Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেল শীতলপাটি

| প্রকাশের সময় : ৭ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃৃতি সংস্থার ইউনেস্কো স্বীকৃতি পেল বাংলাদেশের শীতলপাটি। গতকাল বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ার জেজু দ্বীপে ইউনেস্কোর ইন্টারগভর্নমেন্টাল কমিটি ফর দ্য সেফগার্ডিং অব দ্য ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজের ১২তম অধিবেশনে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শীতলপাটিকে বিশ্বের নির্বস্তক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য (ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি) হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বুধবার ইনকিলাবকে এই তথ্য জানানো হয়।
গতবছর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় জাতীয় জাদুঘর সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শীতলপাটিকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য ইউনেস্কোর কাছে প্রস্তাব দেয়। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের জামদানি, বাউলগান, মঙ্গল শোভাযাত্রাও ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়েছে। বাংলাদেশের আবহমান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক অনন্য নিদর্শন শীতলপাটি। এই লোকশিল্পটি মুর্তা গাছের বেতী থেকে বিশেষ বুননকৌশলে শিল্পরূপ ধারণ করে।
সিলেট, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ল²ীপুর, ফেনী, বরিশাল, ঝালকাঠি, কুমিল্লা, ঢাকা, ফরিদপুর, কিশোরগঞ্জ, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, টাঙ্গাইল, নেত্রকোনায় এ গাছ প্রচুর পাওয়া গেলেও শীতলপাটির বুননশিল্পীদের বেশিরভাগই বৃহত্তর সিলেটের বালাগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ এবং সিলেট জেলার নিচু এলাকায় বসবাস করেন।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে আরও জানা গেছে, এখানকার বুননশিল্পীরা বংশ পরম্পরায় পাটি বুনন কৌশল আয়ত্ত করেছে, সিলেট অঞ্চলের পাটির ঐতিহ্য তাই বহু শত বছরের। প্রায় ১০০ গ্রামের চার হাজার পরিবার সরাসরি এই কারুশিল্পের সঙ্গে জড়িত, পাটির বুননশিল্পীরা পাটিয়াল বা পাটিকর নামে পরিচিত।
পাটি বুননের কাজ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে করেন, তবে নারী পাটি বুননশিল্পীদের ভূমিকা বেশি। পুরুষশিল্পী মুর্তা সংগ্রহের পর পরিবারের সকল সদস্য মিলে পাটি তৈরির প্রাথমিক কাজ হিসেবে মুর্তা থেকে পানি ঝরে ফেলেন। এরপর দক্ষ পাটি শিল্পীরা নখানি (নখ দিয়ে বেতী তোলা) করেন, দা দিয়ে সরু করে বেতী তোলেন, রং করার জন্য জ্বাল দেন, পানিতে ভেজানো, রোদে শুকানো ইত্যাদি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বুনন উপযোগী করে তোলেন।
ইউনেস্কোর স্বীকৃতিতে সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর আয়োজন করেছে শীতলপাটির বিশেষ প্রদর্শনীর। মঙ্গলবার জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী গ্যালারিতে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন সাংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
এই প্রদর্শনীতে দৈনন্দিন ব্যবহারের উপযোগী নানা ধরনের শীতলপাটি উপস্থাপন করা হয়েছে। বুননের মাধ্যমে পাখি, ফুল-লতা-পাতা, জ্যামিতিক নকশা, মসজিদ, চাঁদ, তারা, পৌরাণিক কাহিনী, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, শহীদ মিনার, শাপলা, পদ্ম ও কখনো প্রিয়জনের নাম, কবিতা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পাটিতে। দর্শকদের সরাসরি পাটি বুননকৌশল দেখানোর জন্য সিলেট থেকে চারজন সুদক্ষ পাটিশিল্পীকে প্রদর্শনীতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ###



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ