পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হককে দাফন করতে না করতেই তার শূন্যস্থান পূরণে নির্বাচনের ভাবনাকে ‘অশোভন’ বলে মনে করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, উনাকে কেবল সমাহিত করা হয়েছে। এটা আমি মনে করি যে, এই মুহূর্তে তার লাশ দাফনের সাথে সাথে নির্বাচন, কে কি করবেন- এটা আমি খুব একটা শোভন মনে করছি না। আমরা দেখেছি যে, তার লাশ দাফনের সাথে সাথে অনেকে নির্বাচন নিয়ে কথা বলছেন। আমাদের সমাজ এ বিষয়গুলোকে ভালো ভাবে নেয় না। গতকাল (সোমবার) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কম্বোডিয়া সফরে গিয়ে বলেছেন-নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর উদ্যোগ নেয়ায় সবাই সমীহ করে। পদ্মা সেতুকে নিয়ে দুর্নীতির মাল্টিডাইমেনশন এর কথা নিশ্চয়ই মানুষ ভুলে যায়নি-যা দেশের মানুষকে লজ্জিত ও হতবাক করে দিয়েছিল। পাশাপাশি সেকথাও কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর বলা উচিৎ ছিল। পদ্মা সেতু শব্দটি উচ্চারিত হওয়ার সাথে সাথেই আওয়ামী সরকারের ভয়াবহ দুর্নীতির চিত্র জনমানষে ভেসে ওঠে। পদ্মা সেতুকে নিয়ে দুর্নীতির আন্তর্জাতিক অভিযোগগুলো কথার ফুলঝুরি দিয়ে ঢাকা যাবে না। ভুল নীতির কারণে আওয়ামী সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে নিতে পারছে না। বিদেশী অনুদান প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন তছনছ হয়ে গেছে। সরাদেশের সড়ক-মহাসড়কগুলোর বেহাল দশায় সড়কে মৃত্যুর মিছিল থামছেই না। লন্ডভন্ড সড়কে মানুষের জীবনযাত্রা প্রায় থমকে গেছে। ব্যাংকগুলোর মূলধন খেয়ে ফেলা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, সরকারি ও বেসরকারি সাত ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি সতেরো হাজার কোটি টাকা। ক্ষমতাসীনদের লুটপাট-দুর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারিতায় বাংলাদেশে এখন সর্বকালের সর্বোচ্চ বিষাদ ঘনঘোর নৈরাজ্য বিরাজ করছে। এর ভুক্তভোগী হচ্ছে সাধারণ জনগণ। বাংলাদেশে যেন হবুচন্দ্র রাজার উদ্ভট রাজত্ব চলছে। রাজকোষ শুন্য করে শুধু পরিবারের নামকে প্রতিষ্ঠিত করতে মরিয়া প্রতিযোগিতায় নেমেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ শাসকদলের সবাই। অথচ বাংলাদেশে বর্তমানে এক ভয়াবহ সংকট রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি ঘর থেকে এক পা ফেললেন না। এই সংকট সমাধানে বিএনপিসহ দেশের বিশিষ্টজন এবং বুদ্ধিজীবীরা চীন-ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলোকে বাংলাদেশের পক্ষে রাজী করতে উদ্যোগী হওয়ার আহবান জানানো হলেও রহস্যজনক কারণে তিনি উদোগী হলেন না। পিঁয়াজের কেজি বিশ টাকা থেকে এখন একশো বিশ টাকা, দশ টাকার চাল এখন সত্তর টাকা, বিদ্যুতের দাম বর্তমান সরকারের আমলে আট বার বাড়ানো হয়েছে, নানা ট্যাক্সের চাপে মানুষের জীবন বিপন্ন, অশান্তির আগুণে ভিতরে ভিতরে মানুষ ˜গ্ধ হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যদি দেশের মানুষের ভোটে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হতেন তাহলে দেশের স্বার্থ বাদ দিয়ে নামকরণে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন না।
নির্বাচন কমিশনকে আওয়ামী লীগের কৃপাধন্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন-প্রধানমন্ত্রী চাইলে আগাম নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আওয়ামী লীগ। সিইসি সমস্বরে বলেছেন-সরকার চাইলে আগাম নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত ইসি। আমরা বারবার বলেছি-বর্তমান সিইসি আওয়ামী সরকারের কৃপাধন্য। ওবায়দুল কাদের সাহেবের বক্তব্যের সাথে সাথে সিইসি’র একই সুর প্রমান করে-সিইসি সরকারের নির্মিত সেই পুরনো পথেই হাঁটবেন। একটি স্বাধীন সার্বভৌম নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব দেশে অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে চাকরি রক্ষার্থে বর্তমান সিইসি অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়টি আমলে নিবেন না। প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে উদ্দেশ্য করে রিজভী বলেন, আওয়ামী সরকারের অশুভ ইচ্ছা পূরণের ‘খাঁচায় বন্দী তোতা পাখী হবেন না’। কেননা ষড়যন্ত্র চক্রান্ত আর বড় বড় বুলির মায়াজাল সৃষ্টি করে গণতন্ত্রের ঘাতক প্রতিহিংসাপরায়ণ শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন এদেশের জনগণ মেনে নেবে না। সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই নির্বাচন দিতে হবে। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ফের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার প্রতিবাদে রোববার সারা দেশে দলের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশি বাধা ও নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার এবং চট্টগ্রাম সদরঘাট থানা যুবদলের যুগ্ম আহŸায়ক হারুন চৌধুরী হত্যাকাÐের নিন্দা জানান রিজভী। একইসঙ্গে গত ১ ডিসেম্বর দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল মান্নানের ধানমন্ডির বাসভবনে প্রয়াত স্ত্রী নিলুফার মান্নানের কুলখানির অনুষ্ঠানে হামলা ও ভাংচুর এবং রোববার দলের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদারের নাটোরের বাসায় ‘আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের’ হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদও জানান সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। অবিলম্বে এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব এবং মীর সরফত আলী সপু উপস্থিত ছিলেন।####
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।