Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জনবল সঙ্কটে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত

বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

| প্রকাশের সময় : ৫ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ফরিদপুর থেকে নাজিম বকাউল : ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার হতদরিদ্র মানুষের চিকিৎসাসেবার একমাত্র নির্ভরস্থল বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসক ও স্টাফদের। ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এই সরকারি বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১১৮টি পদের মধ্যে নির্ধারিত ৫৫ পদেই লোকবল নেই। দীর্ঘদিন ধরে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও জনবল সঙ্কটে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত অসহায় দুস্থ রোগীরা। তা ছাড়া শীতের শুরুতে ডায়রিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ দেখা দেয়ায় হাসপাতালে রোগীর চাপ মাত্রাতিরিক্ত। তবুও জীবন বাঁচানোর তাগিদে বাধ্য হয়ে হাসপাতালে সেবা নিতে হয় তাদের। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট বোয়ালমারী হাসপাতালে ১১৮টি পদের মধ্যে মাত্র ৬৩টি পদে লোকবল নিয়োজিত রয়েছে। বাকি ৫৫ পদ এখনো শূন্য। শূন্য পদগুলো হলো কনসালটেন্ট সাতটি, মেডিক্যাল অফিসার দুটি, আইএমও একটি, ইমারজেন্সি একটি, অ্যানেসথেসিস্ট একটি, ডেন্টাল সার্জন একটি ও সহকারী সার্জন। প্রধান সহকারী একটি, প্রধান সহকারী অ্যাকাউনটেন্ট একটি, ক্যাশিয়ার একটি, পরিসংখ্যান একটি, স্টোর কিপার একটি, অফিস সহকারী দুটি, মেডিক্যাল টেকনোলোজি (ক্যাব) দুটি, ফার্মাসিস্ট দুটি, মেডিক্যাল টেকনোলজি ইপিআই একটি, স্যাকমো একটি, অ্যাকাউটেন্ট নার্স একটি, জুনিয়ার মেকানিক একটি, স্বাস্থ্য পরিদর্শক দুটি, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক তিনটি, স্বাস্থ্য সহকারী ১৪টি, অ্যাকাউনটেন্ট একটি, এমএলএসএস দুটি, ওয়ার্ড বয় দুটি, আয়া দুটি, সিকিউটি গার্ড একটি, বাবুর্চি তিনটি, ইমারজেন্সি অ্যাটেনডেন্ট একটি, সুইপার তিনটি।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, একটু জটিল সমস্যা হলে হাসপাতালে আনলে তাৎক্ষণিক ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। যা গ্রামাঞ্চলের একজন অসহায় মানুষের পক্ষে যাওয়া সম্ভব হয়ে উঠে না। জীবন বাঁচানোর জন্যই মানুষের কাছে ধার দেনা করে সুস্থ হওয়ার জন্য বাধ্য হয়ে যেতে হচ্ছে। তাই বোয়ালমারী হাসপাতালে সব চিকিৎসা পাওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছে অসহায় রোগী ও স্বজনরা। হাসপাতালে ভর্তি বহির্বিভাগের লিয়াকত শেখের ছেলে কালাম শেখ বলেন, আমি পেটে ব্যথা নিয়ে আজ দুই দিন ভর্তি হয়েছি। কিছু ওষুধ হাসপাতাল থেকে দেয়, বেশির ভাগ ওষুধ বাহির থেকে কিনে আনা লাগে। ডাক্তারা দিনের ভেতর দুই একবার আসেন। গোয়াইলবাড়ি গ্রামের বজলুর রহমানের স্ত্রী সালেহা বেগম জানান, আমি দুই দিন ধরে জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। ডাক্তাররা দিনের মধ্যে একবার এসে দেখেন যান। আর আসেন না। তবে নার্সরা আসেন সবসময়।
স্টাফ নার্স অঞ্জু সিকদার বলেন, হাসপাতালে স্টাফদের সঙ্কটের কারণে আমাদের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। যেমনÑ রোগিরা ভর্তি হলে আমরা তাদের বেডগুলো ঠিক করে দিতে পারি না। আমাদের রোগীদের দেখবাল করতে হয়। বেশির ভাগ সময় রোগীদের স্বজনরা নিজেরা বেডগুলো ঠিক করে নেয়। তা ছাড়া ৫০ শয্যা হাসপাতাল হলেও রোগী ভর্তি হয় প্রতিদিন ৮০ থেকে ৮৫ জন। আরএমও ডা: মোরসেদ আলম জানান, বিভিন্ন পদে লোকবল শূন্য থাকায় মাত্রাতিরিক্ত চাপে থাকতে হয় কর্মরত চিকিৎসকসহ অন্যান্য স্টাফদের। এ ছাড়া ৫০ শয্যা হাসপাতাল হলেও প্রতিদিন রোগী ভর্তি হয় ৮০ থেকে ৮৫ জন।
বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: তাপস বিশ্বাস জানান, লোকবল সঙ্কটে মাত্রাতিরিক্ত চাপে রয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবুও সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকসহ অন্যান্যরা। এদিকে ২৪ ঘণ্টা ইমারজেন্সি বিভাগে একজন মালী, একজন এমএলএসএস ও একজন হারবাল অ্যাসিস্টেন্ট দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ