Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সপ্তাহাধিককালেও আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হচ্ছে না

| প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আড়ালেই রয়ে যাচ্ছে ঘুষ কেলেঙ্কারির মূল হোতারা
সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : ঘুষের এক লাখ টাকা সহ নরসিংদী জেলা হাসপাতালের দুই কর্মচারীকে হাতেনাতে গ্রেফতার করার সপ্তাহকাল অতিক্রান্ত হলেও এখনো ঘুষ কেলেঙ্কারী আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হচ্ছে না। ঘটনার সপ্তাহাধিককাল গত হয়েছে মামলা তদন্তের জন্য দুদকের পক্ষ থেকে এখনো কোন তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হচ্ছে না। গ্রেফতারকৃত দুই কর্মচারীকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করা হচ্ছে না আদালতে। মুখোশ উন্মোচন করা হচ্ছে না ঘুষ কেলেংকারীর পিছনের রাঘব বোয়ালদের। যার ফলে নরসিংদী জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের একটি বড় ধরনের দুর্নীতির ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যাবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গ্রেফতারকৃত প্রধান করনিক আশরাফুল ইসলাম পাঠান ও প্যাথলজি টেকনোলজিস্ট রেজাউল করিম নরসিংদী কারাগারে বসে বসে আইনের হাত থেকে বাঁচার ফোঁকড় খুজছে। জিজ্ঞাসাবাদের হাত থেকে তাদের বাঁচানোর জন্য তদবীর চালাচ্ছেন নরসিংদীর সিভিল সার্জন ডা. সুলতানা রাজিয়া। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীরা জানিয়েছে, সিভিল সার্জন ডা. সুলতানা রাজিয়া একজন হামবড়াবাদী, স্বেচ্ছাচারী কর্মকর্তা। তিনি হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে শুরু করে সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে দুর্ব্যবহার করে থাকেন। তিনি হাসপাতালগুলোতে গিয়ে রোগী দেখার সময় ডাক্তারদেরকে ডেকে নিয়ে গল্প গুজবে মেতে থাকতে চান। গল্প গুজবের সময় তিনি নিজের আত্মপ্রশংসা বা গুনগান করতে থাকেন। ডাক্তাররা এসব পছন্দ করেননা বলে তিনি তাদের সমালোচনা করেন। তিনি নরসিংদী সিভিল সার্জন হিসেবে যোগদানের পর থেকে হাসপাতালগুলোতে ওষুধের ব্যাপক সঙ্কট বিরাজ করছে। তিনি সরকারী নিয়ম ভঙ্গ করে তার সরকারী অফিস কক্ষটি উন্নতমানের চেয়ার-টেবিলসহ বিভিন্ন দামী আসবাবপত্র দিয়ে সাজিয়েছেন। যা তার পদমর্যাদার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি দারোয়ান মাজহারুল ইসলামসহ অফিসের ৪ জন কর্মচারীকে তার ব্যক্তিগত কাজে বাসায় নিয়ে কাজ করাচ্ছেন। কিছুদিন পূর্বে মাজহারুল ইসলাম নামে এক দারোয়ানকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। সিভিল সার্জনের এই অপমান ও অত্যাচর সইতে না পেরে মাজহারুল সিভিল সার্জনের বাসায় গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। বিষয়টি যাতে সাংবাদিকরা জানতে না পারে সে জন্যে সিভিল সার্জনের নির্দেশে ভর্তি রেজিস্ট্রারে পুলিশ কেইস লেখা হয়নি। পরদিন সকাল বেলা তাকে অমানবিকভাবে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়া হয়। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য সিভিল সার্জন ডা. সুলতানা রাজিয়া মাজহারুল ইসলামকে নরসিংদী থেকে মনোহরদী হাসপাতালে বদলী করেন। এছাড়াও মালি ওমর আলী ও সুইপার ফেরদৌসি বেগম নামে দুই জনকে তার ব্যক্তিগত কর্মচারী হিসেবে বাড়ীর কাজে খাটাচ্ছেন। এসব ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা. সুলতানা রাজিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। এছাড়া এক লাখ টাকা ঘুষ সহ দুদকের হাতে হাতেনাতে ধরা পড়া জেলা হাসপাতালের প্রধান করনিক আশরাফুল ইসলাম পাঠনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। তবে রেজাউল করিমকে বরখাস্ত করা হয়েছে কি না তা তিনি জানাতে পারেননি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ