Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গফরগাঁও মুক্ত দিবস আজ

| প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে স্বাধীনতার ডাক দিলে বাংলার ঘরে ঘরে শুরু হয় স্বাধীনতাকামী মানুষের সার্বিক যুদ্ধের প্রস্তুতি। তখন পিছিয়ে থাকেনি গফরগাঁওয়ের মুক্তিকামী মানুষ। এখানকার আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য আবুল হাসেম, শহীদ বেলাল আহম্মেদসহ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধাদের সংগঠিত করে যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু হয়। ঘরে ঘরে উৎকলিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্রখচিত লাল-সবুজের পতাকা। প্রত্যেক ইউনিয়নে গঠন করা হয় সংগ্রাম পরিষদ ও মুক্তিযুদ্ধা ট্রেনিং সেন্টার। ১৭ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯টায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দু’টি জঙ্গী বিমান গফরগাঁও বাজারের নিরীহ মানুষের উপর হামলা চালায়। একঘণ্টার ব্যবধানে দুটি হামলায় বোমা নিক্ষেপসহ বিমান থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে মেশিনগানের গুলি বর্ষণ করা হয়। রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন বহু নিরপরাধ মানুষ। এ হামলায় বহু ঘরবাড়ি, দোকানপাট পুড়ে ছাই হয়ে যায়। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত পঙ্গু হয়েছিলেন ওই হামলায় আহত কয়েক শত নিরীহ মানুষ। এ ঘটনার পর থেকে সর্বাত্মক যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন গফরগাঁও উপজেলার মুক্তিকামী মানুষ।
অন্যদিকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আল-বদর আল-শামছ ও রাজাকার বাহিনীর সহায়তায় গণহত্যা নারী-ধর্ষণ লুণ্ঠন ও নির্যাতন চলতে থাকে। গফরগাঁও এলাকা ছিল মুক্তিযুদ্ধের ১১ নং সেক্টরের অধীন। হানাদার বাহিনীর সঙ্গে গফরগাঁওয়ে বেশ কয়েকটি স্থানে সম্মুখ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এর মধ্যে রসূলপুর ইউনিয়নের আমলীতলা, চরআলগী, কন্যামন্ডল, বাশিয়া, বাঘেরগাঁও দক্ষিণপাড়া, সীমাখালী, নিগুয়ারীর যুদ্ধে পৃথক পৃথকভাবে নেতৃত্ব দেন ইকবাল-ই-আলম (কামাল), সিরাজুল হক, মফিজ আহম্মেদ, আনছার উদ্দিন মাস্টার, হালিম উদ্দিন, চাঁন মিয়া ও মুনজুর কাদেরসহ আরো কয়েকজন বীর মুক্তিযুদ্ধা। এসব যুদ্ধে বহু পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকার নিহত হয়। শহীদ হন সেনাবাহিনীর (অব) মমতাজ উদ্দিন, জহিরুল হক ও বেলাল আহমেদসহ র্অধশতাধিক মুক্তিযুদ্ধা। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী চর ষোলহাসিয়ার লঞ্চঘাটের ব্রহ্মপুত্র নদে নোঙর করা একটি পরিত্যক্ত লঞ্চে নিরীহ মানুষদের ধরে এনে লঞ্চের কার্ণিসে দাঁড় করিয়ে তিন হাজারের বেশি মুক্তিযুদ্ধা ও সাধারণ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
এভাবে এখানে হত্যাকান্ডের অন্যতম বধ্যভ‚মিতে পরিণত হয়। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই মুক্তিবাহিনী ও ভারতের মিত্রবাহিনীর চ‚ড়ান্ত হামলার মুখে পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী পশ্চাৎপসারণ করতে থাকলে দেশ চ‚ড়ান্ত বিজয়ের পথে এগিয়ে যায়। হানাদারবাহিনী চরম পরিণতির আশঙ্কা করে পালিয়ে যায়। ৯ ডিসেম্বর ভোরে কিছু লোক ভয়ে বাজারে ঢুকে টের পায় পাকবাহিনী আর নেই। মুক্ত হয় গফরগাঁও।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ