Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাঙ্গুনিয়ায় অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলন পরিবেশ বিপর্যয়ের শঙ্কা

| প্রকাশের সময় : ৮ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) থেকে নুরুল আবছার চেীধুরী : রাঙ্গুনিয়ার কয়েকটি খাল ও নদী থেকে বেপরোয়া বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। অনিয়ন্ত্রিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে বাড়িঘর ও শত শত একর ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। নদীভাঙন রোধে শত কোটি টাকার বøক স্থাপন উন্নয়ন প্রকল্প হুমকির মুখে পড়েছে। বালু লুটপাট সিন্ডিকেট সদস্যদের কারণে সরকারের মহতী উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বসেছে। উপজেলা প্রশাসন মাঝেমধ্যে অভিযান চালিয়ে ড্রেজার মেশিন ও পাইপ নষ্ট ও আগুনে পুড়িয়ে দিলেও বালু উত্তোলন বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছে।
নৌকাচালক জসিম জানান, অব্যাহত দখল আর বেপরোয়া বালু উত্তোলনে দেশের ঐতিহ্যের অংশীদার প্রবহমান স্রোতস্বিনী কর্ণফুলী নদীটি ক্রমেই মরা নদীতে পরিণত হচ্ছে। অবৈধ দখলের আগ্রাসনে মরণদশা যেন ঘনিয়ে আসছে কর্ণফুলীর। ভ‚মিদস্যুরা গ্রাস করে চলেছে নদীটির তলদেশের মাটি আর বালু।
উপজেলার চন্দ্রঘোনার ফেরিঘাট, কদমতলী, কোদালা, রাইখালী, মরিয়মনগর, শিলক, বেতাগী, সরফভাটা গোডাউন এলাকায় কর্ণফুলী নদীতে চলছে বালু ও মাটি উত্তোলনের বেপরোয়া উৎসব। ইছামতি খাল, কোদালা খাল, শিলক খাল, পারুয়া সোনাইছড়ি খালে প্রায় ২১টি স্পটে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রতিদিন শত শত যানবাহন দিয়ে লাখ লাখ ঘনফুট বালু পাচার হচ্ছে।
শিলকের কৃষক মো. রহিম উদ্দিন জানান, সরকারি অনুুমতি না থাকায় বছরে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। শিলক খাল ও কোদালা খালে কয়েকটি স্পটে সরকারি ইজারা দেয়া হয়েছে। ইজারা এলাকার বাইরে একাধিক স্পটে বালু উত্তোলন করায় ভাঙন তীব্র হচ্ছে। একাধিক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট নদী ও খাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে চলেছে। এখানে জমজমাট হয়ে উঠেছে অবৈধ বালু ব্যবসা। প্রকাশ্যে কর্ণফুলী নদী ও খালের তলদেশ থেকে বেপরোয়াভাবে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু আর মাটি। ব্যাপকহারে তোলা বালুতে কর্ণফুলীর তীরে তীরে বিশাল স্ত‚পে মজুদ গড়ে তোলা হয়। কোথাও কোথাও দীর্ঘ পাইপ টেনে ড্রেজার মেশিনে নদীর বালু ও মাটি সরবরাহ করে জমি ও বাড়ি-ভিটার ভরাট কাজ চলে। চন্দ্রঘোনা কদমতলী হিন্দুপাড়া গ্রাম, পারুয়া ডিসি সড়ক, দক্ষিণ রাজানগর, রাজানগর বগাবিল, ইসলামপুর, কালিন্দিরানী সড়কের বিভিন্ন স্থানে জমি ও পার দখল করে বড় বড় বালুর পাহাড় গড়ে তোলা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের বারবার অভিযানেও খাল ও নদীতে বালু উত্তোলন রোধ হচ্ছে না।
কৃষকরা জানান, সরকারদলীয় নেতাকর্মী পরিচয়ে প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের অবৈধ বালু ব্যবসায় আপত্তি করতে সাহস করে না কেউ। নির্বিচারে বালু উত্তোলনের কারণে নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। বেপরোয়া বালু ও মাটি উত্তোলনের উৎপাত চললেও কর্ণফুলী নদী নাব্যতা ও গতিপথ সুরক্ষায় নদীশাসন কার্যক্রম নেই। কর্ণফুলী নদীর তলদেশ এখন বালুর খনিতে পরিণত হয়েছে। পাহাড়ি ঢল ও বর্ষার পানি নেমে আসায় বালু প্রতি বছর কর্ণফুলী নদী তলদেশে জমা হয়। বালুদস্যুরা লুটেপুটে নিচ্ছে এ সম্পদ। সরকার বঞ্চিত হচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আয় থেকে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ