রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
পীরগঞ্জ (রংপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : আজ ৬ ডিসেম্বর, পীরগঞ্জ মুক্ত দিবস। পীরগঞ্জ উপজেলার ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে আছে এই দিনটি। মূলতঃ পীরগঞ্জ থানা শত্রু মুক্ত হয় ৫ ডিসেম্বর গভীর রাতে। শুক্ল পক্ষের অন্ধকার যবনিকা কেটে গিয়ে সূর্যোদয়ের পরপরই বহুল প্রতিক্ষিত এই সংবাদ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। পরদিন ৬ ডিসেম্বর হাজার হাজার স্বাধীনতাকামী নারী-পুরুষ দীর্ঘদিনের কষ্ট-ক্লেদ ভুলে গিয়ে বিজয় মিছিলে অংশ নেয়। তাই ৬ ডিসেম্বর পীরগঞ্জ থানা শত্রু মুক্ত হিসেবে পরিগনিত হয় প্রত্যক্ষদর্শী প্রবীণদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী পূর্ব হতে রাজাকার ও পাক সেনাদের আস্তানা ছিল পীরগঞ্জ থানা সদরে। পাকসেনাদের মেজর সিদ্দিক সালিক এর লেখা পাকিস্তানের স্মৃতি গ্রন্থ প্রথম প্রকাশিত হয় অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে ১৯৭৭ সালে। এতে তিনি লিখেছেন-‘৪ ডিসেম্বর বিকেলে মেজর আকরামের বাহিনী একজন মেজর জেনারেল ও একজন ব্রিগেডিয়ারের নেতৃত্বে কিনাই সীমান্তের ১১ কিমি উত্তর দিয়ে মিত্র বাহিনীর জলপাই রংএর ট্যাং বহরসহ ছুটে আসেন দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত পেরিয়ে। দূরবীনে দেখা এ দৃশ্যের সংবাদ ঢাকাকে অবগত করা হলে রাজধানী পাক নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র থেকে বলা হয়- তুমি সম্ভবত মহিশ দেখেছ। প্রত্যুত্তরে মেজর সিদ্দিক সম্মান দিয়েই বলেছিলেন-‘ইউ মে বি রাইট স্যার। কিন্তু প্রতিটি মহিশের মাথায় একটি করে ৫০ এমএম বার এর দীর্ঘ নল রয়েছে”। সে দিন সকাল থেকেই হিলি সীমান্ত পেরিয়ে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর হয়ে খরস্রোতা করতোয়া নদী দিয়ে মিত্র বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধারা পড়ন্ত বিকেলে পীরগঞ্জ থানার পশ্চিমাঞ্চলের খালাশপীর, কাদিরাবাদ ও ত্রি-মহোনী ব্রীজের আশপাশে অবস্থান নেয়। সূর্যাস্তের পূর্বেই এলোপাথাড়ী গোলা বর্ষণ শুরু হয় পীরগঞ্জ থানা সদরে অবস্থানরত পাক সেনাদের আস্থানার উপর। মিত্র বাহিনীর উপর্যুপরি আক্রমণের এক পর্যায়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে পাক সেনারা পিছু হটতে শুরু করে। দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পাক সেনাদের একটি অংশ রংপুর-ঢাকা মহা সড়কের বড়দগাহ নামক স্থানে মিত্র বাহিনীর কাছে বাধাপ্রাপ্ত হয়। অপর অংশটি গাড়ি বহর নিয়ে মহাসড়ক ধরে বগুড়া সেনানিবাসের উদ্দেশ্য পালিয়ে যায়। বিচ্ছিন্ন একটি অংশ অস্ত্র ও পোষাক খুলে পায়ে হেঁটে মিঠিপুর ইউনিয়নের গ্রামীন পথ ধরে পালিয়ে যায় পূর্বাঞ্চলে। মাদারগঞ্জের কাছাকাছি গিয়ে এঁরা জনগনের হাতে ধরা পড়ে নাজেহাল হয়। এদিকে গর্বভরে বীর বীক্রমে ধীর গতিতে এগিয়ে আসে মিত্র বাহিনীর সাঁজোয়া বাহিনী। এক পর্যায়ে গোলার আওয়াজ থেমে যায়। গভীর রাতেই জলপাই রং এর ট্যাংক বহর নিয়ে মিত্র বাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর সার্থক জোয়ানরা পীরগঞ্জ থানা সদরে প্রবেশ করে বিজয়ের বেশে। এ জন্য ৬ ডিসেম্বর মুক্ত দিবস হিসেবে পরিগণিত হয়। পীরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সংগঠন এই দিনটি প্রতি বছরই মর্যাদার সাথে পালন করে আসছে। এবারো বেশ কয়েকটি সংগঠন দিবসটি পালনে বর্ণাঢ্য শোভযাত্রাসহ নানামুখী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বলে জানা গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।