বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নজরুল ইসলাম মল্লিক, অভয়নগর (যশোরে) থেকে : যশোরের অভয়নগর উপজেলায় বিএডিসি ডিলারদের মাথায় হাত উঠেছে। কৃষকেরা ঝুঁকে পড়েছে হাইব্রিড ধান চাষে। হাইব্রিড বীজের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কোম্পানাীর নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রিয় হচ্ছে বিভিন্ন কোম্পানীর হাইব্রিড বীজ।
জানা গেছে, বিএডিসি (বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন বিভাগ) ২৮ জাতের প্রত্যায়িত, মানঘোষিত ও ভিত্তি বীজ প্রস্তুত করে প্রত্যেক উপজেলায় ডিলারদের মাঝে নির্দিষ্ট দামে সরবরাহ করলেও গত সপ্তাহে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে হাইব্রিড হীরা-১, হীরা-২, হীরা-৪, এসএল-এইট, স্পাহানী, সাথীসহ ১ কেজি প্যাকেটের বীজ ২২০ টাকা থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে যা বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকায়। অভয়নগরে ১৮ জন বিএডিসি’র ডিলার রয়েছে। প্রায় ৪০ টন বীজ উত্তোলন করেছেন এসব ডিলারা। ডিলার মুজিবর রহমান জানান, বিএডিসির বীজ খুব কম বিক্রি হচ্ছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, যেখানে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ টন হাইব্রিড বীজ বিক্রয় হচ্ছে সেখানে এক মাসে বিএডিসি’র বিআর ২৮ জাতের বীজ বিক্রি হয়েছে ১৫ টন। প্রত্যেক ডিলারের ঘরে বিপুল পরিমান বিএডিসির বীজ মজুদ রয়েছে।
বীজ ক্রয় করতে আসা দেয়াপাড়া গ্রামের কৃষক শওকত হোসেন (৪৮) জানান, আমি গত বছর বিএডিসির ২৮ জাতের ধান চাষ করে লোকসানে পড়েছিলাম। ধানে প্রচুর পরিমানে চিটে হয়েছিল। তাছাড়া রোগে অনেক ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তাই এবছর হাইব্রিড ধান চাষ করবো। মহাকাল গ্রামের কৃষক আব্দুল করিম (৫৫) জানান, হাইব্রিড ধানে ফলন বেশি তাই বিএডিসির ২৮ বাদ দিয়ে এ বছর হাইব্রিড ধান চাষ করবো। পৌরসভা এলাকার ধোপাদী গ্রামের শহিদুল ইসলাম জানান, হাইব্রিড ধান খুব ভাল ফলন দেয়। বিএডিসির ২৮ রোপনে বিভিন্ন রোগ বালাই দেখা দেয়। বীজ বিক্রেতারা হাইব্রিড ধান দাম বাড়িয়ে দিয়েছে, তারা গুদামে মাল লুকিয়ে রেখে বেশি দামে বিক্রয় করা জন্য ।
এদিকে হাইব্রড বীজের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। কোম্পানীর নির্ধারিত দামের চেয়েও বেশি দামে বিক্র হচ্ছে হাইব্রিড বীজ। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, হাইব্রিড হিরা ধানের এক কেজির প্যাকেটে দাম লেখা আছে ২৮০ টাকা। অথচ বাজরে ওই ধান বিক্রয় হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ডিলার জানান, হীরা ধানের বীজ আমাদের এলাকায় সরবরাহ নেই অন্য এলাকা থেকে বীজ বিক্রেতারা বিভিন্ন ভাবে যোগাড় করছে। তাই দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে।
বীজের দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকালে নওয়াপাড়া বাজারে পরিদর্শনে আসেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোর জেলার উপপরিচালক কাজী হাবিবুর রহমান ও জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা ইমদাদ হোসেন। তারা বিভিন্ন ডিলারের দোকানে যেয়ে খোঁজ-খরব নেন। এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম সামদানী ও সহকারি কর্মকর্তা পরিতোষ কুমার। বাজার পরিদর্শন শেষে কর্মকর্তা পরিতোষ কুমার সাংবাদিদের জানান, কৃষকেরা নিজ উদ্যোগে হাইব্রিড ধান বীজ ক্রয় করছে। আমারা বীজ কিনতে আসা কৃষকদের হাইব্রিড বীজ কিনতে নিরুৎসায়িত করেছি। বাজারে কোথাও বেশি দামে বীজ বিক্রি হচ্ছে না। এ ব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা কৃষি অফিসার গোলাম সামদানি জানান, বীজের দাম বাড়িয়েছে পরিবেশকরা। দ্রæত সময়ের মধ্যে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে ওই সকল পরিবেশকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ধানের বøাষ্ট পোকা আক্রমন রোধে কৃষকদের সচেতন করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, দুইদিন আগে উপজেলার বারান্দি গ্রামে মাঠ দিবস করে কৃষকদের জানিয়েছি, বীজ ফেলার আগে কার্বোনডাজিন গ্রæপের ওষুধ প্রতি কেজিতে ২ গ্রাম করে মিশিয়ে ১২ ঘণ্টা রেখে দেয়ার পর বীজতলায় ফেললে বøাষ্ট রোগের আক্রমণ রোধ করা সম্ভব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।