Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সঙ্কটে-সমস্যায় ব্যাহত চিকিৎসাসেবা

২৫০ শয্যার চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল

| প্রকাশের সময় : ৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চাঁদপুর থেকে বি এম হান্নান : চিকিৎসক ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিসহ নানা সংকটে ব্যাহত হচ্ছে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম। কাক্সিক্ষত সেবা না পাওয়ার পাশাপাশি নানা হয়রানির অভিযোগ রোগীদের। অপর্যাপ্ত চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসা সরঞ্জাম, অবকাঠামো সঙ্কটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতাল। রোগীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়লেও চিকিৎসক সঙ্কট মোকাবেলা করা যায়নি। রোগীর বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে দুর্ভোগও।
জেলার সিকি কোটি মানুষের ভরসাস্থল সরকারি হাসপাতাল ২৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও চিকিৎসাসেবার তেমন উন্নতি হয়নি। নানা প্রতিক‚লতার মধ্য দিয়ে হাসপাতালের বারান্দায়, ওয়ার্ডের ভেতরে গাদাগাদি করে রোগীদের থাকতে হয়। হাসপাতালের নির্ধারিত ২৫০ শয্যার প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার বাস্তবায়ন হয়নি আজো। দীর্ঘদিন ধরে সিনিয়র কনসালটেন্ট চক্ষু, ডেন্টাল, অ্যানেসথেশিয়া, জুনিয়র কনসালটেন্ট প্যাথলজি, আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার, ইউনানি মেডিক্যাল অফিসার, জুনিয়র কনসালটেন্ট, রেডিওলজিস্ট, ডেন্টাল সার্জন, ইমারজেন্সি মেডিক্যাল অফিসার, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, উপসেবা তত্ত¡াবধায়কের অনুমোদিত পদ শূন্য রয়েছে। প্রয়োজনীয় নার্স, টেকনিশিয়ান, ওয়ার্ড বয়, আয়াসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদও শূন্য রয়েছে। হাতেগোনা কয়েকজন চিকিৎসক বাদে অধিকাংশের বিরুদ্ধে রয়েছে দায়িত্ব পালনে উদাসীনতাসহ বিভিন্ন অভিযোগ। নানা প্রভাব খাটিয়ে অনেক চিকিৎসকই এখানে আছেন দীর্ঘদিন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ভালো চিকিৎসা পেতে ক্লিনিকে যাওয়ার উপদেশ দিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
হাসপাতালে নিয়মিত ঘোরাফেরা করে বিভিন্ন ক্লিনিকের দালাল চক্র। এরা হাসপাতালে আসা রোগীদের বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তির জন্য মোটা অঙ্কের কমিশন পান। অভিযোগ রয়েছে, ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর যোগসাজশে হাসপাতালের এক্স-রে মেশিন, আলট্রাসনোগ্রাম, কম্পিউটার মাঝেমধ্যে অকার্যকর করে রাখা হয়। চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ৩১টি বিভাগে ৪৭ জন চিকিৎসক কর্মরত। এরমধ্যে জরুরি বিভাগে তিনটি শিপটে পাঁচজন মেডিক্যাল অফিসার দায়িত্ব পালন করছেন। বাকিরা হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে দায়িত্ব পালন করছেন। হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নির্ধারিত হলেও এখানে বিভিন্ন বিভাগে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৬০০ রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে। আর এসব রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়ার জন্য ৬০ থেকে ৭০ জন চিকিৎসক প্রয়োজন, সেখানে রয়েছে মাত্র ৪৭ জন। ২৫০ শয্যার অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী থাকার কথা ৬২ জন। এ ছাড়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারীসহ ৩১৩টি পদের বিপরীতে রয়েছেন ২৫২ জন। ৬১টি পদ শূন্য রয়েছে।
এ কারণে প্রতিদিন চিকিৎসাসেবায় বেঘাত ঘটে ডাক্তার এবং রোগীদের। বিশেষ করে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চরম চিকিৎসক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। প্রায় দেড় দুই মাস ধরে চলছে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে অনিয়মিত চিকিৎসাসেবা।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যঅল অফিসার (আরএমও) ডা. আসিবুল আহসান চৌধুরী জানান, সরকারি এ হাসপাতালটিতে ২৫০ শয্যা নামকরণ করা হলেও এখানে গড়ে প্রতিদিন অন্তত পাঁচ-ছয়শ’ রোগীকে চিকিৎসাসেবা দিতে হয়। এ ছাড়া হাসপাতালের অন্তঃবিভাগ ও বহির্বিভাগেও প্রতিদিন অনেক রোগীকে চিকিৎসাসেবা দিতে হয়। সবকিছু মিলিয়ে যে পরিমাণ রোগী হাসপাতালে আসে সে হিসেবে ডাক্তারের পদায়ন নেই। চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত¡াবধায় ডা. সালেহ আহমেদ জানান, ‘প্রয়োজনীয় চিকিৎসক সঙ্কট রয়েছে তারপও রোগীরা উন্নত সেবা নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। চাঁদপুর সদর হাসপতালে শহরের বাইরে থেকে শরিয়তপুর. মাদারীপুরসহ বিভিন্ন জেলার রোগীরা এসে ভিড় জামায়। এতে রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ