নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসলে দাম কিছুটা কমবে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। অন্যদিকে পেঁয়াজ কিনতে এসে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। তারা বলেন, হুট করে এভাবে দাম বাড়ায় পেঁয়াজ কিনতে সাহস পাচ্ছি না আমরা। মনে হচ্ছে সিন্ডিকেট করেই বাড়ানো হয়েছে পেঁয়াজের দাম।
এদিকে হিলি সংবাদদাতা সূত্রে জানা যায়, দু’দিনের ব্যবধানে হিলি স্থলবন্দরের পাইকারি বাজারে প্রকারভেদে আবারো দাম বেড়েছে কেজিতে ১৫ থেকে ১৮ টাকা। আমদানি কম হওয়ায় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে বলছেন ব্যবসায়ীরা। আর হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বেড়ে ওঠায় বিপাকে পড়েছেন পেঁয়াজ কিনতে আসা পাইকারেরা। এখন পেঁয়াজের মৌসুম। দেশি পেঁয়াজ বাজারে উঠতে শুরু করলেও দাম কমছে না ভারতীয় পেঁয়াজের। দু’দিন আগে ভারতীয় যে পেঁয়াজ হিলি বন্দরে বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, সে পেঁয়াজই এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৪ টাকায়। আর চাহিদার তুলনায় আমদানি কম হওয়ায় ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে, বলছেন আমদানিকারক সাইফুল ইসলাম। বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানিতে ভারত এলসির বিপরীতে টনপ্রতি কয়েক দফায় দাম বাড়িয়ে সর্বশেষ ২৩ নভেম্বর ৮৫২ ডলার নির্ধারণ করে। সে দামেই পেঁয়াজ আমদানি করে আসছেন আমদানিকারকেরা। এদিকে হিলি স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, গত তিন দিনে দুই হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে এ বন্দর দিয়ে। পাইকাররা জানান, পেঁয়াজের বাজার ঘণ্টায় ঘণ্টায় বাড়ছে। দাম নামার কোনো লক্ষণ পাচ্ছি না। পেঁয়াজের দাম আগুনের মত বাড়ছে। এসময় তারা অভিযোগ করেন, মাল প্রচুর আছে কিন্তু সাপ্লাই দিচ্ছে কম।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১২০-১২৫ টাকা এবং ভারতীয় দুই ধরনের পেঁয়াজ ৮০-৯০ টাকা চাইছেন খুচরা বিক্রেতারা। পাইকারি দোকানে দেশি পেঁয়াজ প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) ৫৫০ টাকা চাওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ প্রতি কেজি ১১০ টাকা। অন্যদিকে ভারতীয় নতুন মৌসুমের পেঁয়াজের পাইকারি দর কেজিপ্রতি ৭৪ টাকা ও পুরোনোটি ৮০ টাকা। ভারত রফতানির ক্ষেত্রে প্রতি টন পেঁয়াজের ন্যূনতম দর ৮৫০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করেছে গত নভেম্বর মাসে। এটা না হয় ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ। কিন্তু দেশি পেঁয়াজের দাম এত বেশি কেন? জবাবে কারওয়ান বাজারের পাইকারি বিক্রেতা মো. আবদুল হক বলেন, এখন মৌসুমের শেষ সময়। পেঁয়াজের মজুত ফুরিয়ে এসেছে। হাটে এক মণ পেঁয়াজ উঠলে তা কিনতে ফড়িয়া যায় ১০ জন। দর-কষাকষিতে দাম বেড়ে যায়। বছরের এ সময়ে সাধারণত নতুন মৌসুমের মুড়িকাটা পেঁয়াজ ওঠে। দুই মাসের চাহিদা পূরণ হয় এ পেঁয়াজ দিয়েই। কিন্তু এবার সে পেঁয়াজের দেখা মিলছে না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার বৃষ্টিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ পিছিয়েছে। শান্তিনগরে বাজারের পেঁয়াজ বিক্রিতা সালাউদ্দিন বলেন, এক কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ১২০ টাকা। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ৮৫ টাকা।
পেঁয়াজ ও চাল বাদে অন্যান্য পণ্যের দামে কিছু স্বস্তি এসেছে। সবজির দামও কিছু কমেছে। বিভিন্ন ধরনের সবজি পাওয়া যাচ্ছে প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। মাসখানেক আগেও যা ৫০ থেকে ৮০ টাকা ছিল। সম্প্রতি ফার্মের মুরগির ডিম ও মুরগির দামও কমেছে। বড় বাজারে প্রতি ডজন ফার্মের লাল ডিম ৭০-৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অবশ্য হাঁসের ডিমের হালি ৪৫ টাকা। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১২০ টাকা হয়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে ডিম ও মুরগির সরবরাহ বেশ ভালো। এ ছাড়া খাল-বিল শুকাতে শুরু করায় দেশি মাছ ধরা পড়ছে। এতে দামও কিছুটা কমেছে। বাজারে দেশি কই, শিং, মাগুর, শোল, পুঁটি, মেনি, খলিশা, টাকি, ফলি ইত্যাদি মাছ পাওয়া যাচ্ছে। অবশ্য বাজার ও আকারভেদে দামের পার্থক্য আছে। দেশি কই আকারে বড় হলে দেড় হাজার টাকা কেজি হাঁকছেন বিক্রেতারা। কিন্তু ছোট কই ৪০০ টাকা। বড় আকারের শোল মাছের কেজি ৬০০ টাকা চাইছেন বিক্রেতারা। তবে মাঝারি শোলের কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা। ঢাকার বাজারে আমন মৌসুমের নতুন চাল এখনো উঠতে শুরু করেনি। দামও আগের মতোই আছে। প্রতি কেজি মোটা চাল ৪৪-৪৫ টাকা, মাঝারি চাল ৫৩-৫৫ টাকা এবং সরু মিনিকেট চাল মানভেদে ৫৮-৬০ টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।